কালিয়ায় মাসুদ রানা হত্যা, ৩৬ জনের নামে মামলা
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার দেওয়াডাঙ্গা গ্রামে মাসুদ রানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ৩৬ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার নিহতের ভাই মামুন শেখ বাদী হয়ে কালিয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি কাজলসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এছাড়া হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বন্দুক ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে মাসুদ রানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নড়াইল জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা গতকাল বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় নিহতের বাড়িতে যান এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানান। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
জানা গেছে, গেল বুধবার সকালে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও নবগঙ্গা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে বাধা দেওয়ায় কালিয়া উপজেলার পুরুলিয়া ইউনিয়নের দেওয়াডাঙ্গা গ্রামের কাজলসহ তার লোকজন গুলি চালিয়ে মাসুদ রানাকে হত্যা করে। এ সময় আরও বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। মাসদ রানা দেওয়াডাঙ্গা গ্রামের আলী আকবর শেখের ছেলে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এস আই মিল্টন কুমার দেবদাস জানান, মাসুদ রানা খুনের ঘটনায় তার ভাই মামুন শেখ বাদী হয়ে কালিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার এজাহারনামীয় প্রধান আসামি দেওয়াডাঙ্গা গ্রামের মৃত মকবুল হোসেন মোল্যার ছেলে মো. কাজল মোল্যা (৪৯) ও তার ভাই মো, টনি মোল্যা (৪৮) এবং একই গ্রামের ফেরদৌস মোল্যার ছেলে সোহান মোল্লাকে (২৪) কালিয়া ও খুলনা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত আসামি কাজলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তাকে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে কালিয়ার থানার মাধবপাশা গ্রামের সেলিম বিশ্বাসের বসতবাড়ির পেছনের বাগান থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত কাজলের লাইসেন্সকৃত দো-নালা বন্ধুক, আট রাউন্ড তাজা গুলি উদ্ধার করা হয়। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে সাত রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়।
আসামি কাজল গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নড়াইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতের বিচারক জাহিদুল আজাদ আদালতে স্বেচ্ছায় ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, পুরুলিয়া ইউনিয়নের দেওয়াডাঙ্গা গ্রামের কাজল নড়াইল জেলা পরিষদের একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। ইতিমধ্যে তার নামে হত্যাকাণ্ডসহ একাধিক মামলা রয়েছে। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হয়েও তিনি নিজের নামে বন্দুকের লাইসেন্স করেছেন বেশ আগেই। তাদের বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নবগঙ্গা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। যার কারণে নদীর পাশে ভাঙনে অনেক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত বছর অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে ক্ষতিগ্রস্তরা জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদনও করেছিলো। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় এবারও সেখান থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এ ঘটনায় নিহত মাসুদ রানাসহ একাধিক ব্যক্তি বাধা দেয়। এতে কাজলসহ তার অনুসারীরা নিহত মাসুদ রানাসহ আহতদের ওপর হামলা ও গুলি চালায়।
এদিকে বুধবার দুপুরে নড়াইল সদর হাসপাতালে নিহতের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। সন্ধ্যায় গ্রামের বাড়িতে জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
জেবি
মন্তব্য করুন