নড়াইলের মধুমতীর ভাঙনের মুখে ব্রিটিশ আমলের বিদ্যালয়
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার মাকড়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি মধুমতী নদীর ভাঙনের মুখে পড়েছে। যেকোনো মুহূর্তে বিলীন হতে পারে বিদ্যালয়টি। এছাড়া ওই এলাকার মাকড়াইল, কাশিপুর ও রামচন্দ্রপুর গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
এলাকাবাসী জানান, ১৯৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত ওই বিদ্যালয় এলাকার বাতিঘর ছিল। ছিল বিশাল খেলার মাঠ। ওই মাঠে খেলাধুলা এবং নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মসূচি পালনে প্রাণচাঞ্চল্য ছিল। প্রায় তিন একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়ে বর্তমানে রয়েছে দুটি একতলা ভবন ও একটি টিনশেড ঘর। শিক্ষার্থী প্রায় তিনশ। খেলার মাঠটি নদী গর্ভে চলে গেছে।
সরজমিনে দেখা গেছে, মধুমতীর গর্ভে বিলীন হওয়ার মুখে রয়েছে বিদ্যালয়টি। বিদ্যালয়ের পূর্বপাশের একতলা ভবনটির উত্তরপাশের একটি কক্ষ নদীর মধ্যে ঝুলে আছে। উত্তর পাশের টিনশেড ঘরটি নদীর পাড়ে। সেখানে স্রোতের তোড় আঘাত করছে। স্থানীয় লোকজন বলছেন, যেকোনো মুহূর্তে বিলীন হতে পারে বিদ্যালয়ের ভবনগুলো।
পাশের বাসিন্দা বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি সত্তোর্ধ্ব মতিয়ার রহমান মৃধা বলেন, ‘গত বছর বিদ্যালয় থেকে অন্তত ৩০ ফুট দূরে ছিল নদী। এখন নদীর মধ্যেই বলা যায়। এখন পানি কমবে, ভাঙন তীব্র হবে। বিদ্যালয়টির অস্তিত্ব আর থাকবে না। বিদ্যালয়টি এলাকার বাতিঘর ছিল।’
শুধু ওই বিদ্যালয়ই নয়, নদীগর্ভে একে একে বিলীন হচ্ছে ওই এলাকার মাকড়াইল, কাশিপুর ও রামচন্দ্রপুর গ্রাম। নদীগর্ভে যাচ্ছে বসতবাড়ি, গাছপালা ও ফসলি জমি। স্থানীয় লোকজন জানান, চলতি বর্ষায় এসব গ্রামের অন্তত ২৫টি পরিবারের বসতবাড়ি নদীগর্ভে গেছে। গত বর্ষায় নদীতে বিলীন হয় অন্তত ৩০টি পরিবারের বসতবাড়ি। গত পাঁচ বছরে ভাঙন তীব্র হয়েছে। এ সময়ে মাকড়াইল গ্রামের পূর্বপাড়া, কাশিপুর গ্রামের তিন চতুর্থাংশ এবং রামচন্দ্রপুর গ্রামের এক তৃতীয়াংশ নদীতে চলে গেছে। ভাঙনের মুখে পড়েছে অন্তত দেড়শ পরিবার।
পাউবোর নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল কুমার সেন বলেন, ‘ওই বিদ্যালয় এলাকার ভাঙনরোধে বালুর বস্তা প্রস্তুত করা হচ্ছে। এখন তীব্র স্রোত, তাই ফেলা সম্ভব নয়। পানি একটু কমলে বস্তা ফেলা হবে।’
এসএস
মন্তব্য করুন