• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

গোপালগঞ্জে চাকরি পেলেন ৪৩ ভিক্ষুক

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ০১ মে ২০২১, ১৬:৫৮
গোপালগঞ্জে চাকরি পেলেন ৪৩ ভিক্ষুক
গোপালগঞ্জে ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে চাকরিতে যোগদান করা ৪৩ ভিক্ষুককে স্বাগত জানান জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় চাকরি পেলেন ৪৩ ভিক্ষুক। এই ৪৩ জন ভিক্ষুক উপজেলার কুশলা ইউনিয়নের চৌরখুলী গ্রামে নির্মিত প্যাকেজিং ফ্যাক্টরিতে কাজ করবেন।

আজ শনিবার জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই ৪৩ জন ভিক্ষুকের হাতে তাদের নিয়োগপত্র তুলে দেন। এর আগে তিনি ফিতা কেটে অবলম্বন নামে এ ফ্যাক্টরিটির উদ্বোধন করেন।

এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম মাহফুজুর রহমান, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ মহসীন উদ্দিন, পৌর মেয়র হাজী মোঃ কামাল হোসেন শেখ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ, কুশলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম বাদল, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার রাকিবুল হাসান শুভ, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শ্রীময়ী বাগচী উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, গত ডিসেম্বর মাস থেকে কোটালীপাড়া উপজেলার কুশলা ইউনিয়নের চৌরখুলী গ্রামে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ও সরকারি অর্থায়নে এ প্যাকেজিং ফ্যাক্টরির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। চলতি মাসের শুরুর দিকে এ ফ্যাক্টরির নির্মাণ কাজ শেষ হয়। এই ৪৩ জন ভিক্ষুক এখন থেকে এই ফ্যাক্টরিতে কাজ করবেন। ভিক্ষুকের হাত এখন থেকে হয়ে উঠবে কর্মজীবীর হাত। এটিই মনে করছেন এলাকাবাসী।

কুশলা ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম বাদল বলেন, কুশলা ইউনিয়নের চৌরখুলী গ্রামের ৪৩ নারী-পুরুষ দীর্ঘদিন ভিক্ষাবৃত্তির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে এ পেশা থেকে তাদের উত্তরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। কিন্তু কখনোই তাদেরকে এ পেশা থেকে নিবৃত্ত করা যায়নি। তাদের কর্মসংস্থানের জন্য সরকারি অর্থায়নে ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে চৌরখুলী গ্রামে এ প্যাকেজিং ফ্যাক্টরি নির্মাণ করা হয়। উপজেলা প্রশাসনের এ উদ্যোগকে এলাকাবাসী স্বাগত জানিয়েছে। এলাকার ভিক্ষুকরা এখন ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে দিয়ে এ প্যাকেজিং ফ্যাক্টরিতে চাকরি করবেন।

কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম মাহফুজুর রহমান বলেন, কোটালীপাড়ায় প্যাকেজিং ফ্যাক্টরিতে উৎপাদিত কাগজের প্যাকেটের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ কারণে সরকারি অর্থায়নে ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে এ ফ্যাক্টরির নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে যারা কাজ করবেন তাদেরকে আমরা প্রশিক্ষণ দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, এই ফ্যাক্টরিতে যে ৪৩ জন ভিক্ষুক কাজ করবেন তাদের প্রতিমাসে ৩ হাজার টাকা করে বেতন দেওয়া হবে। এছাড়াও এই ফ্যাক্টরিতে উৎপাদিত কাগজের তৈরী প্যাকেট বিক্রির লভ্যাংশের একটি অংশ তারা পাবেন। ভিক্ষুকদের পুনর্বাসনের এ উদ্যোগ সফল হলে পরিবর্তন হবে চৌরখুলীর, পরিবর্তন হবে কোটালীপাড়ার। এভাবে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পরিবর্তনের মধ্যে দিয়েই আমরা উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হবো। একদিনেই হয়তো এটা হবে না, তবে একদিন হবে নিঃসন্দেহে।

চৌরখুলী গ্রামের ভিক্ষুক সোনামতি বেগম, রেখা বেগম, ডালিম বেগম বলেন, আমরা আর ভিক্ষা করতে চাই না। আমরা কাজ করে খেতে চাই। ভিক্ষায় কোন সম্মান নেই। এতদিন কোন কাজ পাইনি। তাই ভিক্ষা করছি। এখন উপজেলা প্রশাসন ফ্যাক্টরি নির্মাণ করে আমাদের চাকরি দিয়েছে। আমরা এখন এখানে চাকরি করে সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে পারবো।

জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, ভিক্ষা নয়, কর্মময় হবে ৪৩ জন ভিক্ষুকের জীবন। এরা এখন কাজ করে সংসার চালাতে পারবে। এ ধরনের উদ্যোগ দেশকে সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাবে। আমাদের দেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত সমৃদ্ধ হবে। এ ক্ষুদ্র উদ্যোগটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করে দেশকে ভিক্ষুক মুক্ত করতে সহায়তা করবে বলে আমার বিশ্বাস।

পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
গোপালগঞ্জে দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ৪০
গোপালগঞ্জে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় আ.লীগ নেতা নিহত
গোপালগঞ্জে বাস-মাইক্রোবাস সংঘর্ষ, নিহত ৫
সংগীতশিল্পী খালিদের মরদেহ গোপালগঞ্জে, দুপুরে জানাজা
X
Fresh