• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
logo

চট্টগ্রামের ফুলঝাড়ুর কদর দেশজুড়ে

জয়নুল আবেদীন, চট্টগ্রাম

  ০৪ মার্চ ২০১৭, ১৭:০৯

চট্টগ্রামের সেন্ট্রাল রেলওয়ে বিল্ডিং (সিআরবি) এলাকায় এসপির বাসভবনের ঠিক পাশেই ফুলঝাড়ুর হাট। এ হাটের ফুলঝাড়ুর কদর দেশজুড়ে। প্রতি শনিবার কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার পেকুয়া এলাকা থেকে এখানে ঝাড়ু নিয়ে আসেন ব্যবসায়ীরা। চকরিয়ার শতাধিক পরিবারের জীবন-জীবিকা এ ব্যবসার ওপর নির্ভরশীল। সপ্তাহ জুড়ে কাঁচামাল সংগ্রহ এবং বাঁধাই শেষে তারা নিয়ে আসেন এখানে। একদিনের এ হাটে ব্যবসা হয় প্রায় কোটি টাকার মতো।

দীর্ঘ একযুগের বেশি সময় ধরে এ হাট বসে চট্টগ্রাম শহরে। আগে এ হাট বসতো দেওয়ান হাট ওভারব্রিজের নিচে। গেলো ২-৩ বছর ধরে সিআরবি এলাকায় ফুলের ঝাড়ের এ হাটটি বসতে শুরু করে। পাহাড়ে প্রাকৃতিকভাবে ফুলঝাড়ুর চারা জন্মে। বড় হলেই কেটে নিয়ে আসেন পাহাড়ে বসবাসকারীরা। তাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। ঘর পরিস্কার করা, নির্মাণাধীন ভবনের পলেস্তরের কাজ, ঘরের দেয়ালে রং লাগানোর কাজেও ব্যবহার করা হয় এসব ফুলঝাড়ু।

দেশের বিভিন্ন জায়গায় ফুলঝাড়ুর চারা জন্মালেও মানের কারণে দেশজুড়ে চট্টগ্রামের ফুলঝাড়ুর আলাদা কদর আছে। তাই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা নগরীর এ হাটে আসেন ফুলঝাড়ু কিনতে। প্রতিবছর চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জাব্বারে বলি খেলা উপলক্ষে মেলায় এসব ফুলঝাড়ুর থাকে বাড়তি কদর। মেলা থেকেই পুরো এক বছরের জন্য ফুলঝাড়ু কিনে নেন গৃহিনীরা।

চকরিয়া পেকুয়া থেকে ৫শ' বান্ডেল নিয়ে হাটে এসেছেন রহমত আলী নামের এক ব্যবসায়ী। প্রতি বান্ডিলে থাকে ২৫টি বাধাই ঝাড়ু। পাইকারি ছাড়া খুচরা বিক্রি করা হয়না এসব ঝাড়ু। ব্যবসা কেমন হয় জিজ্ঞেস করতেই আরটিভি অনলাইনকে জানান, ৮-৯ বছর ধরে এ ব্যবসার সাথে জড়িত। পরিবার পরিজন নিয়ে ভালই চলছে। তবে গেলো দু'সপ্তাহ ধরে বাজার একটু নিচের দিকে। তবে গড়ে মোটামুটি ভালই চলে। পরিবার পরিজন নিয়ে সুখেই আছি।

পেকুয়ার আরেক ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলমগীর জানান, মাল আনার সময় পথে পথে নানা হয়রানির সম্মুখীন হতে হয়। হাইওয়ে পুলিশতো আছেই শাহ আমানত সেতুর পাশে পুলিশি হয়রানির শিকার হই। ফরেস্ট বিভাগে রাজস্ব আদায় করে এসব মাল আনা হয়। এরপরেও পথে পথে নানা চাঁদাবাজির কারণে মালের উপর খরচ বেশি পড়ে। তবে সিআরবি এলাকায় পুলিশ সুপারের পাশের এ মাঠে খুব শান্তিতে ব্যবসা করতে পারছি। কোনো ধরনের ঝামেলা নেই।

নগরীর নাজিরপুল এলাকা থেকে হাটে এসেছিলেন পাইকারী ব্যবসায়ী মোহাম্মদ জাবেদ। আরটিভি অনলাইনকে জানান, দীর্ঘ ১০বছর ধরে হাট থেকে ফুলের ঝাড়– সংগ্রহ করে নগরীর ইপিজেড এলাকার বিভিন্ন কারখানায় সরবরাহ করার পাশাপাশি চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করি। আগে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করতাম। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ব্যবসায়ীরা আসায় চট্টগ্রামের বাইরে সরবরাহ করা সম্ভব হয়না বলে জানান তিনি।

নরসিংদি থেকে হাটে এসেছেন পাইকারি ব্যবসায়ী মান্না মুহাম্মদ। তিনি আরটিভি অনলাইনকে জানান, এ এলাকার ফলঝাড়ুর কদর সারাদেশ জুড়ে। তাই পাইকারি কিনে নিয়ে যায় নরসিংদীতে। এরপর রাজধানীসহ বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করি। আব্দুল ওহাব নামের এক ব্যবসায়ীরা জানান, পথে পথে হয়রানি বন্ধ হলে এ ব্যবসায় আরো লাভবান হওয়া সম্ভব। তাছাড়া বেকার সমস্যা সমাধানে এ ব্যবসা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন তারা।

এসজে

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh