মোংলা বন্দরে পড়ে আছে আমদানি করা অসংখ্য গাড়ি (ভিডিও)
মোংলা বন্দরে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে আছে আমদানি করা অসংখ্য রিকন্ডিশন গাড়ি। ২০০৯ সালে বন্দর দিয়ে আমদানি শুরুর পর থেকে আনা গাড়িও আছে এই তালিকায়। বন্দর কর্তৃপক্ষ নিলাম প্রক্রিয়া শুরু করলেও তেমন সাড়া না থাকায় বাড়ছে এই সংখ্যা। এমন পরিস্থিতির জন্য আমদানিকারকদের মামলাকে দায়ী করছে কর্তৃপক্ষ।
প্রথম দেখায় আমদানি করা গাড়িগুলো দেখে যে কারও মনে হতে পারে কোনো পুরাতন গাড়ির গ্যারেজ অথবা ডাম্পিং প্লেস। অথচ এগুলো সবই বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা রিকন্ডিশন্ড গাড়ি। ১০ লাখ থেকে শুরু করে কোটি টাকা দামের গাড়িও পড়ে আছে মোংলা বন্দরের শেড ও ইয়ার্ডে। নোয়াহ, অ্যাকোয়া, ফিল্ডার, করোলা এক্সিও, এলিয়ন, প্রিমিও, নিশান পিকআপসহ দামি সব ব্র্যান্ড। কোনও কোনও গাড়ি আছে ৮-১০ বছর ধরে।
নিরাপত্তাকর্মীরা বলেন, এখানে কতদিন ধরে আছে তা আমি বলতে পারবো না। আমি আসার পর থেকে এখানে এসব গাড়ি দেখছি। স্যারদের এখানে সব তথ্য আছে।
২০০৯ সাল থেকে মোংলা বন্দর দিয়ে গাড়ি খালাসের সুযোগ দেয় সরকার। খরচও ধরা হয় এক-তৃতীয়াংশ। রাজধানীর সঙ্গে দূরত্ব কম হওয়ায় দেশে আমদানি করা গাড়ির প্রায় ৬০ ভাগ খালাস হয় মোংলা বন্দর দিয়ে। এ পর্যন্ত এই বন্দর দিয়ে মোট গাড়ি আমদানি হয়েছে প্রায় এক লাখ ৩০ হাজার। আর গাড়ি আছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ট্র্যাফিক পরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বর্তমানে বন্দরে ৩,৭৫০টি গাড়ি সংরক্ষণে আছে। যার মধ্যে ৯০০টি গাড়ি বন্দরে পড়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। এ গুলোর সমাধানের জন্য কাজ করছি।
বন্দর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আমদানিকরা বিভিন্ন অযুহাতে গাড়িগুলো খালাস করছেন না। কেউ কেউ বলছেন বন্দরের খরচ কম হওয়ায় জায়গার অভাবে অনেকে গাড়ি ফেলে রাখছেন। আবার মামলা কোরে নিলামও আটকে রাখছেন তারা। আবার কেউ কেউ শুল্ক ফাঁকি দিতে গাড়ি ফেলে রেখে নিলামের অপেক্ষায় থাকেন।
অভিযোগ কিছুটা স্বীকার করে আবার নিজেদের সাফাইও গাইলেন বারবিডা সভাপতি। বাংলাদেশ রিকন্ডিশন ভেহিক্যালস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল হক বলেন, অনেকে বলে বন্দরকে শো রুম হিসাবে ব্যবহার করা হয়। এটি কিন্তু জাপানেও হয়। আর প্রধান রাজস্ব আয় হচ্ছে গাড়ি থেকে।
বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, আমদানিকৃত গাড়ি ৩০ দিনের মধ্যে খালাস না করলে সেগুলোকে নিলামে তোলা হয়। কিন্তু মামলার কারণে যেমন নিলাম করা যায় না তেমনি সাড়াও মেলে না।
মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত বিষয়গুলো সমাধানের কথা জানালেন মোংলা বন্দরের চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, নিলাম পরিচালনা করে কাস্টমস সেটি কিভাবে কাজ করছে তা তারাই ভালো বলতে পারবে। তবে যে সকল গাড়ির কথা বলা হয়, সেগুলো খুব ভাঙা অবস্থায় থাকে। সেজন্য অনেকে নিতে আগ্রহী থাকে না।
জিএম/পি
মন্তব্য করুন