• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

মেয়েকে চাকরি দিতে রাত ১২টায় পরীক্ষা নিলেন অধ্যক্ষ বাবা!

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ২৭ ডিসেম্বর ২০২০, ১৬:২২
Symbolic image
প্রতীকী ছবি

অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম অবসরে যাবেন ৩১ ডিসেম্বর। এর আগে নিজ মেয়েকে সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে চাকরি দিতে মধ্যরাতে লিখিত পরীক্ষা নিলেন তিনি।

শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার রসুলপুর আলিম মাদ্রাসায় মধ্যরাতে লিখিত পরীক্ষার নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে।

এই পরীক্ষায় প্রক্সি হিসেবে রাখেন আরও তিনজনকে। টের পেয়ে এলাকার লোকজন ছুটে এসে দেখেন পরীক্ষা শেষ। এই অবস্থায় পরীক্ষা নিতে আসা ডিজির প্রতিনিধিকে আটকে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করেন স্থানীয়রা। কোনো সদুত্তর দিতে না পেরে কোনোক্রমে নিজের গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যান মাদ্রাসা বোর্ডের ডিজির প্রতিনিধি বাদশা মিয়া।

স্থানীয়রা জানায়, রসুলপুর আলিম মাদ্রাসায় সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে একজনকে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন জটিলতায় এত দিন ওই পদে নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। এদিকে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলামের চাকরির মেয়াদও শেষ হবে ৩১ ডিসেম্বর।

শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) এর মধ্যে অত্যন্ত গোপনে নিয়োগ পরীক্ষার দিন ধার্য করেন। বিষয়টি অনেকেরই জানা ছিল না। ওই একটি পদের জন্য অখ্যাত পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হওয়ায় তেমন প্রচারও হয়নি। তার মধ্যে নিয়ম অনুযায়ী চারজন প্রার্থীকে পরীক্ষায় নিয়ে প্রবেশপত্র দেওয়া হয়। ওই চারজনই হচ্ছেন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলামের তিন ছেলে ও এক মেয়ে। এর মধ্যে তার মেয়েকে চাকরি পাইয়ে দিতে বাকিরা ছিলেন প্রক্সি হিসেবে।

রাত ১১টার দিকে কেন্দ্রে প্রবেশ করেন প্রার্থীরা। সেখানে মাদ্রাসা পরিচালনা পরিষদের অনেক সদস্য ও বেশ কয়েকজন শিক্ষক ছিলেন। পরীক্ষা শুরু হওয়ার প্রায় ৩০ মিনিট পরে আসেন ডিজির প্রতিনিধি মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতরের পরিদর্শক বাদশা মিয়া। সাদা একটি প্রাইভেটকারে গভীর রাতে মাদ্রাসায় প্রবেশ করাতে অনেকের দৃষ্টিগোচর হয়।

পরে ঘটনাটি জানতে পেরে লোকজন ছুটে এলে তিনি কেটে পড়ার চেষ্টা করেন। স্থানীয়রা তাকে আটকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে রাত সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত পরীক্ষা নেওয়ার কথা স্বীকার করেন। একপর্যায়ে লোকজনের তোপের মুখে দ্রুত এলাকা ছাড়েন তিনি।

মাদ্রাসার অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম বলেন, নিয়োগ পরীক্ষায় আমার মেয়ে নির্বাচিত হয়েছে। পরীক্ষা বিকেল ৫টায় শুরু হয়েছে। ডিজির প্রতিনিধি ঢাকা থেকে রাতে এসেছেন। তাই খাবারের আয়োজন করা হয়েছে। এলাকার অনেকেই প্রার্থী ছিলেন। তাদের চাকরি না হওয়ায় অপপ্রচার চালাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে মাদ্রাসা পরিচালনা পরিষদের সভাপতি হাবিবুর রহমান জানান, এ বিষয়ে কিছুই জানি না। তাছাড়া এসব মাদ্রাসার সভাপতি শুধু অলঙ্কার।

মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সদস্য তারা মিয়া সাংবাদিকদের জানান, অধ্যক্ষের চাকরি শেষ হওয়ায় মেয়েকে চাকরি দিতেই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. এরশাদ উদ্দিন জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। কেউ কোনো অভিযোগ করেননি এবং এটি তাদের এখতিয়ারেও নেই।

এ বিষয়ে নান্দাইল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রোকন উদ্দিন আহমেদ জানান, আলিম পর্যায়ের মাদ্রাসার নিয়োগ কমিটিতে তার কোনো প্রতিনিধি থাকেন না। তাই তাদের জানার কথা না।

জিএম/জিএ

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh