• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

হাকিমপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস হিসাবরক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

হিলি প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ০৫ মার্চ ২০২১, ১৯:২৪
হাকিমপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস হিসাবরক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ
দিনাজপুরের হাকিমপুর (হিলি) উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের হিসাবরক্ষক আশরাফুল আলম

দিনাজপুরের হাকিমপুর (হিলি) উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের হিসাবরক্ষক আশরাফুল আলমের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, অর্থ আত্মসাৎ, কর্মক্ষেত্রে অনিয়মিত উপস্থিতিসহ নানা অভিযোগ উঠেছে।

আশরাফুল আলম হাকিমপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে দীর্ঘ ৫ বছর অফিস সহকারী-কাম-ডাটা এন্ট্রি অপারেটর পদে কর্মরত থাকা অবস্থায় সম্প্রতি পদোন্নতি প্রাপ্ত হয়ে এই উপজেলায় হিসাবরক্ষক পদে কর্মরত আছেন।

অভিযুক্ত হিসাবরক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী ও জনপ্রতিনিধিদের মৌখিক ও লিখিত নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে দিনাজপুর জেলা শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলাম গেল বছরের ৪ নভেম্বর অভিযুক্ত হিসাবরক্ষক আশরাফুল আলমকে অন্যত্র বদলিসহ বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর সুপারিশ করেন। কিন্তু অদ্যাবধি হিসাবরক্ষক আশরাফুল আলমের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। অভিযোগ ওঠে, তিনি কর্মকর্তার নাকের ডগায় বসে বহাল তবিয়তে দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, ক্ষমতার অপব্যবহার, উৎকোচ গ্রহণ, শিক্ষক-কর্মচারীদের হয়রানিসহ অশালীন ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের মাত্রা অনেকাংশে বাড়িয়ে দিয়েছেন।

একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা আরটিভি নিউজকে জানান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের হিসাবরক্ষক আশরাফুল আলমের নিকট আমরা জিম্মি। মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে জারিকৃতপত্রের চাহিত তথ্য জমাসহ বৃত্তি ও উপবৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সকল প্রকার অনলাইন কাজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অফলাইন/অনলাইন ও কম্পিউটার জনিত যাবতীয় কাজ আমরা নিজে অথবা বিভিন্ন কম্পিউটার সেন্টার থেকে পূরণ করে তার হার্ডকপি ও সফটকপি অফিসে জমা দিতে গেলে কাজের ভুল না থাকলেও নানা অজুহাতে ভুল দেখিয়ে তথ্য জমা না নেয়ার হুমকি দেন। মৌখিক ও জারিকৃতপত্রের চাহিত সকল কাজ তার মাধ্যমে করাতে বাধ্য করেন। শিক্ষক-কর্মচারীদের ইএফটিসহ সকল কাজ আমরা ৪ থেকে ৫ গুণ বেশি টাকার বিনিময়ে তার মাধ্যমে করতে বাধ্য হচ্ছি।

তারা আরও জানান, প্রতিষ্ঠানের এমপিও পাসওয়ার্ড ভুলে গেলে বা হারিয়ে গেলে ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে তার নিকট থেকে সংগ্রহ করতে হয়। টাকা ছাড়া এ অফিসে কোনও কাজই হয় না। সকল প্রকার ফাইল সংক্রান্ত কাজে অর্থ গ্রহণ, বিনামূল্যে সরকারি বই বিতরণে বিদ্যালয় প্রতি অর্থ গ্রহণ, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করিয়ে দেয়ার নামে উৎকোচ গ্রহণ, শিক্ষক-কর্মচারীদের উচ্চতর স্কেল, বিএড স্কেল, নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও সংক্রান্ত অনলাইন আবেদন সেন্ট বাবদ মোটা অংকের অর্থ দাবি করেন, অনাদায়ে নির্দিষ্ট তারিখের পূর্বেই ফাইল ব্যাক করেন। তার চাহিদা পূরণ না করলে নানা রকম হয়রানি, অশালীন, অসৌজন্যমূলক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের স্বীকারসহ তার রোষানলে পড়তে হয়।

এদিকে অভিযুক্ত আশরাফুল আলম তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে আরটিভি নিউজকে জানান, আমি ওইসব অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নই।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বোরহান উদ্দিন আরটিভি নিউজকে জানান, আমি অসুস্থ, অফিসে নেই। হিসাবরক্ষক আশরাফুল আলমের অভিযোগের ব্যাপারে আমি অবগত আছি।

হাকিমপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হারুন-উর রশিদ হারুন আরটিভি নিউজকে জানান, হিসাবরক্ষক আশরাফুল আলমের বিরুদ্ধে জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে অভিযোগ করা হয়েছিল। তিনি অভিযুক্ত আশরাফুল আলমকে অন্যত্র বদলিসহ বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর সুপারিশও করেছেন।

জেলা শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলাম আরটিভি নিউজকে জানান, আমি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী ও জনপ্রতিনিধিদের মৌখিক ও লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত আশরাফুল আলমকে অন্যত্র বদলিসহ বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর সুপারিশ করেছি।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বেনজীরের দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদক
বেনজীর আহমেদের দুর্নীতি অনুসন্ধান চেয়ে হাইকোর্টে রিট
দুর্নীতি আছে, তবে বিএনপির মুখে এ অভিযোগ মানায় না : হানিফ
সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতির নজির, বেনজির ও দায়মুক্তি
X
Fresh