• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
logo

রং নম্বরে পরিচয়, সাক্ষাত করতে গিয়ে মেয়ের বাবার পিটুনিতে হাসপাতালে যুবক

পঞ্চগড় প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ১৪ আগস্ট ২০২০, ১২:৪০
young man in the hospital
হাসপাতালে যুবক

রং নাম্বারে পরিচয় হওয়া এক কিশোরীর সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতে গিয়ে কিশোরীর বাবার নির্যাতনে এখন হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন এক যুবক। আর ওই কিশোরীর বাবার অপহরণ মামলার আসামি হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকায় সেখানে রয়েছে পুলিশ পাহারা।

বুধবার (১২ আগস্ট) বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে পঞ্চগড় সদর উপজেলার গড়িনাবাড়ি ইউনিয়নের মাটিগাড়া গ্রামে। নির্যাতনে আহত ওই যুবক চাঁদপুর জেলার পল্লী বিদ্যুতের লাইন নির্মাণের কাজ করেন।

বুধবার রাতে কিশোরীর পরিবার যুবককে মারধর করার পর পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ আহত অবস্থায় রাকিব হোসেনকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন।

এদিকে বুধবার রাতেই পঞ্চগড় সদর থানায় কিশোরীর বাবা বজলার রহমান বাদী হয়ে রাকিব হোসেনকে আসামি করে একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের হওয়ার পর পুলিশ পাহারায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে রাকিব হোসেন।

মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্র জানায়, গত বুধবার বিকেলে গড়িনাবাড়ি ইউনিয়নের সিপাইপাড়া গ্রামের আইবুল হকের ছেলে রাকিব হোসেন (১৮) পঞ্চগড় সদর উপজেলার গড়িনাবাড়ি ইউনিয়নের মাটিগাড়া গ্রামে আসেন। ওই গ্রামের বজলার রহমানের ৯ম শ্রেণি পড়ুয়া কিশোরীকে অপহরণ করে তুলে নিয়ে যান। পরে কিশোরীর পরিবার বাড়িতে আনার পর ওই ছেলেকে মারধরও করে। রাতে পঞ্চগড় থানায় বিষয়টি জানালে থানা পুলিশ সেখান থেকে আহত অবস্থায় ওই যুবককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

রাকিব হোসেন বলেন, আমি শুধু কথা বলেছি ঐ মেয়েটির সাথে। তার বাবা রাস্তায় কথা বলতে আমাদের দুজনকে একসাথে দেখে ফেলে। তারপর মেয়েটির বাবা আমাকে বাসায় যেতে বললে সরল বিশ্বাসে তাদের বাড়িতে গিয়েছি । কিন্তু সেখানে একটি ঘরে বন্দী করে গাছের ডাল দিয়ে আমাকে বেধড়ক মারধর করলে আমি জ্ঞান হারাই। আমার হাত ও পা ভেঙ্গে দিয়েছে। জ্ঞান ফেরার পর পানি খেতে চেয়েছিলাম কিন্তু এক গ্লাস পানি খেতে দেয়নি। আমার হাত ও পা দিয়ে রক্ত ঝরেছে। আর আমি চিৎকার করেছি কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি। হাসপাতালে এসে শুনেছি শুধু কথা বলার অপরাধে আমার নামে অপহরণ মামলা হয়েছে। আমি তো মেয়েটির বাসার পাশে কথা বলেছিলাম।

রাকিবের মা রোকেয়া বেগম বলেন, আমার ছেলেকে মধ্যযুগীয় কায়দায় বেধড়ক মারধর করেছে বজলার রহমান ও তার পরিবারের লোকেরা। ছেলের অপরাধ শুধু বজলার রহমানের মেয়ের সাথে রাস্তায় কথা বলেছিল। রাকিব একেবারে সহজ সরল ও নির্দোষ। আমরা বৃহস্পতিবার সকালে খবর পাই রাকিবকে পঞ্চগড় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালে এসে দেখি আমার ছেলের হাত-পা ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। উল্টো তারাই অপহরণ মামলা করেছে। আমি তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং আমার ছেলের নির্যাতনের বিচার চাই।

কিশোরীর বাবা রাকিব হোসেনকে মারধরের কথা স্বীকার করে বলেন, আমার মেয়েকে মোবাইলে উত্যক্ত করেছিল রাকিব। এজন্য বাড়িতে ডেকে নিয়ে সামান্য মারধর করেছি। এরপর পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে তাকে নিয়ে যায়। কেন অপহরণ মামলা দিয়েছেন প্রশ্ন করলে তিনি জানান, আসলে বাড়ি থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে গিরাগাঁও ক্যাম্পের কাছে আমার মেয়েকে নিয়ে গিয়েছিল এজন্যই মামলা দায়ের করেছি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পঞ্চগড় সদর থানার উপ পরিদর্শক ফিরোজ বলেন, খবর পেয়ে আমরা সন্ধ্যার পর গড়িনাবাড়ি থেকে ওই ছেলেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। রাতেই মেয়ের বাবা থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করে তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।

পঞ্চগড় সদর থানার ওসি (তদন্ত) জামাল হোসেন জানান, আহত অবস্থায় রাকিবকে মাটিগাড়া থেকে উদ্ধার করা হয়। পরে বজলার রহমান বাদী হয়ে থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন। এজন্য পুলিশ পাহারায় পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাকিব সুস্থ হলে আদালতে হাজির করানো হবে।

জিএ/ওয়াই

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ডিবি পরিচয়ে ৩৬ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ
ডিবি পরিচয়ে সয়াবিন তেলভর্তি ট্রাক ডাকাতি, গ্রেপ্তার ৭
স্ত্রী পরিচয় দিয়ে নারীকে দীর্ঘদিন ‘ধর্ষণ’, আ.লীগ নেতা আটক
হত্যার পর মুখ পুড়িয়ে দেওয়া ব্যক্তির পরিচয় মিলেছে
X
Fresh