পাম্পে পানি তোলার জন্য আছে জেনারেটর, কিন্তু চলে না এক বছর
সিলেট সিটি করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডের মানুষের প্রতিদিনের পানির চাহিদা সাড়ে আট কোটি লিটার, যা মিটানোর জন্য নগরীতে চালু আছে ৪১টি পানির পাম্প। বিদ্যুতের সাহায্যে প্রতিটি পাম্প পরিচালিত হলেও বিদ্যুৎ না থাকলে মানুষের পানির ভোগান্তিতে যাতে না পড়তে হয়, এ জন্য বছর খানেক আগে জনগুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পাম্পে জেনারেটর চালু করে সিলেট সিটি করপোরেশন।
নগরীর শাহী ঈদগাহ এর পাম্পের পাশে জেনারেটর আর নগরীর বাগবাড়ি এলাকার বর্ণমালা স্কুলের পাশে পড়ে থকা দুটি লাখ টাকার জেনারেটর অযত্নে পড়ে আছে। জেনারেটর এর উপরে ময়লা ও কাঠ রাখা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, যে দিন থেকে জেনারেটরগুলো বসানো হয়েছিল সে দিনের পর থেকে কখনো জেনারেটর চালু হয়নি। এই জেনারেটর দিয়ে এত নিচ থেকে পানি তোলা সম্ভব নয়। কারণ জেনারেটরগুলো উন্নত মানের নয়।
নগরীর শাহী ঈদগাহর পাশে থাকা সিলেট সিটি করপোরেশনের পাম্প অপারেটর শামিম আহমদ আরটিভি নিউজকে জানান, প্রায় বছর খানেক আগে এই পাম্পের পেছনের রুমে বসানো হয় উন্নতমানের জেনারেটর। যার লক্ষ্য ছিল বিদ্যুৎ চলে গেলে জেনারেটর এর সাহায্যে পাম্প চালু করা। আজ পর্যন্ত কোনোদিন জেনারেটরটি চালু হয়নি। বিদ্যুৎ চলে গেলে পাম্প বন্ধ থাকে। জেনারেটরটি প্রায় বিকল হয়ে পড়ে আছে। অফিসকে এ বিষয়ে বার বার জানালেও কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
নগরীর বাগবাড়ি এলাকার বর্ণমালা স্কুলের পাশে সিটি করপোরেশনের পাম্পের দায়িত্বে থাকা অপারেটর গউছ মিয়া আরটিভি নিউজকে জানান, যে দিন জেনারেটরটি নিয়ে আসা হয়েছিল সেদিন পরীক্ষা করার জন্য একবার চালু করা হয়েছিল। এরপর আর কখনও চালু হয়নি। পড়ে আছে অযত্নে। বিদ্যুৎ চলে গেলে বন্ধ থাকে পাম্প। মানুষের ভোগান্তি চরমে ওঠে। বার বার দায়িত্বে থাকা প্রকৌশলীদের জানালেও তারা কোনো পদক্ষেপ নেন না।
এ দিকে সিলেট সিটি করপোরেশনের ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোখলেছুর রহমান কামরান আরটিভি নিউজকে জানান, সিলেট সিটির পানি বিভাগটি কলঙ্কযুক্ত। পানি বিভাগের কর্মকর্তাদের গাফিলতি আর দুর্নীতির কারণে নষ্ট হচ্ছে লাখ টাকা দিয়ে কেনা জেনারেটরগুলো। যার জন্য বিদ্যুৎ চলে গেলে মানুষকে পোহাতে হয় ভোগান্তি। আমাদেরকে জবাবদিহি করতে হয়। বার বার বলা সত্ত্বেও কোনো পদক্ষেপ নেন না। বিদ্যুৎ চলে গেলে মানুষের গালি শুনতে হয়।
৪১টি পাম্পের জন্য কয়টি জেনারেটর চালু আছে তার সংখ্যাও জানেন না সিটি করপোরেশনের পানি বিভাগের কোনো প্রকৌশলী। বার বার যোগাযোগ করা হলেও আরটিভির সাথে কথা বলতে নারাজ পানি বিভাগের প্রকৌশলীরা।
সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী আরটিভি নিউজকে জানান, বন্ধ জেনারেটর চালুর ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে যথাসময়ে জনগণকে পানির বিল দেওয়ারও পরামর্শ দেন মেয়র এবং কোনো পানির লাইনের বিলের তদবির নিয়ে না আশার জন্য সিটি কাউন্সিলরদেরও অনুরোধ করেন।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে সিলেট কুমারগাঁও এলাকায় বিদ্যুৎ গ্রিডে আগুন লাগার ফলে প্রায় ৭২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকায় জেনারেটর চালু না থাকায় পানির ভোগান্তিতে পড়তে হয় সিলেট শহরবাসীকে।
পি
মন্তব্য করুন