• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

দলবদ্ধ ধর্ষণে নিহত তরুণীর ৫ মাস পর মিলল পরিচয়

লালমনিরহাট প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ২৭ এপ্রিল ২০২১, ১১:৫৬
Gang-rape from Mymensingh to Rangpur, 5 months after the identity of the young woman killed
ময়মনসিংহ থেকে রংপুরে নিয়ে গণধর্ষণ, ৫ মাস পর মিলল নিহত তরুণীর পরিচয়

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় মহাসড়কের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা সেই তরুণীর মরদেহের ৫ মাস পর পরিচয় মিলেছে। প্রেম ঘটিত কারণে পূর্ব পরিকল্পনায় ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলা থেকে সুকৌশলে ওই তরুণীকে ডেকে এনে ধর্ষণের পর নির্মমভাবে খুন করা হয় বলে তথ্য পেয়েছে পুলিশ।

সোমবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় লালমনিরহাটের বি- সার্কেলের এএসপি তাপস সরকার পাটগ্রাম থানায় সাংবাদিকদের এসব ঘটনার বর্ণনা দেন। খুনের মোটিভসহ পুরো কাহিনী উদ্ধার এবং ৫ মাস পর ধর্ষক ট্রাকচালক ও তার ভাতিজাকে গ্রেপ্তার কথাও জানান তিনি।

নিহত হামিদা আক্তার (২৪) ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার ভরডোবা গ্রামের রফিকুল ইসলামের মেয়ে।

গ্রেপ্তারকৃত ট্রাকচালক মো. জিরাব আলী (২৮) শেরপুর সদর উপজেলার ভাতশালা গ্রামের ০৪ নং ওয়ার্ডের কুবেদ আলীর ছেলে। আর ভাতিজা শাহিনুর ইসলাম শাহিন (১৫) ওই ওয়ার্ডের জিলামুদ্দিন ছেলে। গ্রেপ্তারের পর জিরাব আলীকে লালমনিরহাট জেলহাজতে এবং ভাতিজা শাহিনুর ইসলাম শাহিনকে যশোর শিশু শোধনাগারে পাঠানো হয়েছে। হত্যার কাজে ব্যবহারকৃত ট্রাকটিও জব্দ করে ত্রিশাল থেকে লালমনিরহাটে আনার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

জানা গেছে, ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার ট্রাকচালক মো. জিরাব আলীর (২৮) প্রেমে পড়েন একই এলাকার এক তরুণী। নিজ এলাকায় নিহত তরুণীর নাম হামিদা আক্তার ও কোথাও সুরমা আবার কোথাও নন্দিনী নামে পরিচিত ছিলেন তিনি। আগের দুই স্ত্রী ও একাধিক সন্তান থাকায় জিরাব আলী হামিদাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান।

নিহত তরুণীর বিয়ের চাপ সামলাতে না পেরে প্রেমিকা হামিদাকে অন্য কোথাও নিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন জিরাব আলী। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত বছর ১ ডিসেম্বর ত্রিশাল থেকে রংপুরে আসতে বলা হয় ওই তরুণীকে। ট্রাকচালক ও তার ভাতিজা আগের দিন আসেন রংপুরে। তবে তারও ১৫ দিন আগে থেকে তরুণীকে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে নিষেধ করেন জিরাব আলী।

পরিকল্পনা অনুযায়ী বিয়ের কথা বলে রংপুরে আসতে বলা হয় তরুণীকে। ওইদিন বিকেলে রংপুরের দেয়া ঠিকানায় চলে আসেন সেই তরুণী। এরপর খাওয়া দাওয়া করে ট্রাকে উঠে বুড়িমারীর উদ্দেশ্যে রওনা দেন ট্রাকচালক, ভাতিজা ও হামিদা। পথিমধ্যে বড়খাতা বাউরা বাজারের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাঘুরির পর চাচা-ভাতিজা কোনো এক সময় গণধর্ষণ করেন তরুণীকে।

পরে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে ট্রাকে থাকা রড দিয়ে তরুণীর মাথায় আঘাত করেন ট্রাকচালক। এ সময় তরুণীর মৃত্যু নিশ্চিত হলে বুড়িমারী মহাসড়কের পাশে মরদেহ ফেলে পালিয়ে যান তারা দু’জন।

তারপর পাটগ্রাম থানার জোংড়া ইউনিয়নের মমিনপুর আলাউদ্দিন নগর নির্জন এলাকায় মহাসড়কের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা এক তরুণীর মরদেহ দেখে ২ ডিসেম্বর সকালে পুলিশকে সংবাদ দেন জনগণ। উদ্ধারকৃত রক্তাক্ত বিবস্ত্র মরদেহের পোস্টমর্টেম শেষে বেওয়ারিশ মরদেহ হিসেবে দাফন করে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম। পরে সেদিন একটি হত্যা মামলা দায়ের করে পুলিশ।

২ ডিসেম্বর দায়েরকৃত সেই ক্লু লেস মামলার মোটিভ উদ্ধারে প্রযুক্তি ব্যবহারের পর প্রথমে বাউরা জমগ্রাম থেকে একজন লোক জানান, এক মেয়ে ও দুই জন পুরুষ লোককে বাউরা বাজারে ঘুরাঘুরি করতে দেখা গেছে। এরপর আদিতমারী থেকে আরও একজনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ৩ দিন আগে গত ২২ এপ্রিল বৃহস্পতিবার পাটগ্রাম থানা পুলিশের বিশেষ টিম তরুণীর করুণ মৃত্যুর কাহিনী উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।

এ ঘটনার বিষয়ে পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন কুমার মহন্ত বলেন, ৫ মাস ধরে প্রযুক্তি ব্যবহার করে ট্রাকচালক ও তার ভাতিজাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই।

জিএম

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh