আত্মগোপনে গিয়ে স্ত্রীর কাছে লাখ টাকা দাবি
পঞ্চগড়ে আত্মগোপনে গিয়ে স্ত্রীর কাছে মুক্তিপণ হিসেবে এক লাখ টাকা দাবি করেছেন এক যুবক। সোমবার (২৬ এপ্রিল) টাঙ্গাইলের একটি আবাসিক হোটেল থেকে ওই যুবককে উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে এ ঘটনায় থানায় নিখোঁজ ডায়রি করেন তার স্ত্রী।
অভিযুক্ত হাবিুবুর রহমান (২৯) পঞ্চগড় পৌরসভার পূর্ব জালাসি এলাকার লেবু মিঞার ছেলে। তিনি পেশায় একজন পোল্ট্রি মুরগীর খামার ব্যবসায়ী।
পুলিশ ও তার পরিবার জানায়, হাবিবুর রহমান গত ১২ এপ্রিল দুপুরের পর ব্যক্তিগত প্রয়োজনে বাসা থেকে বের হয়ে আত্মগোপনে চলে যায়। সঙ্গে সঙ্গে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকেই তার পরিবার তাকে পরিচিত সব জায়গায় খোঁজ নেয়। তার মোবাইলে কল করেও তার সন্ধান পায়নি পরিবার। এদিকে গত ১৬ এপ্রিল হাবিবুর তার স্ত্রী আছিয়া বেগমের কাছে নতুন একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে ফোন করে বলে যে তাকে হাইজ্যাক করা হয়েছে। এখান থেকে মুক্তি পেতে এক লাখ টাকা দিতে হবে। পরে মুক্তিপণের টাকা নিতে কয়েকবার তার স্ত্রীকে ফোন দেয় হাবিবুর। মুক্তিপণ দাবির পর হাবিবুরের বাবা লেবু মিঞা গত ১৮ এপ্রিল পঞ্চগড় সদর থানায় একটি নিখোঁজের ডায়েরি করে।
-
আরও পড়ুন... গণপরিবহন বন্ধই থাকছে
থানায় ডায়েরির পর পুলিশ তদন্ত শুরু করে। একই সঙ্গে তার স্ত্রীর কাছে আবারও হাবিবুরের ফোন কল এলে পুলিশকে তাৎক্ষণিক জানাতে বলে। এবার পুলিশ তার নতুন মোবাইল নম্বরটি নিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে। পরবর্তীতে কল করলে পুলিশ তার স্ত্রীকে এক লাখ টাকা দেয়ার জন্য স্বীকার করার নির্দেশ দেয়। সেই মোতাবেক অছিয়া বেগম গত ২২ এপ্রিল হাবিবুরের ফোন পাওয়ার পর এক লাখ টাকা তার হাতে তুলে দিতে রাজি হয়। অতঃপর হাবিবুর গত ২৩ এপ্রিল দুপুরে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে টাকা নিয়ে আসতে বলেন।
পরে হাবিবুরের কথামতো আছিয়া বেগম ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে টাকা নিয়ে পৌঁছে যায়। সঙ্গে পুলিশও তার পিছু নেয়। এদিকে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে হাবিবুর তার স্ত্রীকে ফোন করে বলেন তুমি পুলিশের সাহায্য নিয়েছ। সেদিন আছিয়া বেগম দুপুর থেকে রাত ৭টা পর্যন্ত অপেক্ষা করলে পরে মোবাইল বন্ধ রেখে পালিয়ে যায় হাবিবুর। এরপর পুলিশ আবারও হাবিবুরের নতুন ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটির অবস্থান তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে শনাক্ত করে। এরপর পুলিশ গত ২৪ এপ্রিল শনিবার হাবিবুরের অবস্থান নিশ্চিত হয় সে টাঙ্গাইল সদর থানার আদালতপাড়ায় অবস্থান করছে। পরে ২৫ এপ্রিল মধ্যরাতে টাঙ্গাইল শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন তাজমহল আবাসিক হোটেলের একটি কক্ষ থেকে উদ্ধার করে ২৬ এপ্রিল রাতে পঞ্চগড় সদর থানায় নিয়ে আসে।
-
আরও পড়ুন ... গুলশানের ফ্ল্যাট থেকে তরুণীর মরদেহ উদ্ধার
এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর থানার ওসি আবু আককাছ আহমেদ বলেন, হাবিবুর নিজেই আত্মগোপনে গিয়েছিল। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি তদন্ত করা হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের কারণেই দ্রুত হাবিবুরের অবস্থান নিশ্চিত করা যায়। জিজ্ঞাসাবাদে হাবিবুর বলেছে, তার ব্যক্তিগত প্রায় লক্ষাধিক টাকা ধারদেনা হয়েছে। এজন্যই সে আত্মগোপনে গিয়ে স্ত্রীর কাছে মুক্তিপণের নাটক সাজিয়ে টাকা দাবি করেছে। তার পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকায় উদ্ধারের পর সোমবার (২৬ এপ্রিল) রাতে জিজ্ঞাসাবাদের পর হাবিবুরকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
জিএম/পি
মন্তব্য করুন