পাখির কলরবে মুখরিত পঞ্চগড়ের নাজিরপাড়া
পাখির কিচিরমিচির শব্দ ও কলকাকলিতে মুখর দেশের উত্তরের প্রান্তিক জেলা পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার নাজিরপাড়া। গ্রামটিতে নানা প্রজাতির পাখি প্রতি বছরই বংশ বিস্তারের জন্য অতিথি হয়ে আসে। কিছুদিন বসবাস করে বংশ বিস্তার করে আবার চলে যায়।
সোমবার (১২ অক্টোবর) সকালে সরেজমিনে গিয়ে জেলার বোদা পৌরসভাস্থ নাজিরপাড়া গ্রামে পাখির মেলা দেখা যায়। পাখিদের আনাগোনায় তাদের প্রতি অফুরন্ত ভালোবাসা গ্রামবাসীর। মা ও বাচ্চা (ছানা) পাখির ডাক আর কিচিরমিচির কলরবে মুখরিত নাজিরপাড়া গ্রামটি। ইতোমধ্যে গ্রামটি পাখির গ্রাম নামেও পরিচিতি লাভ করেছে। গ্রামবাসীর অফুরন্ত ভালোবাসার টানে ছুটে আসে শামুকখোল, পানকৌড়ি, রাতচরা ও ঘুঘুসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেড় হাজার পাখি।
এদিকে অতিথি পাখিদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তায় নজর রাখছে ওই গ্রামের সাধারণ মানুষ। বাইরে থেকে এসে কোনো শিকারি যেন পাখি শিকার করতে না পারে, সে জন্য সবসময় নজদারিতে রয়েছে পাখিগুলো। তাছাড়া পাখি দেখতে নাজিরপাড়া গ্রামে ভিড় জমাচ্ছে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা সাধারণ মানুষ। অনেকে আবার পাখি দেখতে এসে মুঠোফোন কিংবা ক্যামেরায় ছবিও তুলছেন।।
আরও পড়ুনঃ
হাতে টাকা আসছে! যে পাঁচ লক্ষণ দেখে বুঝবেন
ওজন কমায় মেথি
খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি ও শরীর ভালো রাখে কারিপাতা
ত্বকের বার্ধক্য রোধ চান তো কলা খান
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বছরের জুলাই-আগস্ট মাসে এ গ্রামে এসে গাছের ডালে বাসা বাধে পাখিগুলো। আবার বংশবৃদ্ধি করে নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে চলে যায়। পাখিগুলো বাচ্চা ফুটানোর পর বাচ্চাদের খাদ্য সংগ্রহে বিস্তীর্ণ এলাকায় গিয়ে খাবার সংগ্রহ করে। খাবার নিয়ে ফিরে আসার পর মায়ের ঠোঁটের ভিতরে থাকা খাবার কাড়াকাড়ি করে মুখ থেকে বের করে খায় বাচ্চারা। খেলার ছলে লাফিয়ে ছুটাছুটি করে বাচ্চা পাখিরা। তাদের ভালোবাসার বন্ধন আর প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ এলাকাবাসী।
সদর উপজেলা থেকে পাখি দেখতে আসা মারুফ হোসেন নামে এক যুবক জানান, আমি পাখি দেখতে আসছি ও পাখির ছবি তুলছি। পাখিগুলো দেখে আমি মুগ্ধ।
একই কথা জানান পাখি দেখতে আসা নাজনিন আক্তার মৌ নামে এক দর্শনার্থী। তিনি বলেন, আমি আমার ভাইয়ের সাথে অতিথি পাখি দেখতে নাজিরপাড়ায় এসেছি। পাখির কিচিরমিচির শব্দ ও তাদের খেলার দৃশ্য দেখে আমার অনেক ভালো লেগেছে।
পাখি ও বন্যপ্রাণীর আলোকচিত্রশিল্পী ফিরোজ আল সাবা বলেন, এটি একটি বড় ধরনের পাখির কলোনি। এখানে যেসব পাখি আসে তাদের প্রজনন মৌসুম হলো জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর। এই সময় তারা উঁচু গাছের ডালে বাসা বাঁধে এবং বাচ্চা ফুটানোর পর আহারের খোঁজে বিস্তীর্ণ অঞ্চলে চলে যায়।
এ বিষয়ে বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোলেমান আলী জানান, নাজিরপাড়া এলাকায় আম গাছসহ বিভিন্ন গাছে প্রায় এক থেকে দেড় হাজার অতিথি পাখির আগমন ঘটেছে। এবার অতি বৃষ্টির কারণে পাখির অনেক বাচ্চা পড়ে গিয়ে আহত হয়। গ্রামবাসী তাদের সংরক্ষণ করে। কেউ যেন অবৈধভাবে পাখি শিকার করতে না পারে, সে ক্ষেত্রে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নজর রাখা হচ্ছে।
পি
মন্তব্য করুন