নৃত্যশিল্পীকে ফের উলঙ্গ করে মারধর
মামলা তুলে না নেয়ায় টাঙ্গাইলের সখীপুরের নৃত্যশিল্পীকে আবারও উলঙ্গ করে মারধর করা হয়েছে।
বুধবার রাতে নৃত্য শিল্পী সুমন আহমেদের কাহারতা বাসার সামনে থেকে তুলে বনের ভেতরে নিয়ে চোখ-মুখ বেঁধে শারিরীকভাবে নির্যাতন ও তার মাথার চুল কেটে এবং তার মুখে কালি দিয়ে বিবর্ণ করে দেয়। রাতে সখীপুর থানা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করলে কোনও প্রদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এতে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাই প্রশাসনসহ সকলের কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়েছেন সুমন।
সুমন আহমেদ জানান, বুধবার রাতে সখীপুরের কাহারতা বাসার সামনে থেকে ৫-৬ জন চোখ-মুখ বাঁধা সন্ত্রাসীরা তাকে তুলে বনের ভেতর নিয়ে যায়। বৃহস্পতিবারের মধ্যে মামলা তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ করা হয়। মামলা তুলতে রাজি না হওয়ায় কালা শরীফ, সুপ্তসহ ৫-৬ জন আসামি তাকে মারধর করে। তাদের মধ্যে একজন মাথায় প্রশ্রাব করে দেয়। অন্যজন কাচি ও ব্লেড দিয়ে তার মাথার চুল এলোমেলো করে কেটে ও তার মুখে কালি দিয়ে বিবর্ণ করে দেয়। পরে রাত তিনটার দিকে বাড়ির সামনে এসে তাকে ছেড়ে দেয় সন্ত্রাসীরা। থানায় গিয়ে পুলিশকে বিষয়টি জানালে পুলিশ কোনও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
তিনি আরও জানান, পুলিশ নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিলেও আমাকে কোনও নিরাপত্তা দিতে পারেনি। আমাকে বারবার উলঙ্গ করে কালা শরীফ, সুপ্তসহ আসামিরা মারধর করছে। মারধরের পর কালা শরীফ, সুপ্তসহ আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায়। বিষয়টি পুলিশকে জানালেও পুলিশ কোনও প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। আমি পুলিশ প্রশাসনসহ সকলে কাছে প্রাণভিক্ষা চাই। আমি নিরাপত্তা ও আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
এ বিষয়ে সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমির হোসেন জানান, ইতিমধ্যে দ্বিতীয়বার এ ঘটনার জন্য মামলা নেওয়া হচ্ছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গেল ৬ আগস্ট বাড়িতে যাওয়ার সময় সখীপুর জামতলা এলাকায় আসামিরা তিনজন মোটরসাইকেল নিয়ে তার সামনে দাড়িয়ে পথ গতিরোধ করে। পরে প্রধান আসামি কালা শরীফের নির্দেশে দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে সুমন আহমেদকে আসামিরা মোটরসাইকেলে তুলে জামতলা লিচু বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে আসামিরা সুমন আহমেদকে কিল, ঘুষি, চর থাপ্পর ও লাথি মারে। এরপর জোর পূর্বক তার শরীরের সকল কাপড় চোপড় খুলে নাচতে বলে।
নাচতে রাজি না হওয়ায় সুমনকে মারধর করে। সুমন আহমেদ আসামিদের কাছে ক্ষমা চাইলে তারা আরও বেধরক মারধর করতে থাকে। একসময় বাধ্য হয়ে সুমন উলঙ্গ হয়ে নাচতে শুরু করলে আসামিরা তার নাচের দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও করে বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়া ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি প্রদান করেন।
এ ঘটনায় সুমন বাদী হয়ে আট আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে সখীপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামিরা হলেন উপজেলার দড়িয়াপুর গ্রামের জলিল তালুকদারের ছেলে কালা শরীফ (২৫), সখিপুর গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে প্রিন্স মাহমুদ (২০), কালিদাস গ্রামের মো. হাসিব মিয়া (১৯), সফি মিয়ার ছেলে সুপ্ত (১৬), মো. মামুন মিয়া (২২)। মামলার পর প্রিন্স ও মামুনকে গ্রেপ্তার হলেও প্রধান আসামিসহ অন্যান্যরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
আরও পড়ুন
জেবি
মন্তব্য করুন