• ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
logo

বিচারকের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে এজলাস ত্যাগ করল আবরার হত্যা মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবীরা 

আরটিভি নিউজ

  ০৩ ডিসেম্বর ২০২০, ১৭:২১
BUET's Abrar's murder: Defendant's lawyers leave the court expressing distrust in the judge
আবরার ফাহাদ রাব্বী ।। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ রাব্বী হত্যা মামলায় ২২ আসামির আইনজীবীরা আদালতে বিচারকের প্রতি অনাস্থা দিয়েছেন। ওই সময়ে ‘অনাস্থা’ জানিয়ে সাক্ষীকে জেরা না করে এজলাস ত্যাগ করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। আজ বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানকে একটি দরখাস্ত দিয়ে কারাগারে আটক ২২ আসামির আইনজীবীরা বলেছেন, এ আদালতে ‘ন্যায়বিচার না পাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হওয়ায়’ তারা অন্য কোনো আদালতে মামলা স্থানান্তরের জন্য হাইকোর্টে আবেদন করবেন।

এমন অবস্থায় মামলার কার্যক্রম ২ সপ্তাহ মুলতবি রেখে সময় দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে আসামিপক্ষের আইনজীবীদের দরখাস্তে।

আসামিপক্ষের অন্যতম আইনজীবী আমিনুল গণী টিটো বলেন, সিআইডির বিশেষজ্ঞ রবিউল আলম এ মামলার ৩৩ নম্বর সাক্ষী হিসেবে ইতোপূর্বে সাক্ষ্য দিয়েছেন এবং তার জেরা সম্পন্ন হয়েছে।

আসামিপক্ষকে না জানিয়ে অনিয়মের মাধ্যমে আবারো আজ তাকে এনে সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। মামলায় নিরপেক্ষ বিচার নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় আমরা বিচারকের প্রতি অনাস্থা দিয়েছি।
বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান আইনজীবীদের বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ ফৌজদারী কার্যবিধির ৫৪০ ধারায় এর আগের সাক্ষীকে রিকল করেছে।

আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তখন বলেন, রিকলের আবেদনের ওপর দুই পক্ষকে শুনানি সুযোগ দিতে হয়, যা এক্ষেত্রে দেওয়া হয়নি।

এরপর আইনজীবীরা ওই সাক্ষীকে জেরা না করেই বিচারকের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে এজলাস ত্যাগ করেন।

তাদের আবেদনে বলা হয়, এর আগে রাষ্ট্রপক্ষের ৩১ নম্বর সাক্ষী ডা. সোহেল মাহমুদ সাক্ষ্য দেওয়ার সময় যে জবানবন্দি দিয়েছেন, তা কম্পিইটারে কম্পোজ করা ছিল। তার জবানবন্দি আগেই নথিতে জবানবন্দি হিসাবে সন্নিবেশিত হয়েছে। তাছাড়া আসামিপক্ষের বিভিন্ন সাক্ষীকে জেরার বিষয় হুবুহু রেকর্ড করা হয়নি, যা আইনসম্মত নয়।

পরে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবু আবদুল্লাহ ভূঞা বলেন, মামলার শেষ পর্যায়ে এসে আসামিপক্ষ বিচার বিলম্বিত করার জন্য এসব করছেন।

এর আগে গত ৩০ নভেম্বর আদালতে সাক্ষ্য দেন রাষ্ট্রপক্ষের ৩৯তম সাক্ষী সিআইডির উপপরিদর্শক জাকির হাসান ইমন। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা সেদিন তাকে জেরাও করেন।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী বুয়েটের শেরেবাংলা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আবরা ফাহাদকে ‘শিবিরকর্মী’ আখ্যা দিয়ে একটি কক্ষে ডেকে নিয়ে বেদম মারধর করে। এতে তার মৃত্যু হয়। পরদিন আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ কুষ্টিয়া থেকে এসে ১৯ জনকে আসামি করে রাজধানীর চকবাজার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার ১ মাসেরও বেশি সময় পর ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দেন গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান।

এরপর চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি সংশ্লিষ্ট মামলার বিচারকাজ দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর জন্য ঢাকার মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটরের (পিপি) কার্যালয়ে আবেদন করেন নিহত আবরার ফাহাদের বাবা মো. বরকত উল্লাহ। ১২ মার্চ আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক আবরার হত্যা মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর ফাইল অনুমোদন করেন। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় মামলার বিচারকাজ বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকে।

গত ১৫ সেপ্টেম্বর এ মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন আদালত এবং বিরতিহীন সাক্ষ্যগ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়। এর অংশ হিসেবে গত ২০ সেপ্টেম্বর এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু বাদী আবরারের বাবা মো. বরকত উল্লাহ জন্ডিসে আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থ থাকায় ওই সময় সাক্ষ্য দিতে পারবেন না বলে সময়ের আবেদন করেন। পরে বিচারক সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ৫ অক্টোবর দিন রাখেন। এদিন থেকেই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। আসামিদের মধ্যে এজাহারভুক্ত ১৯ জনের মধ্যে ১৭ জন এবং এজাহারবহির্ভূত ৬ জনের মধ্যে ৫ জন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে বন্দি রয়েছেন। তবে ৩ জন আসামি পলাতক রয়েছেন।

কেএফ

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh