• ঢাকা মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

জেলে হয়েও জলদস্যুর অপবাদে জেল খাটা নুরউদ্দিন এখন কী করবে?

হাতিয়া প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৩:৫৫
What will Nuruddin, who is in jail for piracy, do now?
অসুস্থ অবস্থায় অর্ধাহারে-অনাহারে জীবন কাটাতে হচ্ছে জেলে নুরউদ্দিনকে, ছবি: প্রতিনিধি

শরীরের বিভিন্ন অংশে পানি জমে ফুলে গেছে। চোখের কোনে ক্ষতের চিহ্ন। হাঁটতে হয় লাঠিতে ভর দিয়ে। পরিবারে সদস্য সংখ্যা চারজন। এক সময় নদীতে মাছ শিকার করে ভালোই চলতো হাতিয়ার মো. নুরউদ্দিন মাঝির। হঠাৎ জীবন যেন এলোমেলো হয়ে গেছে। জলদস্যু অপবাদ নিয়ে দীর্ঘদিন সাজা ভোগ করার পর এখন অসুস্থ অবস্থায় অর্ধাহারে-অনাহারে জীবন কাটাতে হচ্ছে জেলে নুরউদ্দিনকে।

নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার জাহাজমারা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডে এই জেলের বসবাস। সরেজমিনে নুরউদ্দিনের বাড়িতে গেলে এলাকার বিভিন্ন শ্রেণীর প্রায় শতাধিক লোকের উপস্থিতিতে অসুস্থ শরীর নিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে নুরউদ্দিন জানান, নদীতে মাছ ধরা অবস্থায় জলদস্যুরা তাকেসহ তিন জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। জলদস্যুদের সাথে মুক্তিপণ হিসেবে ৩০ হাজার টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। যেদিন সকালে টাকা দিয়ে মুক্তি লাভ করার কথা, তার আগের রাতে কোস্টগার্ড অভিযান চালিয়ে তাকেসহ দুই জলদস্যুকে আটক করে। সে একাধিক বার নিজেকে নির্দোষ ও সাধারণ জেলে পরিচয় দেওয়ার পরও তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়নি।

জাহাজমারা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বেলাল উদ্দিন জানান, ২০১৬ সালের ২২ নভেম্বর হাতিয়ার পশ্চিমপাশে বেড়ীরচর থেকে কোস্টগার্ড দুইজন জলদস্যুসহ নুরউদ্দিনকে আটক করে। এই ঘটনায় কোস্টগার্ড বাদী হয়ে অস্ত্র ও ডাকাতি আইনে নুরউদ্দিনসহ তিনজনকে আসামি করে হাতিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করে। এই মামলায় নুরউদ্দিন দীর্ঘদিন সাজা ভোগ করে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে বর্তমানে বাড়িতে অবস্থান করছেন।

ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে করা মামলাটি নোয়াখালী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে পরিচালিত হয়। আদালত ২০১৮ সালের ১২ নভেম্বর তাকেসহ দুই জলদস্যুকে ১০ বছর করে সাজা দেয়।

এদিকে কোস্টগার্ড ও জলদস্যুদের হাতে একাধিকবার প্রহারে নুরউদ্দিনের হাত ও পা অনেকটা অবশ হয়ে গেছে। তার দুটি কিডনিতে পানি জমে গেছে। চিকিৎসার অভাবে এখন সে মৃত্যু পথযাত্রী। বর্তমানে তাকে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নুরউদ্দিনের উপর দিয়ে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত এ ঘটনার জন্য সে কাউকে অভিযুক্ত না করে নিয়তিকে দোষ দিয়ে আগামী দিনগুলো ভালোভাবে চলার জন্য সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেন।

এ ব্যাপারে জাহাজমারা ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মাছুম বিল্লাহ জানান, নুরউদ্দিনকে কোস্টগার্ড আটক করার পর এলাকার লোকজনসহ আমরা কোস্টগার্ডের তমরদ্দি ক্যাম্পে গিয়েছিলাম। সে নির্দোষ এটা বলার পরও তারা তাকে ছাড়েননি। বর্তমানে সে খুবই অসুস্থ। তার পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই দুর্বল।
এসএ/পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
মুক্তির পর যে কারণে জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে ঘেরা হলো কাঁটাতারে
উচ্চঝুঁকিপূর্ণ রুট পার হচ্ছে এমভি আবদুল্লাহ, পাহারায় ইইউ’র যুদ্ধজাহাজ
জলদস্যুদের মুক্তিপণ দেওয়ার ছবি নিয়ে সন্দেহ নৌ-প্রতিমন্ত্রীর
কবে কিভাবে দেশে ফিরবেন নাবিকরা
X
Fresh