• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

বকশিস না দেয়ায় অক্সিজেন খুলে নেয়ায় দুই শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

  ০৯ আগস্ট ২০২০, ১৭:৫০
Two children have died due to deprivation of oxygen due to non-payment of bounty
সন্তান হারিয়ে মায়ের আহাজারি

গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালের নার্স ও আয়াকে বকশিস না দেয়ায় শিশুর নাক থেকে অক্সিজেন খুলে নেয়ায় দুই শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

এই ঘটনায় দুই শিশুর পরিবারের আহাজারিতে হাসপাতালের বারান্দা ভারি হলেও হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এসি রুম থেকে বেরিয়ে এসে দেখেননি।

শনিবার দুপুরে গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের মোশারফ হোসেন তার ১ মাসের শিশু সন্তান আব্দুর রহমানকে শ্বাসকষ্ট নিয়ে গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসেন। হাসপাতালের চিকিৎসক শিশুটিকে ভর্তি করাতে বলেন এবং দ্রুত অক্সিজেন দিতে বলেন। মোশারফ হোসেন শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করান। ভর্তি করার পর অক্সিজেন দেয়া হলে শিশুটি সুস্থ হয়।

এরপর শিশুটির বাবার কাছে নার্স রিমা আক্তার, রেহেনা বেগম ও মনিকা বেগম এবং আয়া বকশিস দাবি করে। তখন জোহরের নামাজের সময় হয়েছে। শিশুটির বাবা মোশারফ হোসেন নার্স ও আয়াদের বলেন, আমি নামাজ পড়ে এসে আপনাদের বকশিস দেব। এই বলে দুপুর দেড়টার দিকে মোশারফ নামাজ পরার জন্য হাসপাতালের মসজিদে যায়। তার আসতে একটু বিলম্ব হওয়ায় নার্স ও আয়ারা শিশুটির মা, খালা, দাদি ও নানীর কাছে বকশিস দাবি করে। শিশুটির মা ও খালা তাদের জানায়, শিশুর বাবা নামাজ থেকে আসলেই বকশিস দেয়া হবে। কিন্তু নার্স ও আয়ারা তাতে রাজি না হয়ে শিশুটির নাক থেকে হ্যাচকা টেনে অক্সিজেনের পাইপ খুলে নেয়। অক্সিজেন খুলে দেয়ার সাথে সাথে শিশুটির শ্বাস কষ্ট দেখা দেয়।

শিশুটির মা আনিছা বেগম বলেন, আমরা একাধিকবার নিষেধ করার পরও নার্স ও আয়া জোর করে অক্সিজেন মাস্ক খুলে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরই আমার সন্তান মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।

শিশুটির বাবা মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, হাসপাতালের নার্স ও আয়ার অবহেলায় আমার সন্তানের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। আমি দোষীদের বিচার দাবি করছি।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে নার্স রিমা আক্তার বলেন, বকশিস চাওয়ার ঘটনা সত্য নয়। মূলতঃ অন্য একটি গুরুতর অসুস্থ শিশুর জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডারটি স্থানান্তর করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আগে থেকেই শিশুটির অবস্থা খারাপ ছিল।

একইভাবে গতকাল শনিবার সকালে গাইবান্ধা সদর উপজেলার উজির ধরনী গ্রামের ইয়াকুব আলীর ২ মাস বয়সের শিশুর পরিবারের কাছ থেকে বকশিস না পাওয়ায় তারও নাক থেকে অক্সিজেনের পাইপ খুলে দেয় নার্স ও আয়ারা। পরে ইয়াকুব আলীর শিশুটিও অক্সিজেনের অভাবে শ্বাসকষ্টে হাসপাতালে মারা যায়। পরে মৃত শিশুটিকে কৌশলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. নবিউর রহমান বলেন, অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে হাসপাতালের কারও গাফিলতি প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আবাসিক চিকিৎসক ডা. হারুনর রশিদ বলেন, তদন্ত কমিটি তদন্ত শুরু করেছে। তদন্ত শেষে বলা যাবে প্রকৃত ঘটনা কী।

সি/

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
শিশু অপহরণ করে বিক্রি করতো চক্রটি
এক পা নিয়ে জন্ম নিলো শিশু, পরিবারের পাশে জেলা প্রশাসন
জাহাজ ছিনতাইয়ে শিশুদের কাজে লাগাচ্ছে সোমালিয়ার জলদস্যুরা
হাবিপ্রবিতে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ
X
Fresh