অতৃপ্ত মহরম আলী, ভয়ে ঘর ছাড়লেন নববধূ ফরিদা
স্বামী-শাশুড়ি ও দেবরদের দাবিকৃত এক লাখ টাকা যৌতুক দিতে না পারায় বিয়ের তিন মাসের মাথায় বাবার বাড়িতে ফিরে আসতে হলো মোছাম্মৎ ফরিদা আক্তারকে।
অপর দিকে বিয়ের একমাসের মাথায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীর ওপর অমানুষিক নির্যাতন শুরু করে স্বামী মহরম আলী (২৮)। ঘটনাটি ঘটেছে সীতাকুণ্ড উপজেলার ১নং সৈয়দপুর ইউনিয়নে।
চট্টগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায়ের করা স্ত্রী মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৯নং ভাটিয়ারী ইউনিয়নের ৫নং নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদ জামাল আহম্মদের মেয়ে মোসাম্মৎ ফরিদা আক্তার এর সাথে দুই পরিবারের সম্মতিতে চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল বিয়ে হয় উপজেলার ১নং সৈয়দপুর ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ডের আনোয়ার হোসেনের ছেলে মো. আইয়ুব আলী (২৮) এর সাথে।
বিয়ের কিছুদিনের পর থেকেই যৌতুকের জন্য ফরিদা আক্তারের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। যৌতুক হিসেবে তারা এক লাখ টাকা দাবি করে। বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে স্বামী প্রায় মারধর করতে থাকেন।
ফরিদা আক্তার আরটিভি নিউজকে বলেন, আমার পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ। এত টাকা দেওয়া আমার বাবার পক্ষে কিছুতেই সম্ভব নয়। এ কথা বললে তারা আরও বেশী নির্যাতন করতে থাকে। গত ৮ই জুলাই রাতে স্বামী মারধর করার সময় মাটিতে ফেলে গলায় পা দিয়ে চেপে ধরে বলতে থাকে 'কাল সকালে একলাখ টাকা এনে দিবি, না হলে গলা চেপে মেরে ফেলবো আর আনতে না পারলে আমার ঘরে আসার দরকার নেই'।
আরও পড়ুন...
প্রেমিকাকে বাড়ির পেছনে নিয়ে গিয়ে দলবেঁধে ধর্ষণ
গৃহবধূকে দিয়ে দেহ ব্যবসা না করাতে পেরে গণধর্ষণ করালেন আরেক নারী
মেলামেশা শেষে তরুণীকে বিয়ে করতে অস্বীকার, তরুণ গ্রেপ্তার
প্রেমের ফাঁদে ফেলে বাসায় এনে চলতো নির্যাতন
এসময় প্রাণে বাঁচতে সকালে বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিবে বলে নির্যাতন থেকে রক্ষা পায়। আর ঐ রাতে সারারাত অভুক্ত অবস্থায় রুমে আটকিয়ে রাখে। পরদিন সকালে ফরিদাকে এক কাপড়ে ঘর থেকে বের করে দেয় স্বামী শাশুড়ি ও দুই দেবর।
এ ঘটনার পর ফরিদা আক্তার বাদী হয়ে চট্টগ্রাম চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (সি.আর. মামলা নং-১৭৬) মামলা দায়ের করলে স্বামী মহরম আলী আগাম জামিন নেয়।
এরপর থেকে সে মামলা তুলে নিতে মোবাইল ফোনে হুমকি দিতে থাকে। এ বিষয়ে ফরিদা আক্তারের মা শাহানারা বেগম বলেন, আমার মেয়ের স্বামী অন্ধ। আমার কোন ছেলে নেই। তিনটি মেয়ে নিয়ে অনেক কষ্টে দিন যাপন করছি। মেঝো মেয়ে ঝিয়ের কাজ করে। আমিও ভাটিয়ারীতে একটি লোহার স্ক্র্যাপের দোকানে দৈনিক শ্রমিক হিসেবে কাজ করি। যেদিন কাজ হয় না সেদিন ঘরে রান্নাও হয়না। সপ্তাহে দুই এক দিন না খেয়ে কাটাতে হয়। এমন দুরবস্থার আমি কিভাবে একলাখ টাকা দেবো মেয়ের জামাইকে। শ্বশুর বাড়ির লোকজন আমার মেয়েকে এক কাপড়ে বাড়ী থেকে বের করে দিয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে ফরিদার স্বামী মহরম আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেন।
জিএম/জিএ
মন্তব্য করুন