• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

পাহাড়ে ঝুঁকি নিয়ে লক্ষাধিক মানুষের বাস, মৃ'ত্যুর ঝুঁকি 

মো:শাফায়েত হোসেন, আরটিভি নিউজ

  ০৭ জুন ২০২১, ২৩:৪৮
পাহাড়ের পাদদেশে বান্দরবানে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ, মৃত্যুর ঝুঁকি
পাহাড়ের পাদদেশে বান্দরবানে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ, মৃত্যুর ঝুঁকি

বান্দরবানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করছেন প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। জেলার সাতটি উপজেলা ও ২টি পৌরসভা এবং ৩৩টি ইউনিয়নে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা তোয়াক্কা না করেই পাহাড় কেটে ঘরবাড়ি নির্মাণ করে ঝুঁকিতে বাস করে এসব মানুষ। অপরিকল্পিতভাবে পাহাড় কাটা এবং বৃক্ষনিধনের কারণে পাহাড় ধসে ঘটছে মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা। এসবের পরও বন্ধ হচ্ছে না বান্দরবানে পাহাড় কাটাসহ অবৈধ বসতি স্থাপন।

গেলো ১০ বছরে বান্দরবান জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রবল বর্ষণ ও ভূমিধ্বসে বিভিন্ন বয়সী নারী-শিশুসহ প্রায় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন সংস্থার তথ্যমতে, বান্দরবানের সাতটি উপজেলায় এবং দুইটি পৌর এলাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ের ঢালুতে বসবাস করছেন প্রায় লক্ষাধিক পরিবার। যার মধ্যে প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজারেরও বেশি পরিবার অতিঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মতে, বর্ষার শুরুতেই প্রতিদিনই মাইকিং করা হচ্ছে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে। বান্দরবানের বেশিরভাগ এলাকা পাহাড়ে ঘেরা। আর তাই পাহাড় কেটে অথবা পাহাড়ের আশেপাশেই প্রতিদিনই তৈরি হচ্ছে অসংখ্য নতুন নতুন স্থাপনা, তবে পাহাড় কাটা আর ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসত রোধে প্রশাসনের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

গত কয়েকদিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হওয়ায় পাহাড় ধসের আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।আর পাহাড় ধসে হতাহতের দুর্ঘটনা এড়াতে এবং পাহাড়ের ঝুঁকিতে মানুষ নিরাপদে সরিয়ে নিতে প্রশাসন নিয়েছে নানা উদ্যোগ। এসব মানুষের প্রাণহানি ও বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার পরেও বান্দরবানে বন্ধ হচ্ছে না পাহাড় কাটাসহ অবৈধ বসতি স্থাপন।

ঝুঁকিতে বসবাসকারীদের মতে, পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীরা প্রায় শ্রমিক শ্রেণির মানুষ এবং যারা ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে তাদের মধ্যে হতদরিদ্র পরিবারের সংখ্যাই বেশি। জীবিকার তাগিদে পাহাড়ের ঢালুতে পাহাড় কেটে তৈরি করা আবাসস্থলগুলোতে কম ভাড়ায় বসবাস করা যায়। কিন্তু বৃষ্টি শুরু হলেই মাইকিং করে লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়। তবে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের জন্য অন্যত্র আবাসনের ব্যবস্থা করে না দেয়ায় নিজেদের ভিটেমাটি ছেড়ে যেতে চান না তারা। সরকারিভাবে স্থায়ী পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয়ার প্রয়োজন মনে করে ঝুঁকিতে থাকা বসবাসকারীরা।

বান্দরবান মৃত্তিকা গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম বলেন, পাহাড় ধস তাৎক্ষনিক ঘটনা মনে হলেও এটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়ার ফসল। ভূমিক্ষয়ের মাধ্যমে পাহাড়ে ফাটল তৈরি হয় এবং ধস নামে। পাহাড় ধসের অন্যতম কারণ হচ্ছে-নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন, অপরিকল্পিতভাবে পাহাড় কাটা এবং উপযুক্ত পদ্ধতি অবলম্বন না করে পাহাড়ে চাষাবাদ করা। তবে পাহাড় ধস বন্ধে বৃক্ষ নিধন এবং পাহাড় কাটা বন্ধ করতে হবে। তা না হলে প্রতিনিয়ত

প্রাণহানির ঘটনা আরও বাড়বে।

বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরিজী পাহাড় ধসের বিষয়টি মাথায় রেখে বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে মিটিং হয় এবং পাহাড়ের ঝুঁকিতে বসবাসকারীদের সরিয়ে যেতে মাইকিং করা হয়েছে। এছাড়া উপজেলা পর্যায়ে যেই কমিটি রয়েছে কমিটির লোকজন পাহাড়ের পাদদেশ থেকে মানুষকে সরিয়ে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন স্কুল কলেজকে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও জেলা সদরে একটি সাইক্লোন সেন্টার রয়েছে সেটাকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে মানুষ যেন নিরাপদে থাকতে পারে।

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, বান্দরবানের সাত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে এবং যেকোনো ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় আশ্রয়কেন্দ্রগুলো দ্রুত পরিষ্কার ও প্রস্তুত রাখা, শুকনা খাবার মজুদ করা ও দুর্যোগ মোকাবিলায় সহায়তাকারীদের প্রস্তুত রাখার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

এমআই/এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
রুমা ও বিলাইছড়ি সীমান্তে তুমুল গোলাগুলি, আতঙ্কে এলাকাবাসী
সেতু ভেঙে ভোগান্তি, ঝুঁকি নিয়ে চলাচল  
কুকি-চিনের হাতে অপহৃত সেই ব্যাংক ম্যানেজারকে বদলি
বান্দরবানে ব্যাংক ডাকাতি, ৫২ জন দুদিনের রিমান্ডে
X
Fresh