• ঢাকা মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

চাঁদপুরের নৌপথে বয়া ও বিকন বাতি সঙ্কট

চাঁদপুর প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১২:২৬
বয়া বিকন বাতি চাঁদপুর
ছবি: সংগৃহীত

চাঁদপুরের নৌপথে বয়া ও বিকন বাতি সঙ্কটের কারণে প্রতিনিয়ত বাড়ছে মৃত্যুর ঝুঁকি। নৌপথের গভীর চ্যানেল ও নাব্য সঙ্কটপূর্ণ চ্যানেল চিহ্নিত করে বয়া ও বিকন বাতি। তবে অনেক বয়ার মধ্যে নেই প্রতিফলন টেপ। এতে করে রাতে লঞ্চের সার্চ আলোতে বয়া দেখা না যাওয়ায় দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। নৌপথের ৭১৩ কিলোমিটার এলাকায় বয়া ও বিকন বাতি সঙ্কটে নৌযান চালকসহ এ রুটে চলাচলকারী প্রায় ৫০ লাখ যাত্রীদের দুর্ঘটনার ঝুঁকি প্রতিনিয়ত বাড়ছে। দ্রুত এ সঙ্কট সমাধানে যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত সময়ে ২৬টি নৌ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে চাঁদপুরের ফায়ার সার্ভিস কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক ফরিদ আহমেদ।

চাঁদপুরের পাইলট তোফায়েল আহমেদ সুমন জানান, রাতে নদীতে নৌযান চলাচলে বয়া ও বিকন বাতির ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে চলমান বর্ষা মৌসুমে এগুলো দিক-নির্ণায়ক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। স্প্রীকাল বয়াগুলো নৌপথে জাহাজ দুর্ঘটনারোধে বসানো হয়। সেইসঙ্গে ডুবন্ত চরেও এগুলো ব্যবহার করা হয়। আর লাইটার বয়াগুলো নৌযান চলাচলের সুবিধার্থে বসানো হয়ে থাকে। তবে প্রয়োজনীয় বেশ কিছু স্থানেই দিক-নির্ণায়ক এসব যন্ত্রপাতির নাজুক অবস্থা।

তিনি বলেন, প্রয়োজনের তুলনায় এসব বয়া-বিকন বাতি নদীতে পর্যাপ্ত পরিমাণে নেই।

চাঁদপুরের পাইলট পরিদর্শক মো. নুরুন্নবী জানান, নদীতে এসব বয়া বিকন বাতি অনেকাংশেই জেলে ও দুর্বৃত্তগণ চুরি করে নিয়ে যায়। আবার অনেক সময় বাল্কহেডের ধাক্কায় এগুলো নষ্ট হয়ে যায়। তাই এগুলো রক্ষণা-বেক্ষণ জরুরি।

এ সম্পর্কে নৌ-সংরক্ষণ ও পরিচালন বিভাগ মধ্য ব-দ্বীপ চাঁদপুর শাখার যুগ্ম পরিচালক মো. মাহমুদুল হাসান থানদার জানান, চাঁদপুর নৌপথ অঞ্চলে ৮০টি বিকন বাতি ও ১৬টি বয়া রয়েছে। বিকন বাতিগুলোর মধ্যে লালটা উজানের বামে এবং সবুজটা উজানের ডানে বসানো হয়। আমাদের কাছে এখনও আরও সাতটি বয়া মজুদ রয়েছে। যখন যেখানে এগুলো বসানো প্রয়োজন আমরা সেখানেই এগুলো বসানোর উদ্যোগ নেই। তবে চাঁদপুর নৌপথের জন্য এগুলো পর্যাপ্ত নয় বলেও তিনি স্বীকার করেন।

এদিকে এ রুটে যাতায়াতকারী কয়েকটি লঞ্চের চালক জানান, নদীতে স্রোত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেক বয়া ও বিকন বাতি ভেসে অন্য দিকে স্থানান্তরিত হয়। এতে প্রয়োজনীয় স্থানে এসব যন্ত্রপাতি না থাকায় ভুল পথে নৌযান চালিয়ে প্রায়ই বিপাকে পড়তে হচ্ছে। অনেক সময় অনুমান নির্ভর হয়ে আমাদের লঞ্চ চালাতে হয়। এতে করে ডুবচরে লঞ্চের পাখা আটকে যায়। জরুরি অবস্থায় নদীর মাঝ পথে ফগ লাইট জ্বালিয়ে লঞ্চ নোঙর করতে হচ্ছে। তখন যেন ভোগান্তির শেষ নেই।

তারা আরও জানান, চাঁদপুর নৌ অঞ্চলের চাঁদপুর-ঢাকা, চাঁদপুর-মাওয়া, চাঁদপুর-হরিণা, চাঁদপুর-জনতা বাজার, চাঁদপুর-বরিশাল রুটের অনেক স্থানেই পথ নির্দেশক বয়া-বিকন বাতি বিকল হয়ে পড়ে আছে। কাগজে-কলমে বাঁশের মার্কার বাতির কথা উল্লেখ থাকলেও বাস্তবে অনেক ক্ষেত্রেই তার হদিস পাওয়া যায় না। বিশেষ করে বরিশাল ও বরগুনা রুটে এসব নেই বললেই চলে। যার কারণে রাতে আমাদের মারাত্মক ঝুঁকি নিয়েই লঞ্চ চালাতে হচ্ছে। তাই এসব বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

নদীতে নিরাপত্তা সংক্রান্ত ব্যাপারে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড স্টেশন চাঁদপুরের নির্বাহী কর্মকর্তা এম ইছহাক আলী জানান, নদীপথে বয়া-বিকন বাতিসহ দেশের সম্পদ রক্ষায় আমাদের নজরদারি রয়েছে। আমরা দুর্বৃত্ত ও চোরচক্রের বিরুদ্ধে নদীপথে সর্বদা তৎপর রয়েছি।

বিআইডব্লিউটিএ এর জনসংযোগ কর্মকর্তা মোবারক হোসেন মজুমদার জানান, দেশের বাইরে থেকে আমদানি করা এসব বিকন বাতির দাম ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। তবুও আমরা আমাদের সাধ্যমত এ সঙ্কট সমাধানে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। প্রতি মাসে ডুবোচর নির্ধারণ করে ঠিকাদারের মাধ্যমে ১২০টি বাঁশ পুঁতে নাব্য সঙ্কট এলাকা চিহ্নিত করা হচ্ছে। আর ওই বাঁশের ওপর সঙ্গে সঙ্গেই মার্কা লাগিয়ে দেয়া হচ্ছে। এতে করে চালকরা সঠিক পথ নির্ধারণ করে নৌযান চালাতে পারছে। তবে ঝুঁকি রোধে দক্ষ চালক, মাস্টার দ্বারা নৌযান না চালালে আমরা কঠোরভাবে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিয়ে থাকি।

জেবি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারলেন স্বামী
বর্ণাঢ্য আয়োজনে চাঁদপুরে বাংলা নববর্ষ উদযাপিত
বাবার কাঁধে ছেলের মরদেহ, নীরব কান্না
‘নদীর স্রোতের মতোই আমাদের সংস্কৃতি তীব্র গতিতে বহমান’ 
X
Fresh