• ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ধর্ষণ মামলায় বদলি আসামি কারাগারে

ফেরদৌস জুয়েল, গাইবান্ধা

  ১৭ এপ্রিল ২০১৭, ১৫:২৬

একটি শিশু ধর্ষণ মামলায় মূল আসামি বদলে সাতদিন ধরে কারাভোগ করছেন বদলি আসামি ঢাকার রিকশাচালক মোজাফফর রহমান (৫০)।

ঘটনাটি ঘটেছে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের নলছিয়া গ্রামে। সেখানে একটি শিশু ধর্ষণ মামলার মূল আসামি নজরুল ইসলাম (৩৫)।

কিন্তু সাতদিন ধরে তার বদলে কারাভোগ করছেন পার্শ্ববর্তী গ্রামের মোজাফফর রহমান (৫০)।

আসামির পক্ষ মোজাফফরকে গেলো ১০ এপ্রিল নজরুল ইসলাম সাজিয়ে গাইবান্ধা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

জানা যায়, সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের নলছিয়া গ্রামের মোজাফফর দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় রিকশা চালায়। মোজাফফরের তিন ছেলে, স্ত্রী ও বৃদ্ধা মা আছে। বড়ছেলে সেলিম মিয়া এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। দ্বিতীয় ছেলে সৈকত আহম্মেদ নবম এবং ছোটছেলে শাহাদত প্রথম শ্রেণিতে পড়ে।

ছেলের এইচএসসি পরীক্ষার কারণে ১ এপ্রিল সাঘাটা উপজেলার গ্রামের বাড়িতে আসে। ১০ এপ্রিল নজরুল ইসলামের বড়ভাই মজনু মিয়া মোজাফফরকে জানায় তোর নামে মামলা আছে এ কথা বলে মোজাফফরকে গাইবান্ধা আদালতে আনা হয়।

মোজাফফরের পরিবারের অভিযোগ, তাকে আইনজীবী, মহুরি ও মজনু মিয়া শিখিয়ে দেন, মামলায় নজরুল ইসলাম লেখা আছে, পিতার নাম আছে মইচ উদ্দিন। তিনি যেনো আদালতে এ পরিচয় দেন। তোমার নাম নজরুল ইসলাম ও পিতার নাম মইচ উদ্দিন বলবে। পরে নজরুল ইসলামের পরিবর্তে মোজফফরকে আদালতের কাঠগড়ায় দাড় করিয়ে জামিনের আবেদন করে আসামী পক্ষ। আদালত আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

এ বিষয়ে গাইবান্ধা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) শফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি। তবে তিনি বলেন, এমনটা হয়ে থাকলে বাদীর মাধ্যমে মূল আসামি চিহ্নিত কার হবে। আসামি চিহ্নিত হলে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা হবে।

মোজাফফর রহমানের স্ত্রী সেলিনা বেগম বলেন, আমার স্বামী ঢাকায় রিকশা চালায়। বাড়িতে আসলে নজরুলের ভাই মজনু মিয়া ফুসলিয়ে তাকে আদালতে নিয়ে যায়। আমরা এর বিচার চাই।

জানা যায়, ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর দুপুরে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার নলছিয়া গ্রামের একটি আট বছরের শিশুকন্যাকে একই গ্রামের মৃত মইচ উদ্দিন শেখের ছেলে নজরুল ইসলাম (৩৫) ধর্ষণের চেষ্টা করে। এই ঘটনায় শিশুর মা ২০১৬ সালের ৩ জানুয়ারি সাঘাটা থানায় মামলা করতে যান। কিন্তু থানায় মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে শিশুটির মা বাদী হয়ে নজরুল ইসলামকে আসামি করে ৬ জানুয়ারি গাইবান্ধা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা করেন।

মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী আবু বকর সিদ্দিক জানান, গেলো বছর ৩ মার্চ বাদী ওই প্রতিবেদনের ওপর আদালতে নারাজির আবেদন করেন। পরে আদালত ঘটনাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। বিচারিক হাকিম সাক্ষী নিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়ে ২৯ মার্চ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর আদালত নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এরপর থেকে আসামি নজরুল ইসলাম পলাতক ছিলেন।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh