• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

প্রশংসনীয় প্রণোদনা, বাস্তবায়নই হবে প্রধান চ্যালেঞ্জ

সৈয়দ আশিক রহমান

  ০৫ এপ্রিল ২০২০, ২২:১৮
প্রশংসনীয় প্রণোদনা, বাস্তবায়নই হবে প্রধান চ্যালেঞ্জ
সৈয়দ আশিক রহমান

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশের অর্থনীতিতে ক্ষতি মোকাবেলা ও উত্তরণে ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রণোদনায় সবচেয়ে বেশি জোর দেয়া হয়েছে শিল্প কারখানার ওপর।এখানেও আবার দুটি ভাগ করা হয়েছে। ‘বৃহৎ শিল্প ও ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠান’।

এ দুটি খাতেই ৫০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বৃহৎ শিল্পের জন্য ৩০ হাজার কোটি টাকা ও ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকা।

প্রণোদনা এই প্যাকেজে সব শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে। বৃহৎ শিল্প ও ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠান যাতে এক হয়ে যেতে না পারে সেজন্য প্রধানমন্ত্রী দুটোকে আলাদা করে দিয়েছেন। ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পকে আলাদা গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে বাস্তবসম্মত একটি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।কারণ শিল্প কারখানা সচল মানে এক কোটির বেশি মানুষের কর্মসংস্থান সচল রাখা। প্রধানমন্ত্রী তার প্রণোদনায় সেই বিষয়টির প্রতিই বেশি জোড় দিয়েছেন। এর সাথে উৎপাদন ও রপ্তানির বিষয়টি তো জড়িত রয়েছেই।তিনি জোড় দিয়ে বলেছেন, কাউকে চাকরি থেকে বিতাড়িত করা হবে না। এছাড়া নিম্ন ও অতিনিম্ন আয়ের মানুষের দুবেলা খাবার নিশ্চিত করতে বিনামূল্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ, ১০ টাকা কেজি দরে চাউল বিক্রি, লক্ষ্যভিত্তিক জনগোষ্ঠির মাঝে নগদ অর্থ বিতরণ, ‘বয়স্ক ভাতা’এবং ‘বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলাদের জন্য ভাতা’কর্মসূচির আওতা সর্বাধিক দারিদ্র্যপ্রবণ ১০০টি উপজেলায় শতভাগে উন্নীত করা এবং জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে গৃহীত অন্যতম কার্যক্রম গৃহহীন মানুষদের জন্য গৃহ নির্মাণ কর্মসূচি দ্রুত বাস্তবায়ন করার মতো পদক্ষেপ রয়েছে এই প্রণোদনায়।

করোনাভাইরাস মহামারিতে দেশের এসএমই খাতই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই খাতে লাখ লাখ ছোট ছোট শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে ১০০ জনের কম লোক কাজ করছে। এরা মোট এসএমই খাতের ৮৩ শতাংশ। এ ধরনের উদ্যেক্তাদের কাছে প্রণোদনা প্যাকেজ পৌঁছানোই হবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।বিভিন্ন খামারি, ছোট ছোট নার্সারি, মুরগির খামার, ডেইরি ফার্ম, অধুনিক কৃষক তাদের কাছে এই প্রণোদনার সুবিধা পৌঁছনোটা চ্যালেঞ্জিং হবে। আর সেটি বাস্তবায়ন হলেই প্রধানমন্ত্রীর এই প্রণোদনা প্যাকেজ সফল হবে। পোল্ট্রি খামার, ডেইরি ফার্মের প্রতি বিশেষ নজর দেয়া এখনই দরকার। যেহেতু এখন খামারিরা দুধের দাম পাচ্ছেন না, তাই সরকারি বা বেসরকারি পর্যায়ে এসব দুধ কিনে নিয়ে তা পাউডার বা প্রক্রিয়াজাতকরণ করে রেখে দেয়া যায়। আর পোল্ট্রি খামারিদের প্রতি যদি এখনই নজর দেয়া না হয় তাহালে বাজারে তার প্রভাব পড়বে আগামী মাসেই।

ভাইরাস সংক্রমণের এই সময়ে অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখতে এ ধরনের একটি প্রণোদনার খুবই প্রয়োজন ছিল। প্রধানমন্ত্রী সেটাই করেছেন। তবে এই প্যাকেজের সঠিক বাস্তবায়ন অত্যন্ত জরুরি। প্রণোদনা প্যাকেজের টাকা বিতরণ কতটা সততার সঙ্গে হচ্ছে সেটা খেয়াল রাখতেও একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা দরকার। কারণ অতীতে এসব বাজেট বিতরণের কাজে অসততার প্রমাণ রয়েছে।প্রধানমন্ত্রী নিজেও বলেছেন, সততার সঙ্গে এই অর্থ বিতরণ করতে সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আশ্চর্য সহনশীল। নয় মাসের মধ্যে যুদ্ধ জয় করেছে। জাতির পিতা বলেছিলেন, এ জাতিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। জাতির পিতার এ বাণী স্মরণ করে আমরা এগিয়ে যাব। যাব।হ্যাঁ সব বাধা ভেঙে আমরা এগিয়েই যাবো।

লেখক: সৈয়দ আশিক রহমান

প্রধান সম্পাদক আরটিভি অনলাইন ও সিইও আরটিভি

মন্তব্য করুন

daraz
  • নির্বাচিত কলাম এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
জাতীয় পতাকার নকশাকারের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
‘মানুষ এখন ডাল-ভাত নয়, মাছ-মাংস নিয়ে চিন্তা করে’
মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কেউ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি: প্রধানমন্ত্রী
ট্রাফিক তেজগাঁও বিভাগের ব্যবস্থাপনার প্রশংসা করলেন প্রধানমন্ত্রী
X
Fresh