ভাঙ্গায় নারী উন্নয়ন সমিতির নামে বরাদ্দকৃত জমি দখলের পাঁয়তারা
ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার কালামৃধা ইউনিয়নের কালামৃধা বাজারে দক্ষিণ কালামৃধা মহিলা উন্নয়ন সমিতির নামে লিজ নেয়া ২০ শতাংশ জমি জোরপূর্বক দখল করে নেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল। এমন অভিযোগ ওই সমিতির নারী সদস্যদের। এর প্রতিবাদে গতকাল শুক্রবার কালামৃধা বাজারে ওই জায়গার সামনে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছে সমিতির কয়েকশ নারী।
তারা জানায়, ২০০২ সালে ১৫০ জন নারী নিয়ে দক্ষিণ কালামৃধা মহিলা উন্নয়ন সমিতি গঠিত হয়। পরে ২০০৩ সাল থেকে বাজারের ১৩৪ নং মৌজার, ৩৪৪ খতিয়ানের ৫৬১ দাগের ২০ শতাংশ খাস জমি নারীদের কর্মসংস্থান ও আর্থিক স্বচ্ছলতার জন্য লিজ দেয় সরকার।
তাদের অভিযোগ, স্থানীয় ভূমি অফিসের যোগসাজশে সমিতির নামে লিজকৃত সেই জায়গা দখলের চেষ্টা করছে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল। অসহায় নারীদের জীবনের কথা বিবেচনা করে লিজ নেয়া জমির দখল বুঝে পেতে প্রশাসন ও সরকারের কাছে দাবি জানায় তারা।
এসময় সমিতির সভানেত্রী সালমা আক্তার বলেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমির কার্যালয় থেকে আমরা শুনানির নোটিশ পাই। সেখানে আমরা হাজির হয়ে সকল কাগজপত্র দেখালেও দখলদারদের কেউই সেখানে হাজির হয়নি, এমন ৪দিন হয়েছে। এখন তারা আমাদের লিজকৃত জায়গায় দোকান তুলে, ভাড়া দিচ্ছে ও বিক্রি করছে।
সাধারণ সম্পাদক মমতা খাতুন বলেন, সমিতির নারী সদস্যদের অসহায় পেয়ে আমিনউদ্দিন হাওলাদারের ছেলে বদিউজ্জামান হাওলাদার, ইসমাইল মোড়লের ছেলে আমীর মোড়ল গংরা আমাদের সমিতির নামে লিজ নেয়া ২০ শতাংশ জমি দখল করে দোকান ঘর তুলেছে। সর্বশেষ ২০১৮ সালে বার্ষিক সরকারি কর জমা দিয়ে লিজের কাগজ আমাদের নামে পাই। কিন্তু ২০১৯ সালের লিজের টাকা জমা দিতে গেলে ভূমি অফিস থেকে নানা অজুহাত দেখিয়ে আমাদের টাকা জমা না নিয়ে সময় ক্ষেপণ করে আসছে।
অভিযোগের বিষয়ে দখলদারদের অন্যতম আমীর মোড়লের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি দাবি করেন, তার বোন সমিতির সাবেক সভানেত্রী জাহানারা বেগম তাকে এই জমি দিয়েছেন। সমিতির নামে লিজ নেয়া জমি, কেউ কাউকে দিতে পারে কিনা এমন প্রশ্ন করা হলে আমীর মোড়ল কোনো উত্তর দিতে পারেননি। এমনকি এই জমির কোনো কাগজপত্র তার কাছে আছে কিনা জানতে চাইলে কোনো কাগজপত্র নেই বলেও জানান তিনি।
এই বিষয়ে উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আল আমিন জানান, জমিটি লিজ দেয়া ছিল দক্ষিণ কালামৃধা মহিলা উন্নয়ন সমিতির নামে। এই সমিতির সাবেক সভানেত্রী জাহানারা বেগম এলাকার বিভিন্নজনকে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে ওই জমি দিয়েছেন, এমন কয়েকটি স্ট্যাম্প আমাদের কাছে আসছে। লিজকৃত জমি হস্তান্তর করার সুযোগ নেই। সেটি করে মহিলা উন্নয়ন সমিতি লিজের শর্ত ভঙ্গ করেছেন বিধায় তাদের লিজ নবায়ন করা হয়নি। এখন যারা দখলে আছে, দোকান নির্মাণ করেছে, তারাও লিজের আবেদন করেছে। আমি কয়েকবার তাদের ডেকেছি, বিষয়টি সমাধানের জন্য। কিন্তু সমাধান হয়নি। তাদের বলেছি, তারা যদি নিজেরা মীমাংসা করে আসে তাহলে যৌথভাবে লিজ দেয়া যেতে পারে। অন্যথায় যেহেতু সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, সেহেতু বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
জিএম/পি
মন্তব্য করুন