এ যেন সাক্ষাৎ মৃত্যুকূপ
একটু পরপর বড় বড় গর্ত আর খানাখন্দ, এ যেন সাক্ষাৎ মৃত্যুকূপ। প্রতিদিনই ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। স্থানীয়দের অভিযোগ, মাত্র তিন বছর আগে নির্মাণ করা সড়কটি এখন চলাচলের প্রায় অযোগ্য। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের অধীনে প্রায় ৩০ কিলোমিটার সড়কের সংস্কার হয়নি দীর্ঘদিন। এদিকে, দ্রুত সংস্কারের পাশাপাশি উপজেলার প্রধান সড়কপথ এলজিইডি থেকে সড়ক বিভাগে অধীনে নেয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সাংসদ।
এই সড়কটি রাজশাহী থেকে তানোর উপজেলা যাবার প্রধান ও একমাত্র সড়ক। অল্প সময়ের মধ্যে যাতায়াত করার জন্য অনেক সমস্যা ও অস্বস্তি হওয়ার পরেও প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীরা এই রাস্তা ব্যবহার করছেন।
স্থানীয় অটোচালক উজ্জ্বল জানান, রাস্তা ঘাটের যে বেহাল অবস্থা তাতে আমাদের গাড়ি চালাতে অনেক কষ্ট হয়। মাঝে মাঝেই দুর্ঘটনা হয়। অনেক দিন থেকে রাস্তাটির খারাপ অবস্থা। রাস্তাটি ভেঙে গেছে। আজ প্রায় আড়াই থেকে তিন বছর হলো। ভাঙা রাস্তার কারণে আমাদের গাড়ির অনেক ক্ষতি হয়। ফলে কোনো কোনো সময় আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হয়।
রাস্তাটার কাজ সঠিকভাবে করতে হবে। ঠিকাদাররা যেভাবে রাস্তা তৈরি করে তাতে আমাদের উপকারের থেকে বরং ক্ষতি হয় বেশি। আমাদের থেকে যারা রাস্তার কাজ করে তারা বেশি লাভবান হয় বলে মনে করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
একজন এনজিওকর্মী বলেন, রাস্তার কাজ প্রায়ই করে কিন্তু কোনও কাজে আসে না। কদিন যেতে না যেতেই আমাদের দুর্দশায় আবারও পড়তে হয়।
স্থানীয়রা আরও জানান, সড়ক তৈরির তিন বছরের মধ্যেই রাস্তার এমন বেহাল দশ হয়েছে। রাস্তাটির কাজে সন্তুষ্ট হয়নি। তাই যারাই পরবর্তীতে এই কাজটি করবে, তারাদের যেন কাজের মান ঠিক থাকে সেই দিকে সংশ্লিষ্টদের নজর দেয়ার আবেদন করছি।
তানোর উপজেলার চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না জানান, ইচ্ছা করলেও ভালো রাস্তা তৈরি করতে পারে না ঠিকাদাররা। কারণ প্রকল্পের যে ব্যয় থাকে ঠিকাদারদের সেই ব্যয়ের মধ্যেই কাজ করতে হয়। প্রতিটা শিডিউল মোতাবেকই কার্পেটিং থেকে শুরু করে। তাই তারা বলেন যে, টাকা কম কিন্তু কাজ বেশি বলে ঠিকাদাররা কাজগুলো ভালোভাবে করতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, তবে মেইটেনেন্স ও রিপিয়ারিংয়ের যে কাজগুলো হয়েছে এর আগেরবার এগুলো আমাদের পছন্দ হয়নি। একাজগুলো এমপি সাহেবও পছন্দ করেনি। মেইটেনেন্সের যে কাজগুলো এখানে হয়েছে তাতে খুব ফাঁকি হয়েছে। বিশেষ করে বাগঘানি থেকে চান্দুরিয়া, থানার মোড় থেকে মুন্ডুমালা যাবার পথ চলাচলের প্রায় অযোগ্য। এই বর্ষায় নতুন করে খানাখন্দ সৃষ্টি হলেও সড়ক তৈরিতেই ছিল অনিয়ম।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী-১ আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী আরটিভি নিউজকে বলেন, জেলা থেকে উপজেলা হেড কোয়ার্টার এবং উপজেলা থেকে অন্য আরেকটি উপজেলা হেড কোয়াটারের রাস্তা এটি রোডস এন্ড হাইওয়ের করার কথা। এখন কোনও অদৃশ্য কারণে রাজশাহী জেলা থেকে তানোর উপজেলার রাস্তাটি এলজিইডি ধরে বসে আছেন তা আমার জানা নেই। তাই আমি আপনাদের মাধ্যমে অনুরোধ করছি উপজেলার প্রধান সড়কগুলো স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ থেকে সড়ক বিভাগের অধীনে নিয়ে সংস্কার করার।
এদিকে সড়কের বিষয়ে কথা বলতে এলজিইডি কার্যালয়ে গেলে দেখা মেলেনি নির্বাহী প্রকৌশলীর। তবে তিনি মোবাইল ফোনে জানিয়েছেন, বর্ষা মৌসুম শেষে তানোর-মুন্ডুমালা সড়কের ১৭ কিলোমিটার সংস্কার করা হবে। যার ব্যয় ধরা হয়েছে ২০ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।
এসএ/পি
মন্তব্য করুন