ধর্ষণে জন্ম নেওয়া শিশুটি ১১ বছর পর পেলো বাবার স্বীকৃতি
রংপুরের পীরগাছায় উপজেলায় এক প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণের ফলে সন্তান জন্মদানের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার ১১ বছর পর ধর্ষককে পিতার স্বীকৃতি দিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ রোববার দুপুরে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-২ এর বিচারক মো. রোকনুজ্জামান এ রায় দেন।
এছাড়াও ওই সন্তানের ভরণপোষণ প্রদানসহ ধর্ষকের ওয়ারিশ হিসেবে ঘোষণা দেন বিচারক।
রায় ঘোষণার সময় অভিযুক্ত জনৈক আবুল কালাম আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, পীরগাছার হরিরাম গ্রামের বাক প্রতিবন্ধী এক নারীকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করতেন চাচাতো বোনের স্বামী প্রতিবেশী আব্দুল জলিলের ছেলে আবুল কালাম। এ নিয়ে তাকে নিষেধ করা হলে ক্ষিপ্ত হয়ে ২০০৮ সালের ১ ডিসেম্বর বিকেলে কৌশলে ওই নারীকে ধর্ষণ করেন কালাম।
এর কিছুদিন পর মেয়েটির শারীরিক পরিবর্তন হলে বিষযটি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করা হলে ইশারায় আবুল কালামকে চিহ্নিত করে পরিবারের লোকজনদের ধর্ষণের বিষয়টি অবগত করেন।
মেয়েটি গুরতর অসুস্থ হয়ে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দিলে ২০০৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর তাকে পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
পরবর্তীতে মেয়েটির বাবা ধর্ষণের ঘটনা এবং সন্তানের স্বীকৃতির দাবিতে ২০০৯ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর আবুল কালামকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন ।
আদালতের নির্দেশে ওই বছরের ২৫ ডিসেম্বর অভিযোগপত্র দাখিল করেন তৎকালীন পীরগাছা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুস সামাদ সরকার।
এরপর ধর্ষণে জন্ম নেয়া শিশুর এবং ধর্ষকের ডিএনএ পরীক্ষা ও ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে দীর্ঘ ১১ বছরেরও বেশি দিন পর আজ রোববার এ রায় ঘোষণা করা হয়।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-২ এর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন আরটিভি নিউজকে বলেন, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ছাড়াও এক লাখ টাকা জরিমানা আদায় এবং ধর্ষকের ওয়ারিশ হিসেবে সম্পত্তির অংশীদারিত্বের রায় দিয়েছেন বিচারক।
যদি ধর্ষকের কোনও সম্পত্তি না থাকে তাহলে ওই শিশুর ব্যয়ভার রাষ্ট্রকে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
জেবি
মন্তব্য করুন