• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

বাড়ির আঙিনায় হরিণ

রাজবাড়ী প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ১৬ মে ২০২১, ১১:৫০
বাড়ির আঙ্গিনায় হরিণ
বাড়ির আঙ্গিনায় হরিণ

এখন আর হরিণ শিকার করতে সুন্দরবন যেতে হবে না। রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া সড়কের মোহনপুরে রিয়াজ মামুদের খামারে এলেই হবে। মোহনপুর গ্রামের রিয়াজ ২ বছরে দুটি হরিণ থেকে এখন ৬টি হরিণের খামারের মালিক হয়েছেন। রিয়াজের ছাত্রাবস্থায় হরিণ পালনের শখ ছিল। তার সেই শখ নিজ বাড়ির আঙিনায় ২ হরিণ পালনের মাধ্যমে এখন ৬ লাখ টাকা মূল্যের ৬টি হরিণের মালিক হয়েছেন।

রাজবাড়ীর কালুখালীর মোহনপুর গ্রামের জনাব আলী মন্ডলের ছেলে মোঃ রিয়াজ মাহমুদ (৩০)। ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ থেকে ইংরেজিতে মাস্টার্স শেষ করেন। কিন্তু জীবিকার তাগিদে বিশ্ব ব্যাংকের একটি প্রকল্পে চাকরি নেন তিনি। কিন্তু হরিণ পালনের ভূত তার মাথায় থাকায় তার ওই চাকরিতে মন বসেনি। তাই সে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ না হয়ে গেলে হরিণ পালনের প্রবল ইচ্ছা নিয়ে ফিরে আসেন বাড়ি। এ জন্য তিনি সুযোগও খুঁজতে থাকেন।

বন মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন নিয়ে ২০১৮ সালে শখের বশে দুটি হরিণ পালন শুরু করেন। সেই দুটি থেকে এখন মোট ৬টি হরিণ হয়েছে তার খামারে। নিজ বাড়ির আঙিনায় শখের বশে হরিণ পালন করে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছেন রাজবাড়ীর রিয়াজ মাহমুদ। চিড়িয়াখানা বা পার্কে হরিণের দেখা মিললেও বাড়ির আঙিনায় হরিণের পাল দেখা একটি অসাধ্য ব্যাপার। আর এই অসাধ্য সাধন করেছেন রিয়াজ মাহমুদ।

এখন তিনি স্বপ্ন দেখছেন ভবিষ্যতে এই খামারটি সম্প্রসারণ করে দুই শতাধিক হরিণ পালনের। কিন্তু আইনি জটিলতার কারণে সেটি সম্ভব হবে কিনা, তা নিয়ে অনিশ্চিত এই যুবক। আইনি জটিলতা থাকার কারণে তাকে এগোতে হচ্ছে ধীরগতিতে। তবে তিনি হাল ছাড়তে নারাজ।

তরুণ এই উদ্যোক্তা মোঃ রিয়াজ মাহমুদ বলেন, হরিণ এখন বিলুপ্তির পথে। এই প্রাণীকে টিকিয়ে রাখতে হলে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে সরকারকে। হরিণ একটি লাভজনক প্রাণী। এটিকে যদি বাণিজ্যিকভাবে পালনের জন্য সরকার আইনি প্রক্রিয়া সহজ করেন তাহলে এটি দেশের অর্থনৈতিক খাতে ভূমিকা রাখতে পারবে।

তিনি আরও বলেন, হরিণ যাতে সবাই পালন করতে পারে সে জন্য নীতিমালা শিথিলসহ ট্যাক্স কমানো ও লাইসেন্স গণহারে দেওয়া উচিত। হরিণের বিলুপ্তি ঠেকাতে গবাদি পশুর মতো হরিণের খামারের অনুমোদন দেওয়া উচিত। আমি নিজেই প্রতিদিন হরিণগুলোর খাবার দেয়াসহ সার্বিক যত্ন নিই।

বন্যপ্রাণী পালনের উদ্যোক্তা রিয়াজ বলেন, বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে ২০১৮ সালে দুটি হরিণ কিনেছি বরিশালের একটি খামার থেকে। সে দুটি হরিণ থেকে এখন আমার এখানে ছয়টি হরিণ হয়েছে। যার প্রতিটির সরকারি মূল্য ৭০ হাজার টাকা। ৪৪ শতাংশ জমির উপর এই খামারটি। এটিকে সম্প্রসারণ করে এক একর জমির উপর করার ইচ্ছা রয়েছে। সরকারি অনুমতি পেলে সেটি করার স্বপ্ন দেখছি। যেখানে দুই শতাধিক হরিণ পালন করা যাবে।

রিয়াজ বলেন, হরিণ যাতে সবাই পালন করতে পারে সে জন্য নীতিমালা শিথিলসহ ট্যাক্স কমানো ও লাইসেন্স দেয়া উচিত। হরিণের বিলুপ্তি ঠেকাতে গবাদিপশুর মতো হরিণের খামারের অনুমোদন দেওয়া উচিত।

মোহনপুর গ্রামের যুবলীগ নেতা জিয়া মোল্লা ও শাহাদত হোসেন বলেন, রিয়াজের হরিণ পালনে লাভের অংশ দেখে আমরাসহ এলাকার অনেক বেকার যুবকই এখন হরিণ পালন করে স্বাবলম্বী হতে চাইছেন। অনেকেই প্রতিদিন রিয়াজের খামারে এসে তার কাছে হরিণ পালনের পরামর্শ নিচ্ছেন। তবে সরকারি অনুমতি না মেলায় তাদের সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারছেন না।

কালুখালী উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডা. প্রদীপ কুমার সরকার বলেন, হরিণ যেহেতু একটি অর্থকারী প্রাণী সেহেতু বাণিজ্যিকভাবে হরিণের খামার তৈরি করা গেলে, দেশে অর্থনৈতিকখাতে নতুন মাত্রা যোগ হতে পারে। কালুখালীতে যে খামারটি রয়েছে সেটিতে আমরা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সব সময় সহযোগিতা করছি। এ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

রাজবাড়ী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ফজলুল হক বলেন, বাণিজ্যিকভাবে হরিণের খামার করলে দেশের অর্থনৈতিকখাতে নতুন মাত্রা যোগ হতে পারে। কালুখালীতে যে খামারটি রয়েছে সেটিতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে সব সময় সহযোগিতা করা হবে।

এমআই/পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
দৌলতদিয়া ঘাটে পন্টুন থেকে নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু
ঈদে দৌলতদিয়া-পটুরিয়া নৌরুটে চলবে ২০ লঞ্চ ও ১৫ ফেরি
দায়িত্বহীনতার কারণে ঈশ্বরদীতে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে : রেলমন্ত্রী
মালয়েশিয়ায় স্বাধীনতা দিবস পালন
X
Fresh