• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

বাড়ির কাজ না দেয়ায় শিক্ষার্থীকে বেধড়ক পেটালেন শিক্ষক, ভিডিও ভাইরাল

কুড়িগ্রাম (উত্তর) প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ২০ এপ্রিল ২০২১, ০৯:৪১
বাড়ির কাজ না দেয়ায় শিক্ষার্থীকে বেধরক পেটালেন শিক্ষক, ভিডিও ভাইরাল
কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলা

নির্ধারিত বাড়ির কাজ না লিখে অন্য লেখা লিখে জমা দেয়ার অপরাধে কওমি মাদরাসার সাত বছরের এক শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারপিট করেছেন এক শিক্ষক। মারপিটের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে জানতে পারেন ওই শিক্ষার্থীর বাবা। এ নিয়ে এলাকায় সমালোচনার ঝড় উঠলে বিষয়টি সুরাহা করতে সোমবার (১৯ এপ্রিল) বিকেল ৫টার পর সালিশী বৈঠকের আয়োজন করে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ।

কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাথরডুবি ইউনিয়নের ঢেবঢেবি বাজার কিসমত কুলছুম কওমি মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এমডি লাভলু মিয়া মিলন নামের প্রোফাইলে মারপিটের ১ মিনিট ৩২ সেকেন্ডের ভিডিও ক্লিপটি আপলোড করা হয়।

সেখানে লেখা হয়, ‘ভাবতে অবাক লাগে এটা আর কোথাও নয় ভূরুঙ্গামারীর পাথরডুবি ঢেবঢেবি বাজার কিসমত কুলছুম কওমি মাদরাসার শিক্ষক আবু সাইদের হাতে নির্যাতনের শিকার কোমলমতি মাদরাসা ছাত্র। অভিভাবকদের অনুরোধ করছি আপনার শিশুকে ইসলামিক শিক্ষায় শিক্ষিত করবেন ভালো কথা। কিন্তু দয়া করে বোর্ডিং মাদরায়াসায় দিবেন না। এমনটা নয় যে ইসলামিক শিক্ষা নিতে গেলে বোর্ডিং মাদরাসায় দিতেই হবে। শিশু নির্যাতন বন্ধে প্রশাসনের প্রতি কঠোর আইন প্রয়োগের অনুরোধ করছি।

ভিডিওটিতে দেখা যায়, রাতের ক্লাসে অভিযুক্ত মাদরাসা শিক্ষক একহাতে একটি বই ও অন্য হাতে একটি লাঠি (বেত) নিয়ে বসে আছেন। কিছুক্ষণ পর গোলাপি পাঞ্জাবি পরিহিত একজন শিক্ষার্থীকে একটি আঘাত করেন। পরে সাদা পাঞ্জাবি পড়া একজন শিশু শিক্ষার্থীকে মাথা নিচু করে মাটিতে লাগিয়ে পিছনে সজোড়ে কয়েকটি আঘাত করেন। পরে ওই শিক্ষার্থীর হাত ধরে বেধরক পিটাতে থাকে আবার কখনও মাটিতে আছড়াতে থাকে। এতে ওই শিক্ষার্থী চিৎকার করতে থাকে।
ভিডিওটির সূত্র ধরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই শিক্ষার্থী পাথরডুবী বাজারের বাসিন্দা এবং ঢেবঢেবি বাজারের ব্যবসায়ী মোতালেব হোসেনের ছেলে লাম মিয়া ওরফে লাল মিয়া (৭)। সে ওই মাদরাসার দ্বিতীয় জামায়াতের শিক্ষার্থী।

মোতালেব হোসেন মোবাইল ফোনে আরটিভি নিউজকে জানান, ঘটনাটি গতমাসের (মার্চ) ২৭ তারিখের। ছেলেকে বাড়ির কাজের জন্য নির্দিষ্ট একটি লেখা লিখে আনতে দিয়েছিল। কিন্তু সে অন্য একটি লেখা লিখে নিয়ে যাওয়ায় এমন মারপিট করেছে। ছেলে বাড়িতে এসে এসব বিষয় ভয়ে জানায়নি। সোমবার আমি মোবাইলে ভিডিওটি দেখে আৎকে উঠি এবং ছেলেকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে ঘটনা শুনতে চাই। ছেলে হুজুরের ভয়ে আমাদের বিষয়টি জানায়নি। এমনকি এই নির্যাতনের কথা কাউকে বললে একেবারে মেরে ফেলবে বলে হুজুর শাসিয়েছে। মোতালেব হোসেন আরও বলেন, আমার ছেলে ছাড়াও আরো তিন চারজনকে একইভাবে নির্যাতন করেছে। বিষয়টি নিয়ে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ সোমবার বিকালে বসার কথা ছিল। কিন্তু আমি উপস্থিত থকাতে পারিনি।

অভিযুক্ত শিক্ষক মোঃ আবু সাইদ আরটিভি নিউজকে জানান, ঘটনাটি প্রায় দেড় দুইমাস আগের। সেখানে দ্বিতীয় জামায়াতের কোন শিক্ষার্থী ছিল না। যারা ছিল তারা তৃতীয় জামায়াতের শিক্ষার্থী। পরীক্ষা চলাকালে তারা আমার সাথে বেয়াদবী করেছিল। তাই তাদেরকে একটু শাসন করেছি। বিষয়টি নিয়ে সে সময় মাদরাসা কর্তৃপক্ষ আমাকে পানিশমেন্ট দিয়ে সংশোধন করে নিয়েছে।

এ বিষয়ে মাদরাসাটির প্রধান মৌলভী (শিক্ষক) মাওলানা আবু বক্কর সিদ্দিক আরটিভি নিউজকে জানান, অভিযুক্ত শিক্ষক পাথরডুবি বাজারের হাবিবুর রহমানের ছেলে। তিনি দেড় বছর থেকে মাদরাসায় শিক্ষকতা করেন। দ্বিতীয় জামায়াতের ওই শিক্ষার্থী নির্যাতনের বিষয়ে সোমবার বাদ আছর মাদরাসা কর্তৃপক্ষ এবং নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থী লাম মিয়ার জেঠাকে নিয়ে একটা মিটিং হয়েছে। মিটিংয়ে শিক্ষক আবু সাইদকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা জানান, বিষয়টি আমরা ক্ষতিয়ে দেখছি। ঘটনার সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ঢাবিতে ছাত্রলীগের ‘গেস্টরুমে’ অচেতন শিক্ষার্থী, তদন্ত কমিটি গঠন
নবনিযুক্ত উপ-উপাচার্যকে ফুলেল শুভেচ্ছা বিএসএমএমইউ শিক্ষক-কর্মকর্তাদের
চুয়েট শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় ঘাতক বাসচালক গ্রেপ্তার
রাজবাড়ীতে হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু
X
Fresh