নাগরপুরে প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত
টাঙ্গাইলের নাগরপুরে ঐতিহ্যবাহী পচাসারটিয়া মেহের আলী খান উচ্চ বিদ্যালয়ে অর্থ আত্মসাৎ ও এক মহিলাকে যৌন হয়রানির অডিও ক্লিপস সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. ফরহাদ আলীকে (৪৬) স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
তার বিরুদ্ধে আনিত অর্থ আত্মসাত ও নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ সন্দেহাতিতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করা হয়। গেলো রোববার সকালে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও পচাসারটিয়া মেহের আলী খান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফরহাদ আলীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ দিন ধরে দুই সন্তানের জননীকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ উঠে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুক্তভোগী ওই নারীর সঙ্গে শিক্ষক ফরহাদ আলীর যৌন উত্তেজক আপত্তিকর কথপোকথনের একাধিক অডিও ক্লিপস ভাইরাল হয়। এ ঘটনা বিভিন্ন জাতীয় ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ প্রচার হলে এলাকাসহ বিভিন্ন মহলে ব্যাপক তোলপার সৃষ্টি হয়। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ফরহাদ আলী উপজেলার শাখাইল গ্রামের দুঃখু মিয়ার ছেলে।
সূত্রে আরও জানা যায়, উপজেলার ভারড়া ইউনিয়নের ভারড়া গ্রামের হত দরিদ্র কাঠমিস্ত্রী আ. মোতালেবের স্ত্রীকে (৩৭) চাকরি দেওয়ার সূত্র ধরে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হন পচাসারটিয়া মেহের আলী খান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। চাকরি প্রত্যাশী ভুক্তভোগীর দরিদ্রতার সুযোগ নিয়ে মোবাইল ফোনে ও সরাসরি প্রতিনিয়ত শারীরিক মিলনের জন্য কুপ্রস্তাব দিতে শুরু করে। পরে ভুক্তভোগী নারী টাঙ্গাইলের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাগরপুর আমলী আদালতে তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৪-৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
বিষয়টি সে সময় বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রচার হলে কর্তৃপক্ষ গত বছরের ২১ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে অডিটের নামে সহকারী শিক্ষকদের কাছে টাকা নিয়ে তা আত্মসাত ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠে। এ সকল অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় অবশেষে তাকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করা হয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা ডা. তাহেরুল ইসলাম আরটিভি নিউজকে জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে স্পর্শকাতর। এখানে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা লেখাপড়া করে। জেনেশুনে চরিত্রহীন ও বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাতকারীকে বহাল রাখতে পারি না। প্রতিষ্ঠানের সুনাম অক্ষুণ্ন রাখতে এবং শিক্ষার্থীদের ফের স্কুলমুখী করতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জেবি
মন্তব্য করুন