পরকীয়ায় বাধা দেয়ায় বউকে মেরে রাস্তায় ফেলে দিলো স্বামী
বরগুনার আমতলী উপজেলার চাওড়া চন্দ্রা গ্রামে পরকীয়ায় বাধা দেয়ায় ২ সন্তানের জননী শিল্পী বেগম (৩৫) নামে এক গৃহবধূকে নির্যাতনের পর তার স্বামীর বিরুদ্ধে মুখে বিষ ঢেলে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শুক্রবার (৪ জুন) সকালে স্বামীকে পরকীয়ায় বাধা দিলে শিল্পীর ওপর নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে তাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অভিযুক্ত স্বামী চাওড়া ইউনিয়নের চন্দ্রা গ্রামের আব্দুর রহিম হাওলাদারের ছেলে মিজানুর রহমান।
জানা গেছে, আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের হলদিয়া গ্রামের মন্নান মোল্লার মেয়ে শিল্পী বেগমের সাথে ২০০৯ সালে চাওড়া ইউনিয়নের চন্দ্রা গ্রামের আব্দুর রহিম হাওলাদারের ছেলে মিজানুর রহমানের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় শিল্পীর বাবা মন্নান মোল্লা মিজানুরকে ২টি গরু, ১ ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন, মেয়ের কানের দুল, নগদ ২০ হাজার টাকা ও সংসারের যাবতীয় মালামাল দিয়ে দেন।
বিয়ের পর শিল্পীর কোলজুড়ে আসে ২টি সন্তান। এর পর থেকেই মিজানুর বিভিন্ন মেয়েদের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পরে। শিল্পী মিজানুরকে পরকীয়ায় বাধা দিলে তখন তার বাবার নিকট থেকে যৌতুক এনে দেয়ার জন্য চাপ দিত। টাকা এনে দিলে কিছুদিন শান্ত থাকত সে। পরবর্তীতে পরকীয়ায় বাধা এবং মিজানুরের চাহিদা মত টাকা না এনে দিলেই আবার শিল্পীর ওপর চলতো নির্যাতন। এভাবে শিল্পী তার বাবার কাছ থেকে অনেক বার স্বামীর মন রক্ষার জন্য টাকা এনে দিয়েছে। নির্যাতনের এ বিষয় নিয়ে গ্রামে একাধিক বার সালিস বৈঠকও হয়েছে।
এদিকে ঘটনার দিন শুক্রবার (৪ জুন) সকালে স্বামী মিজানুরকে পরকীয়ায় বাধা দিলে শিল্পীর ওপর নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন। তাকে কিল ঘুষি মেরে মাটিতে ফেলে বেধড়ক মারধর করে। এ সময় তার মারধরে অজ্ঞান হয়ে যান শিল্পী।
এক পর্যায়ে মিজানুর তার পথের কাটা সরিয়ে দেয়ার জন্য শিল্পীকে হত্যার জন্য তার মুখে বিষ ঢেলে দেয়। এ অবস্থায় শিল্পীকে মৃত ভেবে বাড়ির পাশে সড়কে ফেলে রাখে।
এ সময় ছেলেকে সহযোগিতা করে মিজানুরের মা রিজিয়া বেগম। প্রতিবেশীদের মাধ্যমে খবর পেয়ে শিল্পীর ভাই আলামিন ছুটে এসে তার বোনকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে দ্রুত আমতলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে শিল্পীর অবস্থা মুমূর্ষু হওয়ায় শুক্রবার (৪ জুন) রাতে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
আমতলী হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা. হিমাদ্রী রায় জানান, শিল্পীর শরীরে মারধরের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বিষের প্রভাবে তার অবস্থা খুব খারাপ ছিল।
আমতলী থানার এনআই মো. সোহেল জানান, অভিযুক্ত মিজানুরকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহ আলম হাওলাদার জানান, এ ঘটনা জানার পর পুলিশ পাঠিয়েছি। মামলা হলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জিএম
মন্তব্য করুন