• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

কোথাও আড়াই ফুট বা তিন ফুট গর্তে আটকে যাচ্ছে যানবাহন (ভিডিও)

  ০২ অক্টোবর ২০২০, ০৮:২৬
meherpur,
মেহেরপুর।

পিচঢালা সড়কের মাঝে মাঝে জলাবদ্ধতা। বর্ষায় পানি জমে আছে মনে করে যান চালাতে গেলেই বিপত্তি। কোথাও আড়াই ফুট আবার কোথাও সাড়ে তিন ফুট পর্যন্ত গর্তে আটকে যাচ্ছে যানবাহন। যাত্রী আর চালক সাথে আশেপাশের লোকজনের ভোগান্তি, আটকে যাওয়া যান উদ্ধারে ভোগান্তি লেগেই থাকে। এমন চিত্র মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার তিনটি সড়কে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে এলজিইডি মেহেরপুর নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ের দ্বন্দ্বের জেরে উচ্চ আদালতে মামলা চলমান। যার কারণে ৫কোটি টাকার ওপরে টেন্ডার হলেও, কাজ শুরু হয়নি প্রায় তিন বছর ধরে। এমন অবস্থায় এলাকার লাখো মানুষ নিত্য ভোগান্তি পোহাচ্ছে। তেমনি দর্শকের ভূমিকা ছাড়া অন্য কোন ভূমিকা কাজেই আসছে না বলে অসহায়ত্ব প্রকাশ করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

এলজিইডি গাংনী উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জনগুরুত্বপূর্ণ এ তিনটি সড়ক সংস্কারের জন্য ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে পৃথক তিনটি টেন্ডার আহ্বান করে এলজিইডি মেহেরপুর। প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে টেন্ডার তিনটি পায় চুয়াডাঙ্গার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জাকাউল্লাহ অ্যান্ড ব্রাদার্স। টেন্ডারে অসঙ্গতি থাকায় পুনঃটেন্ডার দেয় এলজিইডি মেহেরপুর নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান উচ্চ আদালতে মামলা করলে সংস্কার কাজ ঝুলে যায়।

এলজিইডি গাংনী উপজেলা প্রকৌশলী গোলাপ আলী শেখ বলেন, মামলার কারণে অন্য কোন প্রকল্প থেকে সংস্কার করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে বন্য পরবর্তী সংস্কার প্রকল্পে রাস্তা তিনটির নাম দেওয়া হয়েছে। এই মুহূর্তে যদি মামলা নিষ্পত্তি হয় অথবা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যদি মামলা তুলে নেয় তাহলে সংস্কার কাজ শুরু করা সম্ভব হবে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুর জেলার উত্তরপূর্বে একটি বড় অংশের কয়েক লাখ মানুষের চলাচল এ তিনটি সড়ক দিয়ে। পাশাপাশি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার সাথে সংযোগ রয়েছে। ফলে গাংনী উপজেলা ও কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মানুষের চলাচলের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় সড়কগুলোর বিভিন্ন স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ধীরে ধীরে রাস্তার খোয়া আর বিটুমিন উঠে গর্তের সংখ্যা বাড়ছে। সাথে বাড়ছে জনদুর্ভোগ। সড়কগুলোতে প্রায় আটকে যাচ্ছে বিভিন্ন প্রকার যানবহন। আর দুর্ঘটনা যেন নিত্যসঙ্গী।

সড়কে দুর্ভোগের বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা আমেনা ভ্যারাইটি স্টোর মালিক জুবায়েদুর রশিদ বলেন, এখানে প্রতিনিয়তই যানবাহন আটকে যায়। অনেক যাত্রী পানির মধ্যে পড়ে আহত হন। প্রায় সময়ই আমরা তাদেরকে উদ্ধার করি।

বালিয়াঘাট গ্রামের বাসিন্দা ও বামন্দী ইউনিয়নের সদস্য আসাদুল হক বলেন, স্থানীয় সব জনপ্রতিনিধি ও এলজিইডি বিভিন্ন দপ্তরে আমারা সব সময় জানাচ্ছি এ দুর্ভোগের কথা। রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় স্থানীয় মানুষ আমাদেরকে গালমন্দ করে।

বাস চালক বামন্দীর আলী হোসেন বলেন, কাজিপুর সড়ক দিয়ে কিছু বাস দৌলতপুর হয়ে ঢাকায় চলাচল করে। রাস্তার এ বেহাল অবস্থার কারণে বাসগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে বাস শ্রমিক ও এলাকার মানুষ অশান্তিতে রয়েছেন।

বালিয়াঘাট গ্রামের গর্তের পাশের বাসিন্দা শান্তি খাতুন বলেন, রাস্তার পাশ দিয়ে ছেলে মেয়েরা চলাচল করতে পারে না। রাস্তার পানিতে ডুবে শিশুরা মারা যেতে পারে এমন আশংকায় থাকি আমরা। অপরদিকে আমাদের বাড়িসহ রাস্তার আশে পাশের বাড়িঘরও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ভাঙ্গা রাস্তার কারণে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন বলেন, গেল সপ্তাহে ঢাকায় গিয়ে আমি রাস্তা তিনটি সম্পর্কে মন্ত্রীকে জানিয়ে এসেছি। তবে আমরা কেউ আদালতের ঊর্ধ্বে নই। ঠিকাদার ও এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলীকে একসাথে বসিয়ে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি করাতে বলা হয়েছে। উচ্চ আদালতের কার্যক্রম চালু হলে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির মাধ্যমে সংস্কার কাজ শুরু হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

আরও পড়ুন

জিএম/এম

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
জাহাজের ধাক্কায় যানবাহনসহ মাঝ নদীতে ভেঙে পড়ল সেতু
মেহেরপুরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১, আহত ৪
সেমাইয়ের কারখানায় অভিযান, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা
হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকই কলেজের পিয়ন
X
Fresh