• ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
logo

খালাতো বোন ও বউকে বোন বানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি

জামালপুর প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ২৯ আগস্ট ২০২০, ২৩:৩৮
Muktijoddha quota job by making cousin and wife sister

জামালপুরের বকশীগঞ্জে রবিয়ারচর এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা বাবার সনদ দেখিয়ে এক মুক্তিযোদ্ধার সন্তান তার খালাতো বোন ও বউকে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি নিয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জন্ম সনদসহ বিভিন্ন কাগজপত্র জাল করে তিনি তার খালাতো বোন ও বউকে সহোদর বোন বানিয়ে এই চাকরি বাগিয়ে নেন। পাঁচ বছর ধরে তার খালাতো বোন ও বউ সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি করছেন।

জানা যায়, জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলার রবিয়ারচর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মো. শহিদুর রহমানের সন্তান আশরাফুল আলম বিপ্লব তার খালাতো বোন ও বউকে আপন বোন বানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি বাগিয়ে দিয়েছেন। তাদের দুজনের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ জাল করে চাকরি নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। খালাতো বোন ও বউকে সহোদর বোন বানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা বাবার সনদে চাকরি নেওয়ার বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে গোপন ছিল। তবে সম্প্রতি বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ার পর থেকে এলাকায় তোলপাড় চলছে। ফলে আশরাফুল আলমসহ পরিবারের সবাই ঘর-বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় পালিয়ে গেছেন। একই সঙ্গে আশরাফুল আলমেরও সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি হয়। তার শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ জাল বলেও অভিযোগ রয়েছে। ২০১৬ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে মো. আশরাফুল আলম বিপ্লব ও তার বউ নাসরিন আক্তার ও খালাতো বোন শাপলা আক্তার একই সঙ্গে চাকরিতে যোগদান করেন। মুক্তিযোদ্ধা মো. সহিদুর রহমানের তিন সন্তান হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় তাদের চাকরি হয়। কিন্তু নাসরিন আক্তার ও শাপলা আক্তার ওই মুক্তিযোদ্ধার সন্তান নয়। নাসরিন আক্তার ওই মুক্তিযোদ্ধার পুত্রবধূ ও শাপলা আক্তার ভাগনি। তিনি জন্ম সনদসহ বিভিন্ন কাগজপত্র জাল-জালিয়াতি করে তাদের দুজনকে চাকরি নিয়ে দেন। বর্তমানে আশরাফুল আলম উপজেলার মাদারেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে, শাপলা আক্তার খেয়ারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ও নাসরিন আক্তার টুপকারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

এলাকাবাসী জানিয়েছেন, আশরাফুল আলম উপজেলার বিভিন্ন লোককে চাকরি দেওয়ার কথা বলে প্রায় ৮০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মগোপন করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়েও অনুপস্থিত রয়েছেন। মো. আশরাফুল আলমের বাড়ি উপজেলার রবিয়ারচর গ্রামে। কিন্তু বাড়িতে তার পরিবারের কেউ থাকে না।

প্রতিবেশীরা জানায়, আশরাফুল আলম পলাতক রয়েছেন। তার বউ নাসরীন আক্তারসহ অন্যান্য সদস্যরা ঢাকায় থাকেন। বাড়িতে শাপলা আক্তার থাকেন। যাকে আশরাফুল আলম সহোদর বোন বানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি নিয়ে দিয়েছেন।

খেয়ারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাপলা আক্তার জানান, মুক্তিযোদ্ধা মো. সহিদুর রহমান আমার খালু। আশরাফুল আলম আমার খালাতো ভাই। আমার বাবার নাম বেলাল মিয়া ও মা মনোয়ারা বেগম। আমার বাবা একজন কৃষক ছিলেন। কোন কোটায় তার চাকরি হয়েছে বিষয়টি তার অবগত নয়। তবে প্রায় ১০ লাখ টাকায় তার খালাতো ভাই আশরাফুল আলম সহকারী শিক্ষক পদে চাকরিটি নিয়ে দেন।

এ ব্যাপারে আশরাফুল আলমের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

শিক্ষাবিদ মো. আব্দুল হাই আল হাদী জানান, এ রকম দুর্নীতি যাতে না হয় সেক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষকে আরো সচেতন হতে হবে। কারণ জন্মসনদ ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সম্পর্কিত প্রত্যয়নই মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগের একমাত্র দলিলপত্র নয়। একজন আবেদনকারীর সনদেও বাবা-মার নাম উল্লেখ থাকে। তবে কি এসএসসি ও এইচএসসির সনদেও বাবার নাম পাল্টে দিয়েছে। যদি তা করে থাকে তবে সনদও জাল। আর তা না হলে নিয়োগবোর্ডের সদস্যগণ মূলসনদ অবশ্যই দেখার কথা। সনদে পিতার নাম এক আর প্রত্যয়নপত্রে বাবার নাম আরেক। এমনটা হলে নিয়োগ বোর্ডের চোখ এড়ানোর কথা নয়।

বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আ.স.ম. জামশেদ খোন্দকার জানান, এই বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। বিষয়টি জানতে পারলাম। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিও) আব্দুর রাজ্জাক জানান, এদের চাকরি মুক্তিযোদ্ধা কোটায় হয়েছে। জাল সনদের বিষয়ে বেশ কিছু দিন আগে একটি তদন্ত হয়েছে। সেই তদন্তের রিপোর্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে তদন্ত রিপোর্ট পাঠানোর পর কি হয়েছে এ বিষয়টি আমি আর জানি না।
পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ইবনে সিনা ট্রাস্টে চাকরি, নেবে একাধিক লোকবল
অষ্টম শ্রেণি পাসেই ব্র্যাকে চাকরির সুযোগ
এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালসে চাকরি, আবেদন করবেন যেভাবে
সাপ্তাহিক ২ দিন ছুটিসহ চাকরি, লাগবে না অভিজ্ঞতা
X
Fresh