মায়ের হাতেই সব টাকা তুলে দেয় সাব্বির
পৃথিবীতে সবচেয়ে আপন মানুষটি হলেন মা। মা তার সন্তানকে তিলে তিলে বড় করে তোলেন। সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে অনেক কষ্ট সহ্য করেন। কিন্তু সেই সন্তানেই অনেক সময় বড় হয়ে আর মায়ের দেখভাল করেন না। বৃদ্ধ মা হয়ে উঠেন সন্তানের বোঝা। এসব ঘটনা অহরহ ঘটলেও এখনও ব্যতিক্রম। বরং আজো পৃথিবীতে সব সন্তানেই তার মাকে ভালোবাসে শ্রদ্ধা করে। সেই মাতৃভক্ত সন্তানদেরই একজন হলো ১৪ বছরের কিশোর সাব্বির।
সাব্বির পেশায় একজন বাসের হেল্পার। যে সময়টায় তার স্কুলে যাওয়ার কথা, বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা করার কথা, সেই সময়টাতেই সে দিনগুজরানের জন্য বাসের হেল্পারি পেশাকে বেছে নিয়েছে।
সাব্বির রাজধানীর মিরপুর ১২ টু গুলিস্থান-সদরঘাট রুটের বিহঙ্গ বাসে হেল্পারি করে।
জানতে চাইলে সাব্বির বলে, ‘আমি ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত পড়েছি। এরপর আর আমার পড়া লিখা হইনাইজ্ঞা, অভাবের সংসারে আব্বা মারা যাওয়ায় আমাকে হেল্পারি পেশা বেছে নিতে হয়।
কথা বলে জানা যায়, সাব্বির দিনে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা আয় করে। এতে তার মাসিক আয় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। তবে সেই টাকার একটিও সাব্বির নিজে খরচ করে না। পুরো টাকাটাই দুঃখিনী মায়ের হাতে তুলে দেয়।
সব্বির আরও জানায়, সে তার মাকে নিয়ে মিরপুরের রুপনগর আবাসিক এলাকায় থাকে। সে বলে, ‘যা কামাই তার সবডি মায়ের হাতে দেই, নিজে এক টেকাও খরচ করি না। আমার মায়ে এতো কষ্ট করে আমাকে মানুষ করেছে, হের লাইজ্ঞা যদি আমি এই কষ্টটুকুই না করতে পারি, তাইলে জীবনে কি করমু আপনিই কন।’
বাসের হেল্পার আর ড্রাইভারদের সঙ্গে যাত্রীদের দা-কুমড়ার সম্পর্ক আমরা প্রতিনিয়তই দেখি। তবে সাব্বির বললেন অন্য কথা।
সাব্বির বলেন, ‘আমি সবার মতো না। আমার সঙ্গে যাত্রীরা খারাপ ব্যবহার করে না। মনে হয় উল্টো তারা আমাকে ভালোবাসে। আমিও হাসিমুখে হেগো বাসে উঠাই। আর আমি যহন লোক তুলি অন্য বাস রাইখা আমার বাসেই যাত্রী আগে উঠে। লোক উঠানো শেষে বাস টান দেই।
সাব্বির ফের লেখাপড়া করতে চায় কিনা জানতে চাইলে বলে, ‘আমাগো কি আর সেই সুযোগ হইবো মামা কন। আমি যদি লিহাপরা করতে যাই, আমগো খাওয়াইবো কেডা।
আরও পড়ুন: রিকশা চালিয়ে কোটিপতি হবার স্বপ্ন ১৪ বছরের কিশোরের (ভিডিও)
জেবি
মন্তব্য করুন