• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

যে কারণে সিলেটে বাড়ছে ধর্ষণ

  ১৫ মার্চ ২০২১, ২২:৩৩
যে কারণে সিলেটে বাড়ছে ধর্ষণ
ফাইল ছবি

সুষ্ঠুভাবে মামলার তদন্ত না করার পাশাপাশি ধর্ষকদের বাঁচাতে মরিয়া রাজনৈতিক নেতাদের প্রভাবের কারণে সিলেটে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে ধর্ষণ। এমসি কলেজের গৃহবধূ দলবেঁধে ধর্ষণ সিলেট বিভাগে গেল বছর ২৭২ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এছাড়া সিলেটে একই সময়ে ৫২৪ জন নারী ও শিশু বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হয়েছেন।

আজ সোমবার আরটিভি নিউজের সাথে একান্ত আলাপকালে এমন তথ্য দিয়েছেন সিলেট বিভাগের পুলিশের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহমদ ও সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার নিশারুল আরিফ।

পুলিশ সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সিলেট বিভাগের ৪ জেলা ও মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) মিলিয়ে গত বছর ২৭২ জন নারী ধর্ষণের শিকার হন। এর মধ্যে সিলেট মহানগর পুলিশ এসএমপি-তে ৪৭টি ও সিলেট রেঞ্জের সকল থানা মিলে ২২৫টি ধর্ষণ মামলা রেকর্ড করে পুলিশ। তার মধ্যে সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজারে নারী শিশু মিলে ৫২৭ জন বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। আর সিলেট মেট্রোপলিটন এলাকায় ২০২০ সালে নারী ধর্ষণের মামলা হয়েছে ৪৭টি, নির্যাতনে গুরুতর আহত হয়েছেন ৪ জন, অন্যভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৯৮ জনসহ সর্বমোট ১৪৯ জন আর শিশু নির্যাতনে শিকার হয়েছেন ১২০ জন।

পুলিশি তৎপরতায় ধর্ষণ কিছুটা কমেছে জানিয়ে সিলেট বিভাগের পুলিশের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহমদ আরটিভি নিউজকে বলেন, পুলিশের তৎপরতার কারণে সিলেট বিভাগে ধর্ষণের মামলা কিছুটা হলেও কমেছে। সমাজের সকলের কার্যকর ভূমিকা ও সমাজ থেকে অপসংস্কৃতি দূর করতে পারলে আগামীতে আরও কমে আসবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

ধর্ষণের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে পুলিশের ডিআইজি বলেন, সমাজ থেকে নারী নির্যাতন দূর করতে জনসাধারণকে সঙ্গে নিয়ে মাঠে কাজ করছে পুলিশ। আমরা অতীতের ঘটনা পর্যালোচনা করে সমাজ থেকে চিরতরে ধর্ষণ নামক সামাজিক ব্যাধি সমাজ থেকে নির্মূলের চেষ্টা করছি।

সিলেটের মানুষের মধ্যে সামাজিক অবক্ষয় আর অপসংস্কৃতি বৃদ্ধির ফলে ধর্ষণের সংখ্যা বাড়ছে জানিয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার নিশারুল আরিফ আরটিভি নিউজকে জানান, সিলেটে মানুষের মধ্য দিন দিন সামাজিক অবক্ষয় আর অপসংস্কৃতি বৃদ্ধির ফলে বাড়ছে অপরাধ প্রবণতা। অপসংস্কৃতি দূর করতে না পারলে নারী নির্যাতন ধর্ষণ সমাজ থেকে কমানো দুষ্কর হয়ে পড়বে।

পুলিশ কমিশনার এসময় ধর্ষক ও ধর্ষকদের বাঁচাতে যারা লবিং করে থাকেন তাদের বিরুদ্ধে হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, আইন সবার জন্য সমান। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। শুধু ধর্ষক নয়, এখন থেকে ধর্ষকদের বাঁচাতে যারা তদবির করবেন তাদেরও আইনের আওতায় এনে শাস্তির বিধান করা হবে।

সিলেট জেলা জজ কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান আরটিভি নিউজকে জানান, সিলেটে একটি মাত্র নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আছে। যেখানে বর্তমানে ৩ হাজার ৪৭৬টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। যা পরিচালনার জন্য একজন মাত্র বিচারক নিযুক্ত আছেন। যার ফলে ধীর গতিতে মামলার নিষ্পত্তি হচ্ছে। এসময় তিনি সিলেটে আরও দুটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করার আহ্বান জানান।

রাজনৈতিক নেতাদের প্রভাব প্রতিপত্তির কারণে প্রকৃত অপরাধীরা প্রায়শ মামলা থেকে নিষ্পত্তি পেয়ে যাচ্ছেন জানিয়ে সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেলের সদস্য অধ্যাপক, ড. জায়েদা শারমিন আরটিভি নিউজকে বলেন, “প্রায় সময় দেখা যায় ধর্ষক কোনও রাজনৈতিক নেতার দলীয় কর্মী। আর এ ধরণের ঘটনার প্রেক্ষিতে নেতারা তাদের কর্মী সমর্থকদের বাঁচাতে মরিয়া হয়ে তদবির করা শুরু করেন। যার ফলশ্রুতিতে প্রকৃত অপরাধীরা অনেক সময় মামলা থেকে অব্যাহতি পান। তাই সরকারের উচিত সার্বক্ষণিক নজরদারীর মাধ্যমে ধর্ষণের মামলাগুলো যেনও নিরপেক্ষভাবে নিষ্পত্তি হয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করা।” পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতার উপরও গুরুত্বারোপ করেন এই বিশেষজ্ঞ।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
মেয়েকে ধর্ষণে বাবার মৃত্যুদণ্ড
প্রেমিকাকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে প্রেমিক গ্রেপ্তার
মাদক সেবনে বাধা, বৃদ্ধাকে ধর্ষণের পর হত্যা
মাদকের টাকার জন্য স্ত্রীকে ধর্ষকদের হাতে তুলে দিলেন স্বামী
X
Fresh