গ্যাস লিকেজের বিষয়ে জানায়নি মসজিদ কমিটি: তিতাস
নারায়নগঞ্জের তল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদের কলাম নির্মাণের সময়ে তিতাসের গ্যাস লাইন নষ্ট হয়েছিল। কেবল তাই নয় লিকেজের বিষয়টি তিতাসকে জানায়নি মসজিদ কমিটি। সেখান থেকে গ্যাস জমা হয়ে বিস্ফোরণ ঘটে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এমনটি উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তিতাস গ্যাস। ওই মসজিদটিতে বিকল্প লাইন হিসেবে অবৈধ বিদুৎ সংযোগও ছিলে বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করে তিতাস।
তদন্ত প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, বিদ্যুৎ চলে গেলে বিকল্প অবৈধ লাইনটি চালুর সময়ে জমে থাকা গ্যাস ঢুকে শর্ট সার্কিট থেকে দুর্ঘটনা ঘটে।
তিতাসের জমা দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনটি পরীক্ষা-নীরিক্ষা করা হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু।
এদিকে ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাইতুস সালাত জামে মসজিদে পাইপ লিকেজের কারণে বিপুল পরিমাণ গ্যাস জমে ছিল। আর সেখান থেকেই ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে বহু মুসল্লি নিহত হন। বৃস্পতিবার (১৭ সেপেটম্বর) বিকেলে প্রতিবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া কথা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জমে থাকা গ্যাসের মধ্যেই মসজিদের একটি সুইচ চাপ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আগুনের স্ফুলিঙ্গ সৃষ্টি হয়। সেই আগুনের কারণেই একের পর এক এসিগুলো বিস্ফোরিত হয়। ঘটে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। ওই প্রতিবেদনটিতে বিস্ফোরণের কারণ হিসেবে- পাইপ লিকেজের ফলে মসজিদের গ্যাস জমাট বেঁধে থাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, মসজিদ ভবনটি তৈরিতে বিল্ডিং কোড মানা হয়নি।
তিতাসের বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাইপ লিকেজের বিষয়ে এলাকাবাসী বা মসজিদ কমিটি তিতাস কর্তৃপক্ষের কাছে অবগত বা অভিযোগ করেছে লিখিত কোনো দলিল পাওয়া যায়নি। তবে অনেকে কমিটির কাছে বলেছে তারা মৌখিকভাবে তিতাসকে লিকেজের বিষয়ে অবগত করেছিল।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইন বলেন, মসজিদে ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের ৪ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি আজ বিকেলে প্রতিবেদন জমা দেবে। প্রতিবেদনে আগুনের কারণ ও সুপারিশ উল্লেখ করা হয়েছে।
গত ৪ সেপ্টেম্বর রাতে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার তল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ সময় মসজিদের ভেতরে দগ্ধ অবস্থায় ৩৭ জনকে উদ্ধার করে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মধ্যে ৩১ জন মারা গেছেন। বর্তমানে হাসপাতালটির আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন ৫ জন। চিকিৎসাধীন কেউই শঙ্কামুক্ত নন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তবে শুরুর দিকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ জন। এ ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস থেকে ৪ সদস্যের, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন থেকে ৫ সদস্যের, ও তিতাস থেকে ৩ সদস্যের তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল।
কেএফ/এম/এমকে
মন্তব্য করুন