• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

কিশোরী ময়নাকে ১২ বছর পর দুই সন্তানসহ পাওয়া গেলো

শরীয়তপুর প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ২২ অক্টোবর ২০২০, ০৯:৪০
Adolescent autopsy, was found 12 years, rtv news
ময়না ও তার দুই সন্তান

ময়না বেগম (২৫) বাড়ি শরীয়তপুর ভেদরগঞ্জ উপজেলার নাজিমপুর গ্রামে। তার বাবার নাম ইউনুস ব্যাপারী। ইউনুস শ্রমজীবী মানুষ। সংসারে অভাব-অনটন থাকায় একমাত্র মেয়ে ময়নাকে বাসার বুয়ার কাজে গত ২০০৬ সালে নড়িয়া উপজেলার দীগম্বরপট্রি গ্রামের মোসলেম উদ্দিন হাওলাদার, তার স্ত্রী শিরিয়া বেগম, মেয়ে মুনমুন আক্তার, মামা শ্যালক দুলাল খানের হাতে তুলে দেন। মোসলেম উদ্দিন তখন পরিবার নিয়ে ঢাকার সাভারে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। সেই বাসায় ময়না দুই মাস ভালোই ছিলেন। এরপর মোসলেম উদ্দিনসহ তার পরিবার ময়নার ওপর শুরু করে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন।

সেই ঘটনাসহ তার জীবনের কথাগুলো বলেন ময়না বেগম। তিনি বলেন, আমার বয়স যখন ১১ বছর, তখন আমাদের সংসারে অনেক অভাব। তাই বাবা-মা ঢাকার সাভারে মোসলেম উদ্দিনের বাসায় এক হাজার টাকা বেতনে কাজে দেন। দুই মাস ভালোই ছিলাম। এরপর মোসলেম উদ্দিন, তার স্ত্রী শিরিয়া, মেয়ে মুনমুন ও শ্যালক দুলাল সামান্য বিষয় নিয়ে আমাকে মারধর করতো। ওই বাসায় যাওয়ার চার মাস পর মোবাইলে মা-বাবার সঙ্গে একবার কথা বলতে দেয় তারা। আর যোগাযোগ করতে দেননি তারা।

একদিন ওই বাসার একটি মেয়েকে স্কুলে নিয়ে যাই। স্কুল ছুটি হলে মেয়েটি আমাকে রেখে বাসায় চলে যায়। সন্ধ্যা হয়ে গেলে বাসায় ফিরলে মোসলেম উদ্দিন, শিরিয়া, মুনমুন ও দুলাল লাঠি দিয়ে ইচ্ছে মতো মারে আমাকে। যন্ত্রণা সয্য করতে না পেরে পরের দিন ২০০৮ সালের ২১ ডিসেম্বর ওই বাসার থেকে পালিয়ে যাই। কিন্তু আমি আমার বাড়ির ঠিকানা বলতে পারতাম না। সাভারে একটি স্ট্যান্ড থেকে বাসে ওঠি। কয়েকটি বাস ঘুরে রাজবাড়ি জেলায় পৌঁছাই। সেখানে অপরিচিত যায়গা, স্ট্যান্ডে বসে কাঁদতে ছিলাম । হঠাৎ এক বৃদ্ধ আমাকে উদ্ধার করে তার বাসায় নিয়ে যায়। আমি তাকে বাবা ডাকতাম। সেই বাসায় কাজ করতাম।

তিন বছর পর রাজবাড়ির সেনগ্রামের মাসুদুর রহমানের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। আমার এক ছেলে মনির হোসেন মুন্না (৮) ও এক মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (৫)। তিনি বলেন, গতকাল মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) রাজবাড়ি থেকে শরীয়তপুরের নড়িয়া বেড়াতে আসি। পরে রাতে নড়িয়া থানার পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে।

মামলা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০০৮ সালের ২১ ডিসেম্বর ময়না নিখোঁজ হওয়ার পর পরিবার তাকে বিভিন্ন যায়গায় খোঁজ করে। না পেয়ে ২০১১ সালে ২৮ ফেব্রুয়ারি ময়নার বাবা ইউনুস ব্যাপারী বাদী হয়ে শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মোসলেম উদ্দিন, শিরিয়া, মুনমুন আক্তার ও দুলাল খানের বিরুদ্ধে অপহরণ করে পাচার করেছে এমন একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামিরা জেল খেটে জামিনে আছেন।

আরও পড়ুনঃ

পঞ্চগড় একই ব্যক্তির দুটি জন্ম সনদ

স্বর্ণবারের সঙ্গে স্বর্ণালঙ্কার আমদানির অনুমতি পেল ডিলাররা

নড়িয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান বলেন, পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ২০ অক্টোবর (মঙ্গলবার) রাতে নড়িয়া বিঝারী গ্রামের কাঞ্চন পাড়া থেকে ১২ বছর পূর্বে সাভার থেকে অপহৃত ময়নাকে উদ্ধার করি। স্বেচ্ছায় পালিয়ে যাওয়া মেয়ে ময়নাকে তার দুই শিশু সন্তানসহ উদ্ধার করা হয়। গতকাল বুধবার দুপুরে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় কয়েকজন নিরপরাধ মানুষ ১০ বছর যাবত মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার হচ্ছে।

জেবি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
দক্ষিণ কোরিয়া চলচ্চিত্র উৎসবে জাজের ‘ময়না’
ধানখেতে পড়ে ছিল যুবকের মরদেহ
নওগাঁয় হত্যা মামলায় একজনের যাবজ্জীবন 
নরসিংদীতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় কিশোর নিহত
X
Fresh