মেয়ে সন্তানে খুশি নয়, স্বামীর বিরুদ্ধে গৃহবধূর মামলা
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে মেয়ে সন্তান জন্ম দেয়ায় স্বামীর বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে গৃহবধূ রোকসানা খাতুনকে। এ ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের করেছেন তিনি। মামলায় স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়িসহ ৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। আজ রোববার (২১ মার্চ) দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-২-এ মামলাটি দায়ের করেন গৃহবধূ রোকসানা। বাদী রোকসানার আইনজীবী অ্যাডভোকেট হাছিবুল হাসান হ্যাপী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলে আদালত পুলিশকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
-
আরও পড়ুন... সাধারণ ছুটি নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যা
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ মার্চ রংপুরে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে কন্যাসন্তান জন্ম দেন গৃহবধূ রোকসানা। ৪ দিন পর স্বামী রাজা মিয়ার বাড়ি সাদুল্লাপুরের নলডাঙ্গা ইউনিয়নের প্রতাপ গ্রামে গেলে তার শ্বশুর-শাশুড়িসহ পরিবারের অন্যরা তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। সে সময় থেকে তিনি বাবার বাড়ি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের সর্বানন্দ ইউনিয়নের ধনিয়ারকুড়া গ্রামে অবস্থান করছেন।
ভুক্তভোগী রোকসানা খাতুন জানান, গত বছরের ১০ জুন সাদুল্লাপুরের নলডাঙ্গা ইউনিয়নের ঘোড়ামারা গ্রামের মাহাবুবুর আলীর ছেলে রাজা মিয়ার সাথে পারিবারিক-ভাবে বিয়ে হয় তার। বিয়ের কয়েকদিন পর সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়েন গৃহবধূ রোকসানা। মাস চারেক পর গর্ভের সন্তানের লিঙ্গ পরিচয় জানতে আল্ট্রাসনোগ্রাম করান তার স্বামী। আল্ট্রাসনোগ্রামের ফলাফল জানার পর বাধে বিপত্তি। গর্ভের সন্তান কন্যা সন্তান জানার পর থেকেই রোকসানার সাথে দূরত্ব তৈরি করে তার স্বামী রাজা মিয়া ও পরিবারের লোকজন।
রোকসানা আরও জানান, তার ধারণা ছিল সন্তান জন্মের পর হয়তো স্বামী রাজার মন গলবে। কিন্তু ঠিক এর উল্টোটা হয়েছে। গত ৮ মার্চ প্রসব বেদনা উঠলে স্বামী-শ্বশুর-শাশুড়ি তার পাশে দাড়ায়নি। ফুফা শাশুড়ি কোহিনুর বেগম আর মাকে নিয়ে রংপুরে যান রোকসানা। সেখানে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে অস্ত্রোপচারে কন্যাসন্তান জন্ম দেন রোকসানা। তার মোবাইল নম্বর ব্লাকলিস্টে রাখায় স্বামী-শাশুড়ি কারও সাথে যোগাযোগ করতে পারেননি তিনি। ফুফা শাশুড়ি কোহিনুর বেগমও চলে যান ক্লিনিক থেকে।
গত ১১ মার্চ দুপুরে কন্যাসন্তানসহ রোকসানা স্বামীর বাড়িতে গেলে বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে সবাই সটকে পড়েন। শ্বশুর মাহাবুবুর আলী দাবি করেন, তার ছেলে রাজা ৩ মাস আগেই রোকসানা খাতুনকে তালাক দিয়েছেন। এর পরে বাধ্য হয়ে ৯৯৯-এ কল দিলে ওইদিন সন্ধ্যায় সাদুল্লাপুর থানা থেকে পুলিশ যায় রোকসানার স্বামীর বাড়িতে। কাউকে না পেয়ে রোকসানাকে বাবার বাড়ি ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দেয় পুলিশ।
জিএম
মন্তব্য করুন