• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
logo

গরিবের টাকা বড়লোকদের দিলেন পৌর মেয়র (ভিডিও)

  ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৫:৪৮
গরিবদের টাকা বড়লোকদের দিলেন পৌর মেয়র
উত্তম কুমার সাহা

করোনার সময়ে এবার রংপুরের বদরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র উত্তম কুমার সাহার বিরুদ্ধে করোনাকালে সরকারের দেয়া মানবিক সহায়তার টাকা নয়ছয়, সরকারি ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে অসহায় গরিব দুস্থের টাকা বড় লোককে দেয়া, নিয়মনীতি না মানায় ইতোমধ্যে পৌরসভার সকল কাউন্সিলরগণ তার বিরুদ্ধে অনাস্থাপত্র দাখিল করে জেলা প্রশাসকের কাছে তার অপসারণ ও বিচার দাবি করেন।

১৯৯০ সালে বদরগঞ্জ পৌরসভা প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে এ যাবত একাই শাসন করছেন মেয়র উত্তম কুমার সাহা। একাধারে দায়িত্ব পালন করায় তিনি কাউকে তোয়াক্কা করেন না। একাই চালাচ্ছেন গোটা পৌরসভার কার্যক্রম বলে অভিযোগ কাউন্সিলদের।

অনুসন্ধানে জানা যায়, করোনার এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় বদরগঞ্জ পৌরসভায় কয়েক দফায় প্রায় দশ লাখ টাকা প্রদান করেন। তার মধ্যে মানবিক সহায়তার তিন লাখ ৭৫ হাজার টাকা বিতরণে অনিয়ম, ৪ লাখ টাকার ত্রাণ বিতরণে স্বজনপ্রীতি ও সুরক্ষা সামগ্রী ক্রয়ের জন্য তিন দফায় চার লাখ টাকা প্রদান করেন। যা তিনি কোনও কাউন্সিলরকে কিছু না জানিয়ে সে টাকাও আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে মেয়রের বিরুদ্ধে।

পৌরসভার অধীনে লালদীঘির দিনমজুর হুমায়ন কবির জানান, সরকারি নগদ অর্থ প্রদানের তালিকায় নাম থাকলেও টাকা পায়নি তিনি। এনিয়ে কাউন্সিলরের কাছে গেলে কাউন্সিল বলে এবিষয়ে আমি কিছু জানি না এটা মেয়র উত্তম কুমার সাহা জানেন।

পৌর এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী উত্তম কুন্ড বলেন, তালিকায় আমাকে ২০০০ টাকা প্রদান উল্লেখ থাকলেও আমি টাকা পেয়েছে ৫শ’ মাত্র। এছাড়া ত্রাণ বিতরণ নিয়েও ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ অনেকের।

অপরদিকে দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতায় থেকে কোটি কোটি টাকার অনিয়মের প্রতিবাদে পৌরসভার ১২ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ১১ জনই মেয়রের বিরুদ্ধে অনাস্থা দাখিল করে রংপুরের জেলা প্রশাসকের কাছে।

৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী মোকছেদুল হক জানান, পৌর পরিষদের সিদ্ধান্ত ছাড়া মেয়র ও সচিব ২০১৬-২০১৭-২০১৮ ও ২০২০ সালে ৩ দফায় ২১ জনলোক নিয়োগ দিয়ে প্রায় আড়াই কোটি টাকা নিয়োগ বাণিজ্য করেন। ২০১৮-১৯ সালে ডেঙ্গু নিধন কার্যক্রমের আট লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর খায়রুল আলম কহিনুর বলেন, করোনাক্রান্তিকালে বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় বদরগঞ্জ পৌরসভায় কয়েক দফায় তিন লাখ ৭৫ হাজার টাকা প্রদান করে। যা মেয়র মহোদয় ভুয়া তালিকা তৈরি করে পরিষদকে কিছু না জানিয়ে গোপনে সম্পন্ন টাকা তুলে আত্মসাৎ করেন। সেই সাথে ত্রাণের বরাদ্দকৃত চার লাখ টাকার মধ্যে তিন লাখ ২৫ হাজার টাকা নিজের পকেটে ভরেন এবং বর্তমান সময়ে স্থানীয় সরকার বিভাগ সুরক্ষা সামগ্রী ক্রয়ের জন্য তিন দফায় চার লাখ টাকা প্রদান করেন। যা তিনি কোনও কাউন্সিলরকে কিছু না জানিয়ে সে টাকাও আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগও রয়েছে মেয়রের বিরুদ্ধে।

অপরদিকে মেয়র উত্তম কুমার সাহার বিরুদ্ধে পাহার সমান দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও এ বিষয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে নারাজ। তবে তার একটি ফোন রেকর্ড আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এলাকায়। সেখানে সে ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের কথা নির্দ্বিধায় স্বীকার করেন।

তিনি মোবাইল ফোনে বলেন, অনিয়ম হতে পারে যেমন- দুইটি গরীবকে না দিয়ে দুটি ধনীকে দিয়েছি। কিন্তু আত্মসাৎ করিনি। আর যদি সাক্ষ্য প্রমাণের প্রয়োজন হয় ট্রাকে করে লোক পাঠাতে পারব, এতো লোককে টাকা দিয়েছি।

রংপুরের জেলা প্রশাসক আসিব আহসান জানান, কাউন্সিলরদের অনাস্থা ও মেয়রের দুর্নীতি অনিয়মের তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

বদরগঞ্জ পৌরসভায় এই করোনাকালে যারা দুর্নীতি অনিয়ম করে রাতারাতি সম্পদের পাহাড় গড়েছেন তাদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনের আওতায় এনে সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল রাখতে সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে দাবি জানান পৌরবাসী।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
লিবিয়া থেকে ফিরলেন আরও ১৪৪ বাংলাদেশি
নির্বাচনে অনিয়ম করার সুযোগ নেই : ইসি আনিছুর
শিক্ষকরা অনিয়মিত, শিক্ষার্থীরা নিয়মিত যে বিদ্যালয়ে
কেন্দ্রে অনিয়ম হলে ভোটগ্রহণ বন্ধ : ইসি আলমগীর
X
Fresh