• ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
logo

বৃষ্টি আর বন্যায় কুড়িগ্রামের জনজীবন বিপর্যস্ত 

কুড়িগ্রাম (উত্তর) প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৫:২৬
বৃষ্টি আর বন্যায় কুড়িগ্রামের জনজীবন বিপর্যস্ত 
কুড়িগ্রামের জনজীবন বিপর্যস্ত 

অতিবৃষ্টি আর বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে কুড়িগ্রামের জনজীবন। বন্যায় নদ-নদীর অববাহিকার নিম্নাঞ্চল এবং চরাঞ্চলের মানুষ যখন পানিবন্দি হয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে ঠিক তখনি ভারী বৃষ্টিপাতে নাজেহাল পুরো জেলাবাসী। এক সপ্তাহের টানা বৃষ্টিপাতে নিম্ন আয়ের মানুষের কর্মের যোগান বন্ধ হওয়ার পথে। টানা বৃষ্টিপাতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে তলিয়ে গেছে উঠতি আমনের আবাদ। এছাড়া নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বেগুন, মুলা, পাটশাক, লালশাক, লাউ, পটলসহ সব ধরনের সবজির আবাদ। কাদা আর পানিতে চলা-চলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে গ্রামীণ জনপদের কাচা রাস্তা।

গত সোমবার থেকে অনবরত গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হলেও গতকাল শনিবার দিনটি বৃষ্টিহীন থাকলেও সন্ধ্যার পর রুদ্ররূপ ধারণ করে আকাশ। মেঘের গর্জনে ভারী হয় বাতাস। সারা রাত অঝরে ঝড়তে থাকে বৃষ্টি।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি ও আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সিনিয়র পর্যবেক্ষক মোফাখ্খারুল ইসলাম জানান, শনিবার সন্ধ্যা থেকে রোববার সকাল ৬টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টায় জেলায় ২৭৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।

বৃষ্টিপাতের ফলে নদ-নদীর পানি কিছুটা বেড়েছে। বন্যার্তদের দুর্ভোগ আরও কয়েকগুণ বেড়েছে। এদিকে খেটে খাওয়া মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। বৃষ্টির পানিতে জেলার বেশিরভাগ আমন আবাদ ডুবে গেছে। ভেসে গেছে অনেক পুকুরের মাছ। অনবরত বৃষ্টির কারণে আমন ক্ষেতে সময়মত সার কীটনাশকও প্রয়োগ করতে পারছেন না কৃষক। সবজির আবাদ নষ্ট হচ্ছে বৃষ্টির কারণে।

কৃষক উমর আলী জানান, ধার দেনা করে তিন বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করেছিলাম, বৃষ্টির কারণে সব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
শাক চাষি ফরিদুল জানান, বৃষ্টির কারণে তার এক বিঘা লালশাক, একবিঘা মুলার শাক নষ্ট হয়ে গেছে।

সুপারি চাষি রহিম মিয়া জানান, অতিবৃষ্টির কারণে গাছের কচি সুপারি ঝড়ে যাচ্ছে।

ঠেলা চালক বাবলু চন্দ্র রায় ও ভ্যান চালক জহুরুল হক জানান, বৃষ্টির কারণে পাঁচদিন ধরে কাজে যেতে পারছে না। হাতে যা ছিল তা শেষ। এখন পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে আছে তারা। আর কয়েক দিন বৃষ্টি থাকলে উপোষ করতে হবে তাদের।

দিন মজুর কাশেম আলী, ছাইদুল ইসলাম ও আমজাত আলী জানান, এভাবে বৃষ্টি হতে থাকলে মরণ ছাড়া আর কোনও উপায় থাকবে না। গত পাঁচ দিন থেকে বৃষ্টির কারণে কাজে যেতে পারছি না। কাজ করতে না পারলে না খেয়ে থাকতে হবে।

কুড়িগ্রাম রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, লঘু চাপ ও মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকায় এই বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হালকা ও মাঝারি বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

অপরদিকে আজ (রবিবার) সকাল ৬টা পর্যন্ত ধরলা নদীর পানি কিছুটা কমলেও ৯টার দিকে ০২ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে ৩০ সেন্টিমিটার বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পঞ্চম দফার বন্যায় দুধকুমার ধরলা অববাহিকার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। নদ-নদীর পানি উঠা নামার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে নদী ভাঙন। জেলায় প্রায় ৬৭টি পয়েন্টে শুরু হয়েছে তীব্র নদী ভাঙন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বন্যাদুর্গত এবং ভাঙন কবলিতদের জন্য ১২ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বন্যায় নিম্নাঞ্চল এবং চরাঞ্চলের প্রায় ৫ হাজার হেক্টর বিভিন্ন আবাদ পানিতে তলিয়ে গেছে।

কুড়িগ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, চলমান বন্যা পরিস্থিতি আরও দু’একদিন স্থায়ী থাকতে পারে। তবে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহের দিকে বন্যার সার্বিক উন্নতি হয়ে স্বাভাবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ঝিনাইদহে বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায়
এক বিভাগে বৃষ্টির আভাস দিলো আবহাওয়া অফিস
বৃষ্টির জন্য পাবনায় ইসতিসকার নামাজ
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বৃষ্টির আশায় ইসতিসকার নামাজ আদায়
X
Fresh