১০ কেজির পরিবর্তে বন্যার্তদের ৪ কেজি চাল দিলেন চেয়ারম্যান
ঈদুল আজহা উপলক্ষে দুস্থ, হতদরিদ্র ও বন্যার্তদের মাঝে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রাণালয়ের বরাদ্দকৃত ভিজিএফের চাল একজন সুবিধাভোগীকে ১০ কেজি করে দেয়ার নিয়ম থাকলেও নাগেশ্বরীর বেরুবাড়ী ইউনিয়নে ৪ কেজি করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) বিকেলে ইউনিয়নটির তিনটি ওয়ার্ডের সুবিধাভোগীদের মাঝে চাল বিতরণ করা হয়। এসময় সুবিধাভোগীদের ১০ কেজি চাল না দিয়ে ৪ কেজি থেকে ৫ কেজি করে দেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালেব।
এ নিয়ে সুবিধাভোগীরা প্রতিবাদ করলে তাদের উপর চড়াও হন তিনি। ইউনিয়নটির ১নং ওয়ার্ডের কার্ডধারী নূর ইসলাম জানান, তার একটি কার্ডের বিপরীতে সাড়ে চার কেজি চাল দেয়া হয়। ৫ নং ওয়ার্ডের ভিজিএফ কার্ডধারী এরশাদুল জানান, তাকে ৪ কেজি চাল দেয়া হয়েছে। ৫ নং ওয়ার্ডের আব্দুস ছালাম জানান, তার পরিবারে দুটি কার্ড দেয়া হয়েছে। সেই দুই কার্ডের বিপরীতে একত্রে ৭ কেজি চাল দেয়া হয়েছে।
এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে চেয়ারম্যান তাকে ঘার ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন। অনেক সুবিধাভোগীর অভিযোগ বানের পানি পার হয়ে সকাল থেকে ইউনিয়ন পরিষদে বসে থেকে মাত্র ৪-৫ কেজি চাল জুটেছে তাদের কপালে। চাল কম দেয়ার বিষয়ে বলতে গেলে চেয়ারম্যান তার লোকজন দিয়ে ভয় দেখান। ভিজিএফের এই চার কেজি চাল একটি পরিবারের একদিনেই শেষ হয়ে যাবে। এরকম অভিযোগ বেশিরভাগ ভিজিএফ সুবিধাভোগীদের।
১ নং ওয়ার্ডের সদস্য মাহবুবুর রহমান জানান, প্রতি কার্ডে ৯ কেজি করে চাল দেয়ার কথা। বিতরণের সময় আমি পরিষদে ছিলাম না, চাল কম দিয়েছে কিনা জানি না। তবে আমার বাড়ির পাশের একজন ৭ কেজি চাল পেয়েছে বলে শুনেছি।
৫নং ওয়ার্ডের সদস্য দেলবার হোসেন জানান, আমার ওয়ার্ডের সব পরিবার এক মাসের উপরে পানিবন্দি অবস্থায় আছে। প্রায় ৫শ পরিবার অত্যন্ত অসহায় অবস্থায় আছে। সেখানে আমাকে দেয়া হয়েছে ৩৫০টি কার্ড। সেগুলো বিতরণের আগে ছিনতাই হয়েছে। একদিন পর ছিনতাই হওয়া কার্ড উদ্ধার ও ছিনতাইকারীকে আটক করা হলেও চেয়ারম্যান তাকে ছেড়ে দিয়েছেন।
‘পরে ওই কার্ড বাতিল করে ভিন্ন রংয়ের কার্ড তৈরীর পরামর্শ দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তার পরামর্শে সাদা রংয়ের কার্ড তৈরী করা হয়। এসময় চেয়ারম্যানের সাথে পরামর্শ করে একশ কার্ড বেশি তৈরী করে মোট ৪৫০ জন সুবিধাভোগীকে প্রদান করা হয়। কিন্তু চেয়ারম্যান ৩৫০ কার্ডের চাল সবার মাঝে ভাগ করে দেয়। এই কারণে চাল কম হতে পারে।’
চাল কম দেয়ার ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালেবের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও সংযোগ স্থাপন করা যায়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর আহম্মেদ মাছুম বলেন, ৫নং ওয়ার্ডে চাল কম দেয়ার বিষয়টি শুনেছি। যারা চাল কম পেয়েছে তারা অভিযোগ দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জেলা প্রশাসক মো. রেজাউল করিম জানান, ভিজিএফের চাল কম দেয়া বা অনিয়ম করার কোনো সুযোগ নাই। এর পরেও কেউ যদি অনিয়ম করে থাকে তা খতিয়ে দেখে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইউনিয়নটিতে ৫ হাজার ২১২ জন সুবিধাভোগীর বিপরীতে ৫৫ দশমিক ১২০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। এছাড়া উপজেলায় একটি পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়নে মোট ৮৩ হাজার ৭৫০ জন সুবিধাভোগীর বিপরীতে ৮৩৭ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
পি
মন্তব্য করুন