• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
logo

বাঙালি সংস্কৃতির সুরক্ষা- আমাদের দায়

মনোয়ার পাঠান

  ২০ জুন ২০২০, ১৯:৩১
Protection of Bengali culture is our responsibility rtv
মনোয়ার পাঠান

বস্তুনিষ্ঠ ও সুস্থধারার সৃজনশীল বিনোদন শিল্প মাধ্যম হিসেবে আমাদের টেলিভিশন নাটক বা অনুষ্ঠান বিশ্বব্যাপী বাংলা ভাষাভাষী মানুষের কাছে বহুযুগ ধরে ব্যাপক সমাদৃত ও প্রশংসিত।
আর এই অনুষ্ঠান নির্মাণ শিল্পের সাথে আমরা যারা জড়িত তারা প্রত্যেকেই সামাজিক ন্যূনতম একটা দায়বদ্ধতা হৃদয়ে ধারণ করি- যার ফলে টেলিভিশন নাটক বা অনুষ্ঠানগুলোতে হাসি, কান্না, আনন্দ, বেদনা, হাস্যরসের মাঝেও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সামাজিক শিষ্টাচার, মননশীলতা, শিক্ষণীয় - গঠনমূলক বক্তব্য কমবেশি কিছু একটা থাকে।
টেলিভিশন অনুষ্ঠান নির্মাণ শিল্পে আমরা যারা বিনিয়োগ করি তারা শুধুমাত্র মুনাফা লাভের জন্যই এ কাজটি করি না, আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি আমরা সবাই রুচিশীল, মানবিক মূল্যবোধ, সামাজিক শিষ্টাচার এবং সৃজনশীল মানসিকতা অন্তরে ধারণ করে সুস্থধারার বিনোদন দর্শকদের উপহার দেয়ার সংকল্প নিয়ে এই মিডিয়াতে কাজ করি এবং দর্শকরা তা সপরিবারে উপভোগ করে। কিন্তু ইদানীং ওয়েবসিরিজের নামে নির্মিত যেসব ভিডিওচিত্র আমরা দেখছি সেসব নিয়ে কিছু বলতেও ঘৃণা ও লজ্জা হয়।
টাকা উপার্জনের অনেক মাধ্যম আছে, আমাদের শত বছরের ঐতিহ্যে লালিত কৃষ্টি-কালচারকে কলুষিত করে এরকম নোংরা বাণিজ্য কেন করতে হবে? যারা করছেন তারা নিশ্চয়ই এর পেছনে কোনো না কোনো যুক্তি দাঁড় করিয়ে রেখেছেন, কারণ যে চুরি করে, যে ডাকাতি করে, যে নৈতিকতা বিবর্জিত কাজ করে সেও অবশ্যই তার কাজের স্বপক্ষে একটা যুক্তি দাঁড় করিয়ে নেয়- এর সার্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা থাকুক বা না থাকুক।
ডিজিটাল যুগে ভিজ্যুয়াল মিডিয়াতে যে যা খুশি করুক সেটার যৌক্তিকতা, বৈধতা দেখার জন্য দেশের প্রচলিত আইন আছে- সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর আছে।
কিন্তু আমার কথা হলো, টেলিভিশন মিডিয়ার পরিচয়ে পরিচিত ও প্রতিষ্ঠিত কোনো নাট্যকার, নির্মাতা, শিল্পী, কলাকুশলী, বিনিয়োগকারী যখন এসব বিকৃত রুচির অশ্লীল ও নোংরা কার্যকলাপে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন তখন তার দায় এবং প্রভাবমুক্ত আমরা থাকতে পারি না- কালিমামুক্ত থাকার কোনো সুযোগ নেই।
সামাজিক, প্রাকৃতিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক বহুবিধ বিপর্যয়, মহামারী, দুর্যোগ পৃথিবীতে আসে এবং একটা পর্যায়ে সবকিছু আবার ঠিক হয়ে যায়, কিন্তু মানুষের মানবিক মূল্যবোধের যদি অবক্ষয় হয় তা ফিরিয়ে আনা কঠিন।
তাই আমাদের সামাজিক ও মানবিক মূল্যবোধের অন্যতম ধারক-বাহক আমাদের শিল্প-সংস্কৃতিকে সুরক্ষিত রাখার জন্য এখন সিরিয়াসলি ভাবতে হবে- তাদেরকে আমরা টেলিভিশন অনুষ্ঠান নির্মাণ শিল্পের সাথে সম্পৃক্ত কোনো মানুষ ভাববো কি ভাববো না। যদি না ভাবি, যদি আমরা এই অপসংস্কৃতির বিকাশ থেকে নিজেদেরকে দায়মুক্ত রাখতে চাই, যদি আমরা আমাদের এই সৃজনশীল বিনোদন মাধ্যমটিকে অসভ্যতার হিংস্র থাবার আঁচড়ে ক্ষতবিক্ষত হতে দিতে না চাই, তাহলে এখনই আমাদেরকে সঠিক সিদ্ধান্তে আসতে হবে।
আমি টেলিপ্যাবসহ টেলিভিশন অনুষ্ঠান নির্মাণের সাথে সম্পৃক্ত সকল পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে অনুরোধ করবো- আমাদের সকল সদস্যদের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক মানসম্মান এবং সামাজিক অবস্থান সমুন্নত রাখতে এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিবেন।

লেখক: নাট্য প্রযোজক
সিইও, প্রিয়ন্তী এডিট এন্ড ইফেক্টস
সাবেক সাধারণ সম্পাদক
টেলিপ্যাব।
১৪ জুন, ২০২০

সি/

মন্তব্য করুন

daraz
  • নির্বাচিত কলাম এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
জয়ার প্রথম
ভারত বিরোধিতার নাটকবাজি করে লাভ হবে না : হানিফ
বাংলাদেশ আর আমি একসঙ্গে বড় হচ্ছি : বিপাশা হায়াত
অবশেষে শান্তির জায়গা খুঁজে পেলেন পরীমণি!
X
Fresh