হাতিয়ায় ডায়রিয়ায় ৪৮ ঘণ্টায় ৩৭ শিশু হাসপাতালে
হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা ৫০। রোগী ভর্তি ৮৫। সবগুলো আসন পরিপূর্ণ হওয়ায় অনেক রোগীর ঠাঁই হয়েছে বারান্দার মেঝেতে। এর মধ্যে ঠান্ডাজনিত কারণে গত ৪৮ ঘণ্টায় নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ৩৭ জন। তারা সবাই শিশু। একসঙ্গে অনেক রোগীকে সামাল দিতে গিয়ে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। নোয়াখালী দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত চিত্র এটি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, কর্তব্যরত ডাক্তার ও ভর্তি হওয়া রোগীর সাথে আলাপ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের দ্বিতীয়তলার ওয়ার্ডে প্রবেশপথের বারান্দার মেঝেতে শিশু রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ডের পুরোটাই রোগী পরিপূর্ণ। ভর্তি হওয়া বেশিরভাগ রোগীই শিশু। যাদের ভর্তি করা হয়েছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, পেটব্যাথা, জ্বর ও সর্দি কাশিসহ বিভিন্ন সমস্যায়।
করোনার ঝুঁকি থাকলেও হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগী কিংবা তাঁদের সঙ্গে থাকা স্বজনদের বেশির ভাগেরই মুখে মাস্ক নেই। এতে রোগী ও স্বজনদের মাঝে করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। যদিও হাসপাতালের প্রবেশ মুখে এবং ভেতরে বিভিন্ন দেয়ালে ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ লেখা রয়েছে।
পুরুষ ওয়ার্ডের সামনের বারান্দায় চিকিৎসাধীন দেড় বছরে শিশু নিশাত হাবিবার মা তানজিনা আক্তার (২২) জানান, তার মেয়ের চারদিন ধরে ডায়রিয়া। অবস্থা খারাপ দেখে মঙ্গলবার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন। ভর্তির পর কিছু ওষুধ হাসপাতাল থেকে দেওয়া হয়েছে। কিছু তারা বাইরে থেকে কিনেছেন।
একই বারান্দায় পাশের সিটে ঠাঁই হয়েছে ১৮ মাস বয়সের ডায়রিয়া আক্রান্ত আরেক শিশু হামিদা আক্তারের। তার মা পারভিন আক্তার পাশে বসে মেয়ের সেবা করছেন। উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নের আমতলি থেকে আসা পারভিন বলেন, তিনদিন ধরে মেয়ের ডায়রিয়া। প্রথমে স্থানীয় এক পল্লীচিকিৎসকের কাছ থেকে ওষুধ নিয়ে খাইয়েছেন। তাতে কোনো কাজ না হওয়ায় গত সোমবার বিকেলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন। এখনও অবস্থার তেমন কোনো উন্নতি হয়নি।
কর্তব্যরত সেবিকা মোসাম্মৎ রেখা বেগম আরটিভি নিউজ বলেন, প্রায় প্রতি ঘণ্টায় নতুন নতুন ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশু হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। একসঙ্গে এত বেশি শিশু রোগীর চাপ হওয়ায় সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের।
তিনি আরও জানান, হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা ৫০টি। সেখানে রোগী ভর্তি আছেন ৮৫ জন। এর মধ্যে গত ৪৮ ঘণ্টায় (মঙ্গলবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত) ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ৩৭ জন শিশু। মাঝে মাঝে আরও বেশি রোগী ভর্তি করতে হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, শীতের প্রকোপ শুরু হওয়ায় শিশুদের ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিচ্ছে। হাসপাতালে যারা ভর্তি হচ্ছে তাদের যথাযথ চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। তবে পরিস্থিতি এখনও ততটা খারাপ নয়।
পি
মন্তব্য করুন