• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ঘুমন্ত মা-বাবার কোল থেকে শিশুকে অপহরণের পর হত্যা, ৩ জনের যাবজ্জীবন

বাগেরহাট প্রতিনিধি

  ২৯ নভেম্বর ২০২০, ১৪:১৭
ঘুমন্ত মা-বাবার কোল থেকে শিশুকে অপহরণের পর হত্যা, ৩ জনের যাবজ্জীবন
তিন জনের যাবজ্জীবন

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার বিশারীঘাটা গ্রামের ঘুমন্ত মা-বাবার কোল থেকে তিন মাসের শিশু আব্দুল্লাহকে অপহরণ করে মুক্তিপণ নিয়ে হত্যার ঘটনায় ৩ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

আজ রোববার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে বাগেরহাটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল- ২ এর বিচারক জেলা জজ মো. নূরে আলম জনাকীর্ণ আদালতে এই রায় ঘোষণা করেন। বিচারক প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন।

চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের রায় প্রদানকালে তিন আসামি হৃদয় ওরফে রাহাত হাওলাদার (২১), মহিউদ্দিন হাওলাদার (২২) মো. ফায়জুল ইসলাম (২৮) আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।

আসামিদের সবার বাগি বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার গুলিশাখালী গ্রামে।

মামলার নথি থেকে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১১ মার্চ রাত ৩টার দিকে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার বিশারীঘাটা গ্রামের রেশমা বেগম তার তিন মাসের শিশু আব্দুল্লাহকে বুকের দুধ খাইয়ে স্বামী দলিল লেখক মো. সিরাজুল ইসলাম সোহাগের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়েন। ঘুমন্ত মা-বাবার কোল থেকে রাত সাড়ে ৩টার দিকে দুর্বৃত্তরা অপহরণ করে নিয়ে যায়। ঘুম থেকে জেগে তারা দেখতে পান বিছানায় শিশু আব্দুল্লাহ নেই। ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও নেই। জানালার গ্রিল ও দরজা খোলা রয়েছে। ঘরের অন্যান্য রুমের সকল দরজা বাইরে থেকে আটকিয়ে রেখেছে দুর্বৃত্তরা। দুধের শিশুটিকে কিভাবে অপহরণকারীরা নিয়ে গেছে কেউ বুঝতে না পেরে পুলিশকে খবর দেয়। ওই দিনই অপহৃত শিশুটির বাবা বাদী হয়ে মোরেলগঞ্জ থানায় অজ্ঞাত অপহরণকারীদের নামে মামলা করে। পরে শিশুটির মুক্তির জন্য মোবাইল ফোনে পরিবারের কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে দুর্বৃত্তরা। ‘মুক্তিপণ’ দাবিতে করা মোবাইল ফোনটির সূত্র ধরে শিশুটিকে উদ্ধারে পুলিশ অভিযান শুরু করে।

এই সময়ের মধ্যে শিশুটিকে ফিরে পেতে বাবা মো. সিরাজুল ইসলাম সোহাগ অপহরণকারীদের চাহিদা মতো ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণও পরিশোধ করে। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে প্রধান আসামি মো. হৃদয় ওরফে রাহাত হাওলাদারসহ অন্য আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। ঘটনার ৭ দিন পর প্রধান আসামী মো. হৃদয়ের দেখানো মতে মোরেলগঞ্জ উপজেলার বিশারীঘাটা গ্রামের কাচারিবাড়ি এলাকার একটি মৎস্য খামারের টয়লেটের সেফটি ট্যাংকের ভেতর থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোরেলগঞ্জ থানার এসআই মো. আব্দুল মতিন দীর্ঘ তদন্ত শেষে গত বছরের ৫ অক্টোবর আদালতে প্রধান আসামী মো. হৃদয়সহ তিনজনকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল করেন। আদালত ২৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ৩ ঘাতককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এই রায় প্রদান করেন।

মামলার বাদী শিশুটির বাবা দলিল লেখক মো. সিরাজুল ইসলাম সোহাগ বলেন, আর কোনও মা-বাবার যেন এমন পরিণতি ভোগ করতে না হয়।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের কৌশলী এপিপি রণজিৎ কুমার মণ্ডল রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার
মিথ্যা পরিচয়ে বিয়ে, স্বামীসহ ৪ জনের যাবজ্জীবন
নওগাঁয় হত্যা মামলায় একজনের যাবজ্জীবন 
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র আব্দুর রহিম হত্যা মামলায় ৭ জনের যাবজ্জীবন
X
Fresh