• ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

ফলোআপ

তবে কি সৎ মাকে একাই ‘হত্যা’ করেছিলো ছেলেটি? জানতে গ্রেপ্তার করা হলো ৭ জনকে

আরটিভি নিউজ

  ৩০ নভেম্বর ২০২০, ১৬:৫২
But did the boy ‘kill’ the honest mother alone? 7 people were arrested to find out
ফাইল ছবি

রাজধানীর কাফরুলে খুন হওয়া সীমা আক্তারের মরদেহের ময়না তদন্ত হয়েছে। আজ সোমবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে তার মরদেহের ময়না তদন্ত সম্পন্ন করা হয়। ময়না তদন্ত শেষে মরদেহটি সীমার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ মোকসেদপুর উপজেলার ডাংগা দূর্গাপুর গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই বিকেলে দাফন করা হয় সিমার মরদেহ।

স্বজনরা জানান, প্রথম স্বামী ওবায়দুর রহমানের সাথে সীমার ৮ থেকে ৯ বছর আগে তালাক হয়। সেই সংসারে সীমা আক্তারের হোসাইন আহমেদ (১৫) ও মাহিয়া (৭) নামের দুই সন্তান রয়েছে। মেয়ে সন্তানটি গ্রামে দাদা দাদীর কাছে ও ছেলেটি মিরপুরে থাকে। ঢাকাতে সিমা কয়েক বছর একটি হাসপাতালে ফার্মেসিতে কাজ করতো। গত ১০-১১ মাস আগেই সে শাহজাহান সিকদারকে বিয়ে করে। শাহজাহানেরও এটি দ্বিতীয় বিয়ে। বিয়ের পর থেকে স্বামী, শাহজাহানের আগের সংসারের ছেলে নাহিদ সিকদার ও তার স্ত্রী আইরিনকে নিয়ে মিরপুর ১৩ নম্বর সেকশনের ইমামনগর পূর্ব বাইশটেকি ৫৫/৬/সি নম্বর ৭তলা বাসায় থাকতো।

বাবা আইয়ুব আলী সরদার জানান, নাহিদের সাথে তার সৎ মা সীমার সাথে সম্পর্ক বেশ ভালোই ছিলো। তবে কিছুদিন আগে নাহিদ শ্বশুড় বাড়ি থেকে আসার পর থেকে পরিবারে ঝামেলা শুরু করে। তার বাবা মায়ের সাথে সে আর একসাথ থাকবেনা, সে স্ত্রী নিয়ে আলাদা থাকবে। ওই রাতে সীমার সৎ ছেলে নাহিদের সাথে পারিবারিক ঝামেলা নিয়ে নাহিদের শ্বশুড় শাশুরি ও স্ত্রী, নাহিদের বাবা ও মা সীমা সহ সবাই বসে একটি মিমাংশার বৈঠক করছিলো। ঘটনার আগের রাতে সিমা তাকে ফোনে এসব কথা জানায়।

তিনি জানান, নাহিদ স্ত্রী নিয়ে আলাদা থাকবে। তবে তাকে মাসে ৫০ হাজার টাকা হাত খরচ দিতে হবে বলে দাবি করে। পারিবারিক মিমাংশা সভায় সেদিন তার বাবা তাকে আলাদা হয়ে যেতে মানা করে, একসাথে থেকেও তাকে মাসে ২০ হাজার টাকা হাত খরচ দিতে রাজি হয়। তবুও ছেলে নাহিদ তা মানছিলো না। তার তার বাবার ২টি ফ্ল্যাট, কার্টুনের ব্যবসা আরো টাকা পয়সা ছিলো। নাহিদ ভাবতো সে (বাবা) হয়তো ২য় স্ত্রী সিমাকে (সৎ মা) সেগুলো সব লিখে দিবে। এসব বিষয় নিয়ে মা সিমার সাথেও খারাপ ব্যবহার করছিলো সে।

স্বজনদের দাবি পরিকল্পনা ভাবেই তারা সিমাকে ছুরিকাঘাত করে ও পুড়িয়ে খুন করে।

সিমার প্রথম সংসারের ছেলে হোসাইন আহমেদ বলেন, সে মিরপুর ১ নম্বর সেকশনে থাকে। একটি ওয়েশ ফ্যাক্টরীতে কাজ করে সে। মায়ের মৃত্যুর খবর সহ্য করতে পারবেনা বলে গতকাল রোববার দুপুরেই তাকে খবর দেওয়া হয় তার দাদা মারা গেছে। পরবর্তিতে মায়ের খুন হওয়ার খবর শুনতে পায় সে। তবে রোববার ঘটনাস্থলের ওই বাসায় গিয়েও মায়ের মরদেহ দেখতে পায়নি সে। আজ সোমবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে এসেও মায়ের মুখ দেখার জন্য অপেক্ষা করছিলো সে।

মায়ের সাথে ৩/৪দিন আগে ফোনে কথা হয়েছিলো তার। শীতের জামাকাপড়, টাকা পয়সা লাগবে কিনা, এসব বিষয়েই কিছুক্ষন কথা হয় মায়ের সাথে তার। এটিই তার মায়ের সাথে শেষ কথা ছিলো।

এ বিষয়ে ডিএমপি’র মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) আ স ম মাহতাব উদ্দিন জানান, নিহত সীমা আক্তারের স্বামী শাহজাহান ও সৎ ছেলেকে নিয়ে ওই ফ্ল্যাটে থাকতেন। এ ঘটনায় স্বামী ও সৎ ছেলেসহ ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একটি হত্যা মামলাও দায়ের করা হয়েছে। নিহত সীমার শরীরে পোড়া চিহ্ন ছাড়াও জখমের আলামত রয়েছে। তবে মৃত্যু কিভাবে হয়েছে তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে স্পষ্টভাবে বলা যাবে। এই ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতদের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছে।

কেএফ

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh