• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

মানিকগঞ্জে বন্যায় মৎস্যখাতে ক্ষতি প্রায় ৪৩ কোটি টাকা

জাহাঙ্গীর আলম বিশ্বাস

মানিকগঞ্জ

  ২৯ আগস্ট ২০২০, ১৪:০৮
Manikganj pond Madhabpur
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার আটগ্রাম ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামের মৎস্য খামারি সোলায়মান খানের বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত পুকুর

এবারের বন্যায় মানিকগঞ্জে মৎস্যখাতে ক্ষতি হয়েছে ৪২ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। মাছ ও মাছের পোনা বন্যার পানিতে ভেসে যাওয়া এবং পুকুরের পাড় ভেঙে যাওয়ায় ৩,৫১১ জন মৎস্য খামারির এই ক্ষতি হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের সূত্রে জানা গেছে, মানিকগঞ্জের সাতটি উপজেলার ৩,৫১১ জন খামারির ৪, ৯৩১টি মৎস্য খামার বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ৩৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা মূল্যের ২,১৭৩ মেট্রিক টন মাছ এবং ৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকা মূল্যের ৩৮০ মেট্রিক টন মাছের পোনা ভেসে গেছে। এছাড়া যেসব পুকুরের পাড় ভেঙেছে তা ঠিক করতে লাগবে কমপক্ষে আরও তিন কোটি ৩৯ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে এই খাতে ক্ষতির পরিমাণ ৪২ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার আটগ্রাম ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামের মৎস্য খামারি সোলায়মান খান আরটিভি নিউজকে জানান, তিনি তিন লাখ টাকার বিনিময়ে এক বছরের জন্য চারটি পুকুর ভাড়া নিয়েছিলেন। রুই, কাতলা, মৃগেলসহ বিভিন্ন ধরনের আট লাখ টাকা মূল্যের মাছের পোনা ক্রয় করে এসব পুকুরে ছেড়েছিলেন। প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা মূল্যের বড় মাছও ছিল। বন্যার পানিতে সব মাছ ভেসে যাওয়ায় তিনি দুই চোখে অন্ধকার দেখছেন।

সোলায়মান খানের পুকুরের পাড়ও ভেঙে গেছে। সেটাও ঠিক করতে লাগবে কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা।

তিনি আশা করেছিলেন এবার একটু লাভের মুখ দেখবেন। কিন্তু লাভতো দূরের কথা সারাজীবনের সঞ্চিত টাকাগুলো শেষ হয়ে গেছে তার।

মানিকগঞ্জ জেলা শহরের বান্দুটিয়া গ্রামের আব্দুল লতিফ জানান, তার পুকুরের দুই লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। ৮০টি বানা এবং জাল দিয়ে বেড়া তৈরি করেও মাছগুলো আটকাতে পারেননি তিনি। এখন তিনি কৃষি ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার জন্য ঘুরছেন। সেটাও পেতে কতদিন লাগবে তা নিয়েও চিন্তিত তিনি।

সরজমিনে ঘুরে জানা গেছে, পরিবার-পরিজন নিয়ে এসব মৎস্য খামারিরা অত্যন্ত মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।

সরকার যদি তাদেরকে সহযোগিতা করে তাহলেই ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন বলে জানান এসব ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য খামারিরা।

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা মৎস্য কার্যালয়ের কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম আরটিভি নিউজকে বলেন, উপজেলায় মোট ২,০৮০টি পুকুর আছে। এর মধ্যে ১,৬০৫টি পুকুরের মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। সেইসঙ্গে পুকুরের পাড় ভেঙে গেছে। এতে ৯৪৩ জন মৎস্য খামারি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। করোনার কারণে কৃষকদের জন্য ঘোষিত প্রণোদনা হিসেবে ব্যাংক থেকে ৪% সুদে ঋণ সুবিধা পাওয়ার জন্য অনেকেই তার কাছে আসছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। তাদের ঋণ পাওয়ার ব্যাপারে সহযোগিতা করছেন।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মো. মুনিরুজ্জমান বলেন, মানিকগঞ্জের সাতটি উপজেলায় মোট ১৪,৪৭৯টি পুকুর আছে। এর মধ্যে ৪,৯৩১টি পুকুরের মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে এবং পুকুরের পাড় ভেঙে গেছে। এতে ৩,৫১১ জন মৎস্য খামারির ৪২ কোটি ২২ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে। যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে এই ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে নির্দেশনা বা সহযোগিতা পাওয়া গেলে সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুন: পাটুরিয়া ঘাটে নদী পারের অপেক্ষায় চার শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক

জেবি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বড় খামারিদের কারসাজিতে ৫০০-তে নামছে না গরুর মাংস 
অভয়াশ্রমে মৎস্য শিকার, ১৮ জেলের কারাদণ্ড
কুমিল্লায় ট্রাক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল মনপুরার ৩ মৎস্য শ্রমিকের
যারা ঋণ দিয়ে সুদ নিচ্ছে, তারাই আবার নোবেল পাচ্ছে :  প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
X
Fresh