মাত্র ২৬ বছর বয়সেই পৌর কাউন্সিলর হয়ে আলোচনায় রকি
মাত্র ২৬ বছর বয়সেই টাঙ্গাইল পৌরসভার কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন নুরুল ইসলাম রকি হায়দার। ১৩৩ বছরের প্রাচীন ও প্রথম শ্রেণির এ পৌরসভার ১৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ নির্বাচিত কাউন্সিলর তিনি। তৃতীয় ধাপে গত ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত টাঙ্গাইল পৌরসভার নির্বাচনে ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। তরুণ এ প্রার্থীর বিজয়ে আনন্দিত সমর্থকরা।
১৮টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত এ পৌরসভার ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ২৪ হাজার ৪২৫ জন। এর মধ্যে ৬০ হাজার ৩৩৪ জন পুরুষ ও ৬৪ হাজার ৯১ জন নারী। টাঙ্গাইল পৌরসভার ১৮টি ওয়ার্ডে ৩ জন মেয়র, ৩৪ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর আর ১০০ জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে সন্তোষ, বালুচড়া, পুরাতন পাড়া, ঘোষপাড়া, কাগমারী, অলোয়া ভবানী ও মাদার খোল নিয়ে গঠিত টাঙ্গাইল পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড। এ ওয়ার্ডের ভোটার সংখ্যা ৬ হাজার ৩৯৩ জন। গত ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত পৌরসভা নির্বাচনে এ ওয়ার্ডে ভোট দিয়েছেন ৪ হাজার ৯৮১ জন ভোটার। এর মধ্যে ৮নং ওয়ার্ডের উট পাখি প্রতীকের প্রার্থী মো. নুরুল ইসলাম রকি হায়দার ১ হাজার ৬৪৩ ভোট পেয়ে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ডালিম প্রতীকের প্রার্থী ও দুইবারের কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলী (৬০) পেয়েছেন ১ হাজার ৫৯৩ ভোট। পাঞ্জাবি প্রতীকের প্রার্থী মো. শফিকুল ইসলাম পেয়েছেন ১৫০৯ আর পানির বোতল প্রতীকের প্রার্থী সুজিত সরকার পান ১৫৮ ভোট।
আরও পড়ুন : ‘ঘুষ পেলেই মিলতো ভাল রিপোর্ট’
বিজয়ী কাউন্সিলর সমর্থক ও সন্তোষ রথখোলা এলাকার ভোটার মো. ফরিদ হোসেন (৩০) বলেন, করোনা চলাকালে জনকল্যাণে রকি হায়দারের এগিয়ে আসাই ছিল তাদের কাছে লক্ষণীয়। এ সময় ওয়ার্ডের গরীব-দুঃখী মানুষকে ব্যক্তি উদ্যোগে দেয়া চাল, ডাল, আটা ও টাকা দিয়ে সাহায্য সহযোগিতা করার মনোভাব দেখে আমরা যুবসমাজ তাকে সমর্থন দিয়েছি। ভবিষ্যতেও তিনি এই ওয়ার্ডবাসীর কল্যাণে কাজ করবে এমনটাই আশা।
সন্তোষ রথখোলা এলাকার প্রবীণ ভোটার লাল মাহমুদ (৮০) বলেন, রকি হায়দার একজন ভালো ও সৎ ছেলে। এ কারণে এত অল্প বয়সী একজন প্রার্থীকে আমরা ভোট দিয়ে ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত করেছি।
আরও পড়ুন : ‘সব জেলায় করোনার টিকা পৌঁছে গেছে’
বিজয়ী কাউন্সিলর রকি (২৬) বলেন, আমার বাবা মরহুম সেলিম হায়দার এ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। খুব কাছ থেকে আমি আমার বাবার কাজ দেখেছি। দেখেছি কিভাবে জনগণের খেদমত করতে হয়, কিভাবে নাগরিক সুযোগ-সুবিধাগুলো জনগণের কাছে পৌঁছে দেয়া যায়। এ কারণে আমার বিশ্বাস আমি পারবো ভোটারদের খেদমত করতে। রাস্তা ঘাটের উন্নয়নের পাশাপাশি রয়েছে কিছু স্মার্ট আইডিয়া। এ ওয়ার্ডবাসীর চিকিৎসা সুবিধার্থে ব্যক্তিগত টাকায় একটি এ্যাম্বুলেন্স কিনবো। যার মাধ্যমে ও বিনা পয়সায় এ ওয়ার্ডের অসুস্থ নাগরিকগণ চিকিৎসা সেবার সুবিধা ভোগ করবেন। এ সেবার স্বার্থে ওয়ার্ডের প্রতিটি মোড়ে মোড়ে হটলাইন থাকবে, ওই হটলাইনের মাধ্যমে যদি কোনও মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন তার পরিবার যোগাযোগ করতে পারবেন। সংবাদ পাওয়া মাত্রই রোগীকে টাঙ্গাইল হাসপাতাল অথবা ঢাকায় পৌঁছে দেবে ওই এ্যাম্বুলেন্স। এছাড়াও ওয়ার্ডের প্রতিটি মোড়ে মোড়ে ওয়াইফাই সংযোগ দিব, যার মাধ্যমে মানুষ তার জরুরী কাজগুলো সেড়ে নিতে পারবেন।
তিনি বলেন, ওয়ার্ডের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে বৃদ্ধি পেয়েছে মাদক বেচাকেনা। মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতে চিহ্নিত সেই সকল স্থানে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করার ইচ্ছাও রয়েছে তার। এছাড়াও রয়েছে ওয়ার্ডের মাদকাসক্ত যুবকদের নিজস্ব অর্থায়নে সুচিকিৎসা দেয়ার পরিকল্পনা।
আরও পড়ুন : সাগরপথে আসা সাড়ে ৬ কোটি টাকার ইয়াবা জব্দ
গত ৩০ জানুয়ারি তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত টাঙ্গাইল পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের নব-নির্বাচিত মো. নুরুল ইসলাম রকি হায়দার সর্বকনিষ্ঠ কাউন্সিলর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টাঙ্গাইলের সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এ.এইচ.এম কামরুল হাসান।
এসআর/এসএস
মন্তব্য করুন