চেয়ারে বসেই বরখাস্ত মেয়র আরিফ ও বুলবুল
চেয়ারে বসার মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বরখাস্ত হলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল।
সাময়িক বরখাস্ত হবার ২ বছর ৩ মাস পর উচ্চ আদালতের নির্দেশে সিলেট সিটি মেয়রের চেয়ারে বসেন আরিফুল হক। এসময় কাউন্সিলর ও নগর ভবনের কর্মকর্তা- কর্মচারিরা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
তবে এর কয়েক ঘণ্টা পরই আরেক মামলায় অভিযুক্ত হয়ে ফের বরখাস্ত হলেন তিনি। প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জনসভায় বোমা হামলা মামলায় অভিযুক্ত হওয়ায় তাকে বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
সকালে দায়িত্ব নেয়ার পর আরিফুল বলেন, আমার মেয়াদের বেশিরভাগ সময় পার হয়ে গেছে। শেষদিকে এসে দায়িত্ব ফিরে পেয়েছি। আমি সবার সহযোগিতা চাই। জনগণের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকে মন্ত্রণালয় থেকে এভাবে বরখাস্ত করাটাও জনরায়বিরোধী।
তিনি বলেন, আমি জনগণকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচিত হয়েছিলাম তা পূরণে কাজ করতে চাই। বিনা দোষে আমাকে ২৭ মাস জনগণের কাছ থেকে দূরে রাখা হয়েছিল। এখন ফিরে এসেছি। তাই প্রতিশ্রুতি পূরণে সবার সহযোগিতা চাই।
সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলার আসামি হয়ে ২ বছর ৪ দিন কারাভোগের পর গেলো ৪ জানুয়ারি সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান আরিফুল হক চৌধুরী। এর পর মেয়র পদে সাময়িক বরখাস্ত আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। উচ্চ আদালতের রায়ে দায়িত্ব ফিরে পান ফের। গেলো ৩০ মার্চ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে মেয়রের দায়িত্ব নেয়ার চিঠি তার কাছে পৌঁছায়।
তবে ২ এপ্রিল শনিবার দায়িত্ব বুঝে নেয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অন্য মামলায় অভিযুক্ত হওয়ায় তাকে ফের বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
এদিকে, আদালতের নির্দেশে দায়িত্ব নেয়ার কয়েক ঘণ্টা পরে ফের বরখাস্ত হলেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র ও নগর বিএনপির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল।
রোববার স্থানীয় সরকারের মন্ত্রণালয় থেকে এ আদেশ দেয়া হয়। এদিকে আজ (রোববার) সকাল ১০টার দিকে বুলবুল নিজের দায়িত্বভার গ্রহণের জন্য সিটি করপোরেশন ভবনে গিয়ে দেখতে পান তার কার্যালয়ে তালা ঝুলছে।
রাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম শরিফউদ্দিন সেসময় বলেন, কে বা কারা এই কার্যালয়ে তালা লাগিয়েছে, সে ব্যাপারে তারা কেউ জানেন না।
পরে প্রশাসনের উপস্থিতিতে মেয়র বুলবুলের কক্ষে তালা ভাঙা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী কাজী আশরাফ উদ্দিন, বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহদাত হোসেন খানসহ রাজশাহী সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।
মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে স্থানীয় সরকারের মন্ত্রণালয়ের দেয়া আদেশ অবৈধ বলে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। গেলো ৫ মার্চ আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন। ফলে মেয়র পদে ফিরতে কোনো বাধা না থাকায় দায়িত্ব বুঝে নিতে যান বুলবুল।
নাশকতার ৪ মামলায় পুলিশের অভিযোগপত্রের পর বুলবুলকে ২০১৫ সালের ৭ মে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। ২০১৩ সালের ১৫ জানুয়ারি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন।
- ক্ষণিকেই চেয়ার ছাড়া বুলবুল
- অবশেষে ভাঙা হলো তালা, চেয়ার পেলেন বুলবুল
- রাসিক মেয়রের কক্ষে তালা, কে দিয়েছে জানেন না কেউ
এইচটি/ডিএইচ/এসজে
মন্তব্য করুন