• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

এতিম শিশুদের নিয়ে খেজুর রসের পিঠা উৎসব 

নড়াইল প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ১২ জানুয়ারি ২০২১, ১২:৩৫
Date juice cake festival with orphans
এতিম শিশুদের নিয়ে খেজুর রসের পিঠা উৎসব 

নড়াইলে দেড় শতাধিক এতিম শিশুদের নিয়ে আয়োজন করা হয় আবহমান গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী খেজুর রসের পিঠা উৎসব। এই উৎসবকে ঘিরে মা বাবা হারা এসব এতিম শিশুদের যেন আনন্দের শেষ ছিল না। নিজেদের হাতে তৈরি পিঠা ভাগাভাগি করে খেয়েছেন তারা। এ যেন এক অন্যরকম অনুভূতি। সম্প্রতি ব্যতিক্রমধর্মী এ আয়োজন করেন নড়াইল সদর উপজেলার সীমানন্দপুর গ্রামে ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘আজিজুর রহমান বালিকা সমাজসেবা এতিমখানা’।

এই এতিমখানায় দুই শতাধিক এতিম শিশুদের বসবাস। সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত এতিম সদস্যের সংখ্যা ১৪০ জন। মা বাবা হারা এসব এতিম শিশুদের কষ্ট লাঘবে আয়োজন করা হয় খেজুর রসে ভেজানো পিঠা উৎসব। এই প্রতিষ্ঠানের মেয়েরা নিজেরাই চাল দিয়ে গুড়া তৈরি করে, খেজুর রস জালিয়ে পিঠা তৈরি করেছে। সবাই মিলে এক লাইনে বসে তৃপ্তি সহকারে খেয়েছে। এ যেন ভালোবাসার একটি বড় পরিবার।

এতিমখানার নিবাসী মদিনা খানম, মাহমুদা খানম, নাঈমা সুলতানা, রূপালী খানম, সুমাইয়া, শান্তা, সাদিয়া, মাসুরা, জাকিয়া, কুলসম, লাবনীসহ একাধিক নিবাসী বলেন, আমরা বিভিন্ন এলাকার বোনেরা সবাই একসাথে এতিমখানায় বাস করি। আমাদের কারও মা আবার কারও বাবা নেই। বাড়িতে আর্থিক অবস্থাও ভালো না। আমাদেরকে এই শীতে খেজুর রসের পিঠা খাওয়ানোতে খুব খুশি হয়েছি।

অন্যান্য সময়ে বিভিন্ন ফল খাওয়ানো হয়। কিছুদিন আগে আমাদের চিতই পিঠা খাওয়ানো হয়েছিল। আমরা নিজেরা আতপ চাল থেকে গুড়া তৈরি করেছি। খেজুর রস জ্বালিয়ে গাঢ় করে তার মধ্যে পিঠা ভিজিয়ে ভিজা পিঠা তৈরি করেছি। আমরা এক লাইনে বসে এক সাথে খেয়েছি। মাঝে মধ্যে অনেক স্যাররা এসে আমাদের মিষ্টি খাওয়ান। আবার ভাত-মাংস খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেন। আমরা সবাই মিলে-মিশে থাকার কারণে মা বাবার কষ্ট ভুলে থাকতে পারি। আমাদের এখানের স্যাররাও আমাদের খুব ভালোবাসেন।

এতিমখানার তত্ত্বাবধায়ক মো. আব্দুল কাদের বলেন, নড়াইলসহ দেশের বিভিন্ন জেলার শিশুরা এই এতিম খানায় বসবাস করে। এখানে দুই শতাধিক মেয়ে রয়েছে। আমরা ১৪০ জন এতিম শিশুর জন্য সরকারি অনুদান পেয়ে থাকি। এখানে বসবাসরত শিশুরা আমাদের সন্তান। এদের কারও মা নেই। আবার কারও বাবা নেই। অনেকের বাবা মা কেউ নেই। বাড়ির আর্থিক অবস্থাও ভালো না। তাই তাদের চাহিদা আমরা পূরণ করার চেষ্টা করি। ওরা যাতে কষ্ট না পায় সেজন্যই খেজুর রসের ভিজা পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। কয়েকদিন আগে চিতই পিঠার উৎসব করা হয়। এতে আমার খুব ভালো লাগে। এছাড়া মৌসুম অনুযায়ী ফল খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হয়। এসব নিবাসীরা বয়স ভেদে প্রাথমিক বিদ্যালয়, স্কুল, মাদরাসা ও কলেজে অধ্যয়ন করে।

এতিমখানার প্রতিষ্ঠাতা চন্ডিবরপুর ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে খরচ বহন করা অনেকটা কঠিন হয়ে পড়েছে। বাকি সব এতিমদের ভরণপোষণ বিত্তবানদের সহযোগিতায় চলে। এতিম শিশুদের লালন-পালন ও জীবনমান উন্নয়নে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন।
জিএম/পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
নানা আয়োজনে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে পিঠা উৎসব 
হিলিতে হয়ে গেল দুই দিনব্যাপী গ্রামীণ পিঠা উৎসব
শিক্ষার্থীদেরকে পরিচিত করার লক্ষ্যে সেনবাগে পিঠা উৎসব
চাঁদপুরে ৩ দিনব্যাপী জাতীয় পিঠা উৎসব
X
Fresh