কাঠগড়ায় পুলিশের ঘাড় চেপে ধরাসহ আদালতে যেসব কাণ্ড করলেন মজনু
রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক ছাত্রীকে ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন রায় দিয়েছেন আদালত। মাত্র ১৩ কার্যদিবস শুনানি শেষে এই রায় দেয়া হলো।
বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক বেগম মোসাম্মৎ কামরুন্নাহার আজ বেলা ৩টার দিকে এ রায় দেন।
এর আগে আাসামি মজনুকে বেলা দুইটার দিকে কারাগার থেকে আদালতে নিয়ে আসার পর উপস্থিত সবাইকে তিনি ছেড়ে দেওয়ার আর্জি জানাতে থাকনে।
পরে আদালত কক্ষে নেওয়ার পর চিৎকার করে তিনি বলতে থাকেন, ‘আমি পাগল মজনু। আইজকা ছাইড়া দ্যান। আমারে মারছে। কাশিমপুরে মশা। আমারে কোনও কিছু খাতি দ্যায় নাই।
একপর্যায়ে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে হাজত পুলিশের এক সদস্যের ঘাড় চেপে ধরেন আসামি মজনু। এরপর কাঁদতে কাঁদতে কোর্ট হাজতের ওসির কাছে অভিযোগ জানাতে থাকেন এবং পুলিশ সদস্যদের গালাগাল শুরু করেন।
তার চিৎকার চেঁচামেচিতে বাধ্য হয়ে একপর্যায়ে বিচারক সাংবাদিক ও উৎসুক আইনজীবীদের বাইরে বারান্দায় যেতে বলে শুধু জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের একজনকে এজলাসে থাকার অনুমতি দেন।
এদিকে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আফরোজা ফারহানা আহম্মেদ অরেঞ্জ জানান, মামলার একমাত্র আসামি মজনুর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণ করা গেছে। এছাড়া তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন। মজনুর সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হওয়াতে আমরা খুশি।
এদিকে মজনুর আইনজীবী রবিউল ইসলামের দাবি, মজনুর বিরুদ্ধে ধর্ষণের যে অভিযোগে রায়টি হয়েছে তা নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না। তবে আমরা আপিল বিভাগে যাবো।
ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক বেগম মোসাম্মৎ কামরুন্নাহার গেল ১২ নভেম্বর উভয়পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ১৯ নভেম্বর দিন ধার্য করেছিলেন।
উল্লেখ্য, ৫ জানুয়ারি বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে চড়ে সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানীর কুর্মিটোলা বাসস্ট্যান্ডে নামেন ওই ঢাবি ছাত্রী। পরে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি তাকে সড়কের পেছনে নির্জন স্থানে নিয়ে ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতন করে।
এ ঘটনায় থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগীর বাবা। এছাড়াও বিচার দাবিতে রাজপথে নামেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
৭২ ঘণ্টার মধ্যেই ভুক্তভোগীর মোবাইল বিক্রির সূত্র ধরে মজনুকে গ্রেপ্তার করেন র্যাব।
জেবি
মন্তব্য করুন