ভৈরবে পৌর মেয়র ও কাউন্সিলরসহ ১১জনের বিরুদ্ধে মামলা
কিশোরগঞ্জর ভৈরবে পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট ফখরুল আলম আক্কাছ এবং তিন পৌর কাউন্সিলরসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে দুই কোটি টাকার মানহানি মামলা হয়েছে।
মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জ আমলী আদালত-২ এ তাবারুক হোসেন নামে এক ব্যক্তি মানহানি মামলা করেছেন।
তিনি শম্ভূপুর গ্রামের বাসিন্দা ও তার বাবার নাম শব্দর আলী। মামলায় ১১ জনের মধ্যে তিনজন পৌর কাউন্সিলর ছাড়াও একজন পুলিশ সদস্য এবং কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মির্জা সুলায়মানকে আসামি করা হয়েছে।
আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলো, পৌর প্যানেল মেয়র মো. আল আমিন, পৌর কাউন্সিলর মো. দ্বীন ইসলাম, কাউন্সিলর হাবিবুল্লাহ নিয়াজ, পুলিশের এসআই মাজহারুল ইসলাম, পৌরসভার প্রধান সহকারী ইমাম হোসেন, জিল্লুর রহমান, বাদল মিয়া, লিয়াকত আলী ও আব্দুল হেকিম।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, একটি ওয়ারিশান সার্টিফিকেট জালিয়াতির ঘটনায় গেলো ২০১৭ সালের ২০ সেপ্টেম্বর মামলার বাদী তাবারুক হোসেনকে আসামিরা তার বাড়ি থেকে পৌরসভায় ডেকে এনে তাকে পুলিশে সোপর্দ করে। পরে পৌরসভার প্রধান সহকারী ইমাম হোসেন তার বিরুদ্ধে ওয়ারিশান সার্টিফিকেট মেয়রের সাক্ষর জাল করার দায়ে মামলা দিলে তাকে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
দুই মাস ১৭ দিন জেল খেটে উচ্চ আদালত (হাইকোর্ট) থেকে জামিন পেয়ে জেল থেকে মুক্তি পায়। এছাড়াও পরে মামলার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি তাবারুক হোসেনকে মুক্তি দিয়ে আদালত মামলাটি খারিজ করে দেন। প্রাণঘাতি করোনার কারণে বিলম্ব হলেও বাদী তাবারুক হোসেন গতকাল বৃহস্পতিবার কিশোরগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-২ এ এই মানহানী মামলা করেন।
বাদীর তাবারুক হোসেনের অভিযোগ, পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট ফখরুল আলম আক্কাছসহ অন্যান্য আসামিদের সহযোগিতায় তাকে বাড়ি থেকে ডেকে এনে পুলিশে সোপর্দ করে। পরে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে জেলে পাঠানো হয়েছে। এতে সমাজে তার মানসন্মান ক্ষুণ্ণ হয়েছে।
তাবারুক হোসেন আরও জানান, আমি ওয়ারিশান সার্টিফিকেটে মেয়রের সাক্ষর জাল করিনি। আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার ফারুক মিয়া তহবিলের টাকা আত্মসাৎ করলে আমি আদালতে মামলা করি। এই মামলায় তার এক বছরের জেল হয়। আসামি ফারুক জালিয়াতি করে পৌরসভায় একটি জাল ওয়ারিশান সার্টিফিকেট দিয়ে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে যা আদালতে প্রমাণ হয়েছে। পৌর মেয়রের কারণে আমি জেল খাটতে হয়েছে। আমার মানসন্মান গেছে। তাই, আমি ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মানহানী মামলা করেছি।
এ ব্যপারে পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট ফখরুল আলম আক্কাছ সাংবাদিকদের জানান, বাদী তাবারুক হোসেন একজন প্রতারক। তার বিরুদ্ধে করা মামলাটি তদবিরের অভাবে আদালত খারিজ করে দিয়েছে। মেয়র হিসেবে আমি ব্যস্ত থাকি। যারা মামলা তদারকির দায়িত্বে ছিল, তারা গাফিলতি করেছে।
এ প্রসঙ্গে কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মির্জা সুলায়মান জানান, এই ঘটনার সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নাই। ওইদিন আমি অন্য একটা কাজে পৌরসভায় মেয়রের অফিস কক্ষে উপস্থিত ছিলাম। এটাই আমার অপরাধ।
জেবি
মন্তব্য করুন