নির্যাতিত কিশোরীর পরিবারকে সমাজচ্যুত, আদালতের তদন্তের নির্দেশ
ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার মুন্সিরহাট ইউনিয়নের কুতুবপুর গ্রামে ধর্ষণের শিকার হয়ে সন্তান জন্ম দেওয়া কিশোরীর পরিবারকে সমাজচ্যুত করার সত্যতা তদন্ত করে তিন কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ফেনীর চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আবদুর রহিম এই আদেশ জারি করেন।
সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরের উদ্বৃতি দিয়ে ওই আদেশে বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধান মোতাবেক দেশের প্রতিটি নাগরিকের চলাফেরার স্বাধীনতা, জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার স্বীকৃত। কথিত সমাজপতি কর্তৃক কাউকে সমাজচ্যুত করার সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ বেআইনি ও মৌলিক মানবাধিকার পরিপন্থী। এ অবস্থায় ওই প্রকাশিত সংবাদের সত্যতা আছে কিনা তা তদন্ত করে আগামী তিন কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ফুলগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে ‘ফেনীতে কিশোরীকে ধর্ষণ মামলায় কনস্টেবল গ্রেপ্তার ও ধর্ষণের শিকার কিশোরীর সন্তান জন্ম, বিচারে সমাজচ্যুত পরিবার’ শিরোনামে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে ফেনীসহ দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।
ফেনীর আদালতের ফোকাল পারসন ও সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইন আরটিভি নিউজকে জানান, এ ধরনের কোনও আদেশ এর আগে ফেনীর আদালত থেকে হয়নি। চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আবদুর রহীম স্বাক্ষরিত আদেশটি গতকাল জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ সুপার ও ওসি ফুলগাজীর কাছে পাঠানো হয়েছে।
কিশোরীর পরিবারের দাবি, আমরা ধর্ষণের বিচার চাইতে গিয়ে উল্টো সমাজচ্যুত হলাম। এখন কেউ আমাদের সঙ্গে কথা বলে না। সবাই আমাদেরক এড়িয়ে চলছে। বাজারে আমাদের ইলেকট্রনিক্সের দোকানটিও খোলা যাচ্ছে না।
ফুলগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কুতুব উদ্দিন আরটিভি নিউজ জানান, আদালতের নির্দেশনা এখনও হাতে পাইনি। ওই পরিবারের সামাজিক কোনও সমস্যা হচ্ছে না বলে তারা জানিয়েছে। এরপরও কোনও সমস্যা হলে আমাদেরকে তাৎক্ষণিক জানাতে অনুরোধ করে এসেছি।
ওসি আরও জানান, যখন ওই কিশোরীর সন্তান হয়েছে তখন হয়তো তাদেরকে সামাজিকভাবে হেয় করা হয়েছে। এখন মোটামুটি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গেছে।
জেবি
মন্তব্য করুন