রাজশাহীতে স্ত্রীর মুখে অ্যাসিড নিক্ষেপের ঘটনায় স্বামী গ্রেপ্তার (ভিডিও)
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় অ্যাসিড নিক্ষেপ করে স্ত্রীর মুখ ঝলসে দেয়ার ঘটনায় স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাত তিনটার দিকে উপজেলার কুমরপুর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকেই র্যাব তাকে গ্রেপ্তার করে।
র্যাব-৫ এর রাজশাহীর মোল্লাপাড়া ক্যাম্পের একটি দল অভিযান চালিয়ে স্ত্রীর মুখে অ্যাসিড নিক্ষেপকারী মুরাদ হোসেনকে (৩০) গ্রেপ্তার করে। তার বাবার নাম রাফিকুল ইসলাম। মুরাদ পেশায় একজন ট্রাকের হেলপার।
এর আগে বৃহস্পতিবার দিনগত রাত তিনটার দিকে উপজেলার রাণীনগর গ্রামে মুরাদের শ্বশুরবাড়ির জানালা দিয়ে দাহ্য পদার্থ ছুঁড়ে তার স্ত্রী মাহবুবা খাতুনের (১৮) মুখ ঝলসে দেয়া হয়। মাহবুবা তার মা এবং ভাইয়ের সঙ্গে একই ঘরে ঘুমিয়েছিল। তার মা সেফালি বেগমের দাবি, দাহ্য পদার্থ ছুঁড়ে পালানোর সময় তিনি তার মেয়ে জামাই মুরাদকে জানালার পাশে দেখেছেন।
ঘটনার পর ভোরে মাহবুবাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। আর রাতে মুরাদকে একমাত্র আসামি করে গোদাগাড়ী থানায় মামলা করেন শেফালী বেগম। জেলা পুলিশের মুখপাত্র ইফতেখায়ের আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মামলার এজাহারে বলা হয়েছে মুরাদ অ্যাসিড নিক্ষেপ করে মাহবুবার মুখ ঝলসে দিয়েছেন।
র্যাব-৫ এর রাজশাহীর কোম্পানি অধিনায়ক এটিএম মাইনুল ইসলাম জানান, গণমাধ্যমে সংবাদ দেখেই তারা মুরাদকে আটকের জন্য তৎপর হয়ে ওঠেন। মুরাদ সারাদিন গা ঢাকা দিয়ে থাকলেও রাতে বাড়ি ফেরেন। এরপরই তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে গোদাগাড়ী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাইরুল ইসলাম জানান, ১৮ বছর বয়সী মাহবুবা বেগমের সঙ্গে বছর দেড়েক আগে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে পারিবারিক অমতে দুজনে পালিয়ে বিয়ে করেন।
মুরাদ হোসেনের পরিবার বিয়ে মেনে না নেয়ায় দুই পরিবারের দ্বন্দ্বের জেরে ও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কারণে পারিবারিক কলহ বিরাজ করতো এবং মাহাবুবাকে মুরাদ আলী শারীরিক নির্যাতন করতো। পরে বনিবনা না হওয়ায় মাহবুবা আর সংসার করতে চায়নি। তাই চার মাস ধরে বাবার বাড়িতেই থাকত। এ কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে মাহবুবার ওপর অ্যাসিড নিক্ষেপ করেন মুরাদ। গ্রেপ্তারকৃত মুরাদকে শনিবারই আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান ডা. আফরোজা নাজনীন আরটিভি নিউজকে বলেন, দাহ্য পদার্থে মাহবুবার মুখের বাম অংশ পুরোটা পুড়ে গেছে। এছাড়া গলা ও বাম হাতের কনুই পুড়েছে। তার চিকিৎসা চলছে। মাহবুবা এখন শঙ্কামুক্ত। তবে সুস্থ হয়ে উঠতে কিছুদিন সময় লাগবে।
জেবি
মন্তব্য করুন